হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর মহান কোরবানির শিক্ষা নিয়ে উপস্থিত হয় পবিত্র ঈদুল আজহা। এই ঈদ জিলহাজ মাসের ৯ তারিখ হজের ইবাদতের শেষে ১০ তারিখে উপস্থিত হয়। হজরত রাসুল করিম (সা.) এই ঈদকে ঈদুল আজহা বলেই উল্লেখ করেছেন।
ঈদুল আজহার দিন কোরবানি করা মহানবী (সা.)-এর শুধু ব্যক্তিগত কর্মই ছিল না বরং তিনি তার সাহাবাদেরকেও কোরবানি করার নির্দেশ প্রদান করতেন। হাদিসে বর্ণিত রয়েছে, হজরত বারা (রা.) বর্ণনা করেন, মহানবী (সা.) ঈদুল আজহার দিন খোতবা প্রদান করেন এবং বলেন, এই দিন প্রথমে মানুষ ঈদের নামাজ পড়বে এবং তার পর কোরবানি করবে। সুতরাং যে এইরূপে করে সে তার (সা.) সুন্নতকে লাভ করেছে (বোখারি ও মুসলিম)।
আরেক স্থানে তিনি (সা.) বলেন, যার আর্থিক সামর্থ থাকা সত্তে¡ও ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানি করে না, সে কেন আমাদের ঈদগাহে এসে নামাজে শামিল হয়? (মুসনাদ আহমদ)। হজরত রাসূল করিম (সা.)-এর এই কথাকে সাহাবারা (রা.) খুব ভালভাবেই স্মরণ রেখেছিলেন এবং সাধ্যমত কোরবানি করতেন।
হজরত যায়েদ বিন আরকাম (রা.) বলেন, সাহাবারা (রা.) মহানবী (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! ঈদুল আজহার এই যে কোরবানি, এগুলি কেমন? তিনি (সা.) বললেন, তোমাদের প্রধান পূর্ব পুরুষ ইবরাহিমের প্রবর্তিত সুন্নত এটি। সাহাবারা বললেন, তবে আমাদের জন্য এতে লাভ কি? তিনি বললেন, কোরবানির জন্তুর প্রত্যেকটি লোম কোরবানিকারীর জন্য এক একটি পুণ্য, যা তাকে খোদার কাছে পুরস্কার পাওয়ার যোগ্য করবে (ইবনে মাজা)।
এথেকে অনুধাবন করা যায় যে, ইসলামে কোরবানির গুরুত্ব কত ব্যাপক। এই যে কোরবানি তা-কি শুধু পশু কোরবানির মধ্যেই সীমাবদ্ধ, নাকি অন্য কিছুও এর মধ্যে অন্তর্ভূক্ত? আসলে ইসলামের শিক্ষা হচ্ছে মানুষ যেন কেবল মাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের নিমিত্বে কোরবানি করে। হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর কোরবানি ছিল শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য। আমরাও যদি আমাদের হৃদয়কে পবিত্র করি তাহলে আমাদের সাথে আল্লাহ পাকের প্রেমময় সম্পর্ক গড়ে উঠবে। আমাদেরকে ঈদুল আজহার গুরুত্ব বুঝার তাওফিক দান করুন।
লেখক: ইসলামী গবেষক ও কলামিস্ট, ই-মেইল- masumon83@yahoo.com