মহান আল্লাহর অপার রহমত বরকত মাগফিরাত এবং নাজাতের মাস রমজান দেখতে দেখতেই শেষ হচ্ছে। মাসব্যাপী রোজা পালনের পর ঈদের আনন্দ উৎসবে জেগে উঠবে বিশ্ব মুসলিম উম্মাহ। যদিও এবার বিশ্বময় মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে সেভাবে হয়তো ঈদ উদযাপন করা সম্ভব হবে না, যেভাবে মুসলিম বিশ্ব প্রতি বছর উদযাপন করে থাকেন। ইনশাল্লাহ আমরা যার যার অবস্থানে থেকে সরকারি নির্দেশনা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদুল ফিতর উদযাপন করব এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি প্রার্থনা করব।
তবে ঈদুল ফিতর উদযাপনের পূর্বে আমাদের সবাইকে অবশ্যই ফিতরানা আদায় করতে হবে। আমাদের ফিতরানা যদি এখনই আদায় করি তাহলে তা ঈদের আগেই সুষ্ঠুভাবে বণ্টনের ক্ষেত্রে সহজতর হবে এবং গরিবদের ঈদ আনন্দে কাজে লাগবে।
কেননা ঈদুল ফিতরের ফিতরানা প্রত্যেক ব্যক্তির ওপর ওয়াজিব এমন কি ঈদের দিন সূর্য উদয়ের পূর্বে ভূমিষ্ঠ শিশুর জন্যও ফিতরানা দেওয়া ওয়াজিব। এ ফিতরানা ঈদের নামাজের আগেই আদায় করা উচিত। কেননা গরিব রোজাদার যেন ফিতরানার অর্থ দিয়ে ঈদের খুশিতে অংশগ্রহণ করতে পারে। ফিতরানা দেওয়া কারও ওপর কোনো প্রকার অনুগ্রহ নয়। এটা আমাদের জন্য ইবাদতের অংশ। এমনকি যে ব্যক্তিকে ফিতরানার সাহায্য দেওয়া হয়, তার নিজের পক্ষ থেকেও ফিতরানা দেওয়া কর্তব্য। সকলের অংশগ্রহণের ফলে সদকাতুল ফিতরের ফান্ডটি একটি সাধারণ ফান্ডে পরিণত হয়। যার ফলে এ থেকে যারা উপকৃত হয় তাদের মনে হীনম্মন্যতার ভাব সৃষ্টি হয় না।
মূল বিষয় হলো ফিতরানা আদায়ের মাধ্যমে আমরা আমাদের গরিব ভাইদের দুঃখ-কষ্ট কিছুটা হলেও লাঘব করতে পারি এবং তাদেরকেও ঈদের আনন্দে অন্তর্ভূক্ত করি। যাদেরকে আল্লাহতায়ালা ধন-সম্পদ দিয়েছেন তারা আল্লাহর রাস্তায় এবং গরিব অসহায়দের প্রতি যতই দান করুক না কেন এতে কিন্তু তার ধন-সম্পদে কমতি দেখা দিবে না বরং বৃদ্ধি পেতে থাকবে।
পবিত্র কোরআন বলে যারা আল্লাহর রাস্তায় খরচ করে তাদেরকে এর তুলনায় অধিক বৃদ্ধি করে আল্লাহ ফেরত দেন। যেভাবে বলা হয়েছে, ‘যারা নিজেদের ধনসম্পদ আল্লাহর পথে খরচ করে তাদের দৃষ্টান্ত সেই শস্যবীজের ন্যায়, যা সাতটি শীষ উৎপন্ন করে এবং প্রত্যেকটি শীষে একশ শস্যদানা থাকে। আর আল্লাহ যার জন্য চান এর চেয়েও বাড়িয়ে দেন। আর আল্লাহ প্রাচুর্যদানকারী ও সর্বজ্ঞ’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ২৬১)।
আমরা যদি আল্লাহর জান্নাত লাভ করতে চাই এবং তার শান্তির ছায়ায় আশ্রয় নিতে চাই তাহলে আমাদেরকে তার পথে খরচ করতে হবে। গরিব অসহাদেরকে সাহায্য সহযোগিতা করে তাদের কষ্ট দূর করতে হবে। বিশেষ করে বর্তমান মহামারি করোনার কারণে খেঁটে খাওয়া এবং দরিদ্ররা অনেক কষ্টে দিনাতিপাত করছেন, আমাদের উচিত হবে তাদের পাশে গিয়ে দাঁড়ানো। আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী গরিব-অসহায়দেরকে সাহায্যে এগিয়ে যেতে হবে। আসুন, ঈদের খুশিতে সবাইকে শামিল করে নেই।
দয়াময় প্রভুর দরবারে প্রার্থনা করি, তিনি যেন আমাদের দান-খয়রাত আর রোজার ইবাদত গ্রহণ করে আমাদেরকে ক্ষমা করেন। হে আল্লাহ! তুমি তোমার অপার দয়ায় তোমার সৃষ্টিকে করোনার আক্রমণ থেকে রক্ষা কর।
সবাইকে ঈদের অগ্রিম শুভেচ্ছা।