দেশ-বিদেশের বিভিন্ন এলাকায় রাস্তার পাশে কিংবা রাস্তার মোড়ে সৌন্দর্য বাড়াতে নানা ধরনের ভাস্কর্য নির্মাণের প্রচলন রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় রংপুরে নির্মিত হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন ও সুবিশাল ‘আল্লাহু স্তম্ভ।’ এ স্তম্ভে আল্লাহতায়ালার গুণবাচক ৯৯টি নাম লেখা হবে ক্যালিগ্রাফির মাধ্যমে।
রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার খোড়াগাছ ইউনিয়নের রূপসি পাঁচমাথার মোড়ে দৃষ্টিনন্দন এই স্তম্ভের নির্মাণ কাজ প্রায় শেষের দিকে। স্তম্ভটির কারুকার্য শেষে আনুষ্ঠানিকভাবে এটি উন্মোচন করা হলে ‘আল্লাহু চত্বর’ হিসেবে স্থানটি পরিচিতি পাবে। এ ছাড়া একই এলাকায় পবিত্র কোরআনের অবয়বে ‘রেহেল চত্বর’ নির্মাণের কাজও শুরু হয়েছে।
জানা গেছে, রূপসি পাঁচমাথার মোড়ে নির্মিতব্য বর্গাকার স্তম্ভটির চার পাশে আল্লাহতায়ালার গুণবাচক ৯৯টি নাম আরবিতে ও বাংলা উচ্চারণসহ ওপর থেকে নিচে লেখা হয়েছে। নিচে রয়েছে বর্গাকার বেদি, যা আবার দুই স্তরের গোলাকার বেদি দিয়ে পরিবেষ্টিত। কারুকার্য সম্পন্ন না হলেও অবয়ব ফুটে ওঠায় দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন এটি দেখতে আসেন, আগ্রহভরে ছবি তুলেন। স্থানীয় ধর্মভীরু মুসলমানরা এই স্তম্ভ নির্মাণের উদ্যোগের প্রশংসা করছেন। তবে এখনও কাজ শেষ হয়নি, কাজ শেষ হলে এটি দেখতে আরও সুন্দর দেখা লাগবে।
মিঠাপুকুর উপজেলার এক নম্বর খোড়াগাছ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আসাদুজ্জামানের প্রচেষ্টায় আল্লাহু স্তম্ভের নির্মাণকাজ চলছে। তিনি নিজেই স্তম্ভের ডিজাইন করেছেন। নির্মাণকাজ অনেকটা শেষ হলেও এখনও কারুকার্যের কিছু কাজ বাকি। তবে ইতোমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বদৌলতে অনেকেই স্তম্ভটি সম্পর্কে জেনেছেন। দুই ফুট বাই দুই ফুট বর্গাকার এ স্তম্ভটির উচ্চতা ২৭ ফুট। যার ২২ ফুটে রয়েছে আল্লাহর ৯৯টি নাম এবং ওপরে পাঁচ ফুটে থাকবে ‘আল্লাহু’ লেখা।
স্তম্ভটি নির্মাণের উদ্যোক্তা ইউপি চেয়ারম্যান মো. আসাদুজ্জামান জানিয়েছেন, গত বছরে টিআর প্রকল্পের এক লাখ ৬০ হাজার টাকা ব্যয়ে স্থানীয় বুড়াজুম্মা মোড়ে ‘আল্লাহু স্তম্ভ’ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু বুড়াজুম্মা মোড়টি সংকুচিত ও ছোট হওয়ায় সেখানে দৃষ্টিনন্দন হবে না ভেবে স্তম্ভটি রূপসি পাঁচমাথার মোড়ে নির্মাণের উদ্যোগনেই। এ জন্য পাঁচমাথার মোড়ের অবৈধ দখল উচ্ছেদ করে স্তম্ভটির নির্মাণকাজ শুরু করি। বর্তমানে সমন্বিতভাবে অর্থায়ন করে স্তম্ভটির নির্মাণকাজ চলছে।
গত বছরের আগস্টে স্তম্ভটির নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে জানিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আরও বলেন, ধর্মীয় ভাবাবেগ থেকে এটির নির্মাণকাজ শুরু করা হয়। নান্দনিক লাইটিং সিস্টেমের সঙ্গে অটোমেটিক সাউন্ড সিস্টেমের মাধ্যমে ২৪ ঘণ্টা এখানে আল্লাহতায়ালার ৯৯ নাম উচ্চারিত হবে। বিদ্যুৎসংযোগের পাশাপাশি স্তম্ভটিতে আইপিএস সংযোগও দেওয়া হবে।
শুধু রংপুর নয়, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বিগত কয়েক বছরের ব্যবধানে ইসলামি বিষয়কে সামনে রেখে এ জাতীয় ভাস্কর্য নির্মাণ করা হচ্ছে। নান্দনিক এসব সৃষ্টিকর্ম মানুষের চিন্তাশীল সুন্দর সৃষ্টিশীলতার বহিঃপ্রকাশ। এসব ধর্মীয় শিল্পকর্মের নান্দনিক রূপ দেখে হৃদয় জুড়ায় অগণিত ধর্মপ্রাণ দর্শনার্থী ও ভ্রমণপিপাসু।