কাতার সোজা করুন, ফাঁকা জায়গা পূরণ করুন

ইসলামি খবর, ইসলাম

ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম | 2023-09-01 18:11:08

মক্কার মসজিদে হারাম ও মদিনার মসজিদে নববির ইমামদের কণ্ঠে ইকামতের পর তাকবির বলার আগে নামাজে দাঁড়ানো, কাতার সোজা করা এবং কাতারের মাঝের ফাঁকা জায়গা পূরণ করে সুশৃঙ্খলভাবে দাঁড়ানোর উদ্দেশ্যে কিছু নির্দেশবাচক বাক্য শোনা যায়। এর অন্যতম হলো- ‘ইসতাউ’, আপনারা সোজা হোন, সমান্তরালভাবে দাঁড়ান। ‘তারাসসু’, একে অপরের সঙ্গে লেগে লেগে সুশৃঙ্খলাবদ্ধভাবে দাঁড়ান। ‘সাউঊ সুফুফাকুম’, কাতার সোজা করুন৷ ফাঁকা জায়গা পূরণ করুন।

রোববার (১৭ অক্টোবর) ফজরের নামাজের জামাতের আগে হৃদয় শীতল করা ওই আহ্বান শোনা গেল মসজিদে হারাম তথা কাবার প্রাঙ্গন থেকে।

বৈশ্বিক মহামারি করোনা দরুণ নানা ধরনের বিধি-নিষেধের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে বিশ্ববাসীকে। এরই অংশ হিসেবে মসজিদে হারাম ও মসজিদে নববিতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে জামাত আদায় করা হচ্ছিল। রোববার ফজরের জামাতের আগে প্রায় দুই বছর পর বায়তুল্লাহর ইমাম শায়খ বানদার বালিলা তার দরাজ কণ্ঠে আহ্বান করেছেন মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে- ‘সাউঊ সুফুফাকুম’, কাতার সোজা করুন৷ ফাঁকা জায়গা পুরণ করুন।

সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে করোনকালীন দেওয়া বিভিন্ন নির্দেশনাসূচক স্টিকার

মক্কার মসজিদে হারাম ও মদিনার মসজিদে নববিতে দীর্ঘ প্রায় দুই বছর পর শারীরিক দূরত্ববিহীন জামাত অনুষ্ঠিত হলো। সৌদি আরবের টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ফজরের নামাজের দৃশ্যে দেখা যায়, শায়খ বালিলা আবেগ সংবরণ করে প্রায় কাঁদো কাঁদো কণ্ঠে উচ্চারণ করছেন- সাউঊ সুফুফাকুম।

কাবার ইমাম ও খতিবরা বরাবরই সময়ের সঙ্গে মিল রেখে নামাজে তেলাওয়াতের জন্য কোরআনে কারিমের আয়াত নির্বাচন করেন। আজও এর ব্যতিক্রম হলো না। শায়খ বালিলা ফজরের প্রথম রাকাতে সুরা বাকারা থেকে তেলাওয়াত করলেন…, ‘এবং স্মরণ করো যখন আমি কাবাগৃহকে মানুষের জন্য মিলনকেন্দ্র এবং নিরাপদস্থল করলাম এবং বললাম, মাকামে ইবরাহিমকে নামাজের স্থান হিসেবে গ্রহণ করো এবং ইবরাহিম ও ইসমাঈলকে বলেছিলাম, আমার গৃহকে তাওয়াফকারী, ইতিকাফকারী এবং রুকু ও সেজদাকারীদের জন্য পবিত্র রাখবে। স্মরণ করো, যখন ইবরাহিম প্রার্থনা করেছিল, হে আমার প্রতিপালক! তুমি এ শহরকে নিরাপদস্থল করো এবং এর অধিবাসীদের মধ্যে যারা আল্লাহ ও পরকালের ওপর ঈমান আনে, তাদেরকে ফলমূল হতে জীবিকা প্রদান করো।’ -সুরা আল বাকারা : ১২৫-১২৬

দ্বিতীয় রাকাতে পড়লেন সুরা ইউনুস থেকে, ‘তুমি বলে দাও, আল্লাহর এই দান ও রহমতের প্রতি সবারই আনন্দিত হওয়া উচিত; তা ওটা (পার্থিব সম্পদ) হতে বহুগুণে উত্তম যা তারা সঞ্চয় করছে।’ -সুরা ইউনুস : ৫৮

করোনাকালীন বিধি-নিষেধ প্রত্যাহারে বায়তুল্লাহ আগের রূপে ফেরায় মসজিদে হারামের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মনের আনন্দে তাদের দায়িত্ব পালন করেছেন।

আর নামাজে অংশ নেওয়া মুসল্লিরা মহান মালিকের ঘরের একেবারে কাছাকাছি রুকু-সেজদা দিতে পেরে আল্লাহর শোকরিয়া আদায় করেছেন। এ সময় প্রায় মসুল্লিদের চোখেই পানি দেখা গেছে।

মসজিদের বাইরে পবিত্র মক্কা-মদিনার আকাশে-বাতাসে আনন্দের হিল্লোল। পৃথিবীর কোটি কোটি মুমিনের হৃদয়ে খুশির জোয়ার। প্রায় দুই বছর পর আগের নিয়মে ফিরতে চলেছে- পৃথিবীর সর্বোচ্চ মর্যাদাবান দুই মসজিদ।

এ সম্পর্কিত আরও খবর