ভ্রাতৃ হত্যার চেয়ে সহমর্মিতা দীর্ঘস্থায়ী: পোপ ফ্রান্সিস

বিবিধ, ইসলাম

নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম | 2023-08-30 16:30:37

‘ভ্রাতৃ হত্যার চেয়ে সহমর্মিতা দীর্ঘস্থায়ী, ঘৃণার চেয়ে আশা বেশি শক্তিশালী, যুদ্ধের চেয়ে শান্তি বেশি শক্তিশালী’ বলে মন্তব্য করেছেন ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের সর্বোচ্চ নেতা পোপ ফ্রান্সিস। ইরাক সফরে তিনি এ কথা বলেন। পরে আরবিতে ‘সালাম’ দিয়ে ইরাক সফর শেষ করলেন তিনি।

সোমবার (৮ মার্চ) বাগদাদ বিমানবন্দর ছেড়ে ভ্যাটিকানের উদ্দেশ্যে যাত্রার আগে উড়োজাহাজ থেকে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের আহ্বান জানিয়ে বিদায় নেন পোপ। ইরাকি প্রেসিডেন্ট বাহরাম সালিহ বিমানবন্দরে উপস্থিত থেকে পোপকে বিদায় জানান।

ইরাক সফর শেষে বিদায়ের আগে ভাষণে পোপ ফ্রান্সিস বলেন, ‘ইরাক সবসময় আমার সঙ্গে, আমার হৃদয়ে থাকবে।’ আরবিতে ‘সালাম, সালাম, সালাম’ বলে তিনি বক্তব্য শেষ করেন।

ভ্যাটিকানের কোনো ধর্মগুরুর ইরাকে প্রথমবারের মতো এই সফরে মসুলসহ চারটি শহর ভ্রমণ করেন পোপ ফ্রান্সিস। যুদ্ধের কারণে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হওয়া মুসলের একটি এলাকায় দাঁড়িয়ে পোপ শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের বার্তা দিয়ে, সবাইকে একসঙ্গে ও নিরাপদে থাকার আহ্বান জানান। যুদ্ধে পুরোনো এই শহরটির বেশিরভাগ অঞ্চলই সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে।

পোপের ইরাক সফর উপলক্ষে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। পোপের গাড়ি বহরকে মেশিনগানবাহী সামরিক ট্রাকের নিরাপত্তা বেষ্টনী দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।

মসুল ভ্রমণের সময় পোপ বলেন, ‘সভ্যতার সূতিকাগার এই দেশ কতই না নিষ্ঠুর যে, এক বর্বর আঘাতে প্রাচীন উপাসনার স্থান ধ্বংস করা হয়েছে এবং মুসলমান, খ্রিস্টান, ইয়াজিদি ও অন্য ধর্মের কয়েক হাজার ব্যক্তিকে জোর করে বাস্তুচ্যুত করা হয়েছে বা হত্যা করা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আজকে আমরা জোর দিয়ে বলতে চাই, ভ্রাতৃহত্যার চেয়ে সহমর্মিতা দীর্ঘস্থায়ী, ঘৃণার চেয়ে আশা বেশি শক্তিশালী, যুদ্ধের চেয়ে শান্তি বেশি শক্তিশালী।’

মসুলে বক্তব্য রাখছেন পোপ, ছবি: সংগৃহীত

এছাড়া পোপ ফ্রান্সিস হেলিকপ্টারে করে কারাকোশ ও ইরবিল সফরে যান। এসব শহরেও তাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা দেওয়া হয়।

এর আগে শুক্রবার তিনদিনের সফরে ইরাকের রাজধানী বাগদাদে পৌঁছেন পোপ ফ্রান্সিস। করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর এটিই পোপ ফ্রান্সিসের প্রথম বিদেশ সফর।

ইরাকে পোপ ফ্রান্সিসের এই সফরের মাধ্যমে প্রথম কোনো ক্যাথলিক খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মগুরু দেশটিতে সফরে এলেন।

সফরে ইরাকের দক্ষিণাঞ্চলীয় নাজাফে দেশটির শিয়া মুসলিম সম্প্রদায়ের শীর্ষ ধর্মীয় নেতা গ্র্যান্ড আয়াতুল্লাহ আলী আল সিস্তানির সঙ্গে সাক্ষাত করেন পোপ ফ্রান্সিস। ৫০ মিনিটের একান্ত বৈঠকের পর উভয় নেতা ইরাকের মুসলমান ও খ্রিস্টান উভয়কে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের বার্তা দেন।

পরে ইসলাম ও খ্রিস্ট উভয় ধর্মের পবিত্র পুরুষ হিসেবে বিবেচিত নবী ইবরাহীম আলাইহিস সালামের জন্মস্থান উর পরিদর্শন করেন পোপ। সেখানে উভয় ধর্মের ধর্মীয় নেতাদের অংশগ্রহণে এক আন্তঃধর্মীয় সভায় অংশ নেন।

-আল জাজিরা অবলম্বনে

এ সম্পর্কিত আরও খবর