মানবজীবনে মাহে রমজান ও রোজার গুরুত্ব ও বৈশিষ্ট্য অপরিসীম। ধর্মীয় দিক থেকে রোজা ঈমান ও তাকওয়া তথা খোদাভীতি বৃদ্ধি করে। শারীরিক দিক থেকেও মানুষের রিপু, কামনা, বাসনা, প্রবৃত্তিকে নিয়ন্ত্রণের সুযোগ সৃষ্টি করে রোজা। একজন মানুষের সারা জীবনের বছরগুলোতে প্রাপ্ত রমজান মাস ও রোজার প্রতিটি দিন এজন্য প্রতিটি মুসলিম নরনারীর জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ও মূল্যবান। এজন্য বিশেষ মনোযোগী, আগ্রহী ও তৎপর হতে হয় প্রতিটি মুসলমান নর-নারীকে।
কারণ, অফুরন্ত কল্যাণ ও সুযোগ নিয়ে আগত রমজান ও রোজাকে হেলায় হারানো দুর্ভাগ্যের শামিল। ফলে প্রতিটি মুসলমানের সামনে রমজান ও রোজার মূল গুরুত্ব ও বৈশিষ্ট্যসমূহ সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকা দরকার, যার ভিত্তিতে রোজার মাসকে অন্য মাসের মতো সাধারণ মনে করা যাবে না এবং মাহে রমজানের বিষয়ে বিশেষ মনোযোগী ও তৎপর হতে হবে। কারণ:
* রমজান তাকওয়া বা খোদাভীতি বাড়ানোর মাস।
* রমজান আল্লাহ সোবহানাহু তায়ালার কাছ থেকে পুরস্কার প্রাপ্তির মাস।
* রমজান আল্লাহ সোবহানাহু তায়ালার নৈকট্য লাভের মাস।
* রমজান রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাতের অনুসরণের মাস।
* রমজান কোরআন নাজিলের মাস।
* রমজান ফরজ রোজা পালনের মাস।
* রমজান মুসলমানদের সর্বোত্তম মাস।
* রমজান রহমতের মাস।
* রমজান জান্নাত প্রাপ্তির এবং জান্নাতে রাইয়ান নামক দরজা দিয়ে প্রবেশের সুযোগ দানকারী মাস।
* রমজান শেষ বিচারের কঠিন দিনে শান্তি ও নিরাপত্তার সুযোগ সৃষ্টিকারী মাস।
* রমজান জাহান্নাম থেকে মুক্তির মাস।
* রমজান দোয়া কবুলের মাস।
* রমজান পাপ মোচন, তাওবাহ ও ক্ষমা প্রাপ্তির মাস।
* রমজান পাপাচার থেকে বাঁচার শিক্ষা দানকারী মাস।
* রমজান দানশীলতার মাস।
* রমজান সাওয়াব বহুগুণে বৃদ্ধি পাওয়ার মাস।
* রমজান বরকতময় রজনী লাইলাতুল কদরের মাস।
* রমজান তারাবিহ নামাজের মাস।
* রমজান ইতেকাফ করার সুবর্ণ সুযোগ সৃষ্টিকারী মাস।
বস্তুতপক্ষে, মাহে রমজানের গুরুত্ব, তাৎপর্য ও মর্যাদা বলে শেষ করা যায়। মানবজীবনকে শারীরিক ও আত্মীকভাবে সফল করতে এবং দুনিয়া ও আখেরাতের চূড়ান্ত সফলতা ও কল্যাণ লাভ করতে মাহে রমজান আল্লাহ সোবহানাহু তায়ার তরফ থেকে এক ঐশী উপহার। ফলে মাহে রমজানের গুরুত্ব অনুধাবণ করে এবং বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে সচেতন হয়ে রোজা রাখা এবং রমজানের দিন-রাত্রি তথা প্রতিটি মুহুর্তকে সফলতার সঙ্গে অতিবাহিক করা প্রতিটি মুসলিম নর-নারীর একান্ত দায়িত্ব।