মহানবী সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাদিসে কুদসি-এর মাধ্যমে রোজা সম্পর্কে বলেছেন, যা বোখারি শরিফে (১৮৯৪ এবং ১৯০৪) এবং মুসলিম শরিফে (১৬৩ এবং ১৬৪) সাহাবী হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু কর্তৃক বর্ণিত হয়েছে:
‘আদম সন্তানের প্রতিটি সৎকর্ম তার জন্যই। কিন্তু রোজা স্বতন্ত্র, তা আমার জন্য। আর আমি তার প্রতিদান দেবো। সে পানাহার এবং যৌনাচার ছেড়ে দেয় একমাত্র আমারই জন্য। রোজা ঢাল স্বরূপ। কাজেই তোমাদের কেউ যেন অশ্লীল কথা না বলে এবং হৈ হট্টগোল না করে। আর যদি কেউ তাকে গালিগালাজ করে অথবা তার সাথে লড়াই-ঝগড়া করে, তাহলে সে যেন বলে, আমি রোজাদার। সেই মহান সত্তার শপথ, যার হাতে মুহাম্মদের প্রাণ, নিঃসন্দেহে রোজাদারের মুখের গন্ধ আল্লাহর নিকটে মৃগনাভির সুগন্ধ অপেক্ষা অধিক উৎকৃষ্ট। রোজাদারের জন্য দুটি আনন্দময় মুহূর্ত রয়েছে তখন সে আনন্দিত হয়। যখন সে ইফতার করে তখন সে আনন্দিত হয়। যখন আপন পালনকর্তার সাথে সাক্ষাৎ করবে তখন সে স্বীয় রোজার জন্য আনন্দিত হবে।’
রমজানের রোজাকে বলা হয়েছে ঢাল স্বরূপ। আর তা হলো জাহান্নামের প্রজ্বলিত অগ্নি থেকে মুক্তিলাভের ঢাল। হয়রত জাবির রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত হয়েছে যে, মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
‘আমাদের মহান রব ইরশাদ করেছেন, রোজা হলো ঢাল স্বরূপ। বান্দা এর (রোজার) দ্বারা নিজেকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করবে। রোজা আমার জন্য আর আমিই এর পুরস্কার দেবো’ (মুসনাদে আহমাদ: ১৪৬৬৯)।
আরেকটি হাদিসেও এ সংক্রান্ত কথা বলা হয়েছে। হযরত উসমান ইবনে আবিল আস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, আমি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি:
‘রোজা হলো জাহান্নাম থেকে রক্ষাকারী ঢাল। যুদ্ধক্ষেত্রে তোমাদের (শত্রুর আঘাত হতে রক্ষাকারী) ঢালের মতো’ (মুসনাদে আহমাদ: ১৬২৭৮)।
মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রোজার গুরুত্ব সম্পর্কে আরো বলেছেন:
‘যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় একদিন রোজা রাখে, আল্লাহ তায়ালা তাকে জাহান্নাম থেকে সত্তর বছরের দূরত্বে নিয়ে যান’ (বোখারি শরিফ: ১৬৮৫)।
হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বণিত হয়েছে যে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
‘রোজা হলো ঢাল এবং সুরক্ষিত দূর্গ।’ (মুসনাদে আহমাদ: ৯২২৫)
অতএব রোজা মুসলমানের জন্য নিরাপত্তা বিধান করে, জাহান্নামের আগুন থেকে তাকে হেফাজত করে। মুসলমানের আত্মীক ও শারীরিক উপকারের পাশাপাশি রোজা ঢাল ও দূর্গের মতো জাহান্নামের প্রজ্বলিত আগুন থেকে বাঁচায়। ফলে রমজানের ফরজ রোজা একাগ্র চিত্তে, পরিপূর্ণ ও সঠিকভাবে পালন করে জাহান্নামের কঠিন আগুন ও আজাব থেকে রক্ষাকবচ বা ঢাল হিসাবে কাজে লাগাতে সকলকে সচেষ্টা হওয়া উচিত।