ছারছীনা থেকে মো. আবদুর রহমান : ঈমান ও আকিদা সহিহ-শুদ্ধ করে নিয়মিত তরিকা মশক করে আমলি জিন্দেগি গঠনের মাধ্যমেই দয়াময় আল্লাহর রেজামন্দি (সন্তুষ্টি) হাসিল করা সম্ভব।
শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) বাদ জুমা তিন দিনব্যাপী ছারছীনা দরবারের বার্ষিক ঈছালে ছওয়াব মাহফিলের আখেরি মোনাজাতের আগে উপস্থিত ধর্মপ্রাণ মানুষের উদ্দেশ্যে আমিরে হিযবুল্লাহ ছারছীনা দরবার শরিফের পীর সাহেব হজরত মাওলানা শাহ্ মোহাম্মদ মোহেব্বুল্লাহ এসব কথা বলেন।
এ সময় তিনি সমবেত জনতাকে গোনাহমুক্তির জন্য জন্য তওবা করিয়ে জিকিরের তালিম দেন। ব্যস্ততার মধ্যেও সকাল-সন্ধ্যা জিকির ও অজিফা পালনের মাধ্যমে তরিকা মশকের নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, তরিকা চর্চার মাধ্যমে একজন মানুষ আদববান মানুষে পরিণত হতে পারে। তরিকা কখনোই বেয়াদবি শিক্ষা দেয় না।
আখেরি মোনাজাতের আগে বিশেষ হেদায়েতি বয়ানে হজরত পীর সাহেব কেবলা সবাইকে বাংলাদেশ জমইয়াতে হিযবুল্লাহর সংগঠনভুক্ত হয়ে তালিমি জলসা কায়েম, মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা এবং নিজ নিজ সন্তানদের যেসব প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করার নির্দেশ দেন। এছাড়া তিনি আগামী মাহফিলে সবাইকে আসার জন্য দাওয়াত দেন।
আখেরি মোনাজাতে হজরত পীর সাহেব কেবলা দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা, সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতার জন্য আল্লাহর দরবারে দোয়া করেন। দোয়ার সময়ে লাখো জনতার ক্রন্দনে এক হৃদয়বিদারক অবস্থার সৃষ্টি হয়। মোনাজাতে পীর সাহেব কেবলা বিশ্ব শান্তির জন্য বিশেষ করে ফিলিস্তিনের বিপন্ন মুসলিম ভাই-বোনদের জন্য দোয়া করেন। দোয়ার সময় উপস্থিত জনতার আমিন আমিন ধ্বনিতে আকাশ-বাতাস মুখরিত হয়ে ওঠে।
ছারছীনা দরবারের বার্ষিক মাহফিলে জাতীয় ও দক্ষিণবঙ্গের রাজনীতিবিদদের অনেকেই অংশ নেন। এ সময় তারা সংক্ষিপ্ত আলোচনায় তাদের অভিব্যক্তি প্রকাশ করে উপস্থিত জনতার কাছে দোয়া কামনা করেন। তারা বলেন, বাংলাদেশে বহু দরবার রয়েছে। তবে ছারছীনা দরবার ব্যতিক্রম। ছারছীনা কোনো দলীয় রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নয়। দেশ ও জাতির কল্যাণে ছারছীনা দরবারের ভূমিকা সর্বদা ইতিবাচক। বিভিন্ন সময়ে শাসকবর্গকে বুঝিয়ে দেশ ও ইসলামের কল্যাণে এই দরবার যে অবদান রেখেছে তা অন্যকোনো দরবার রাখতে পারেনি।
আখেরি মোনাজাতে অংশ নেন- মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী শ.ম. রেজাউল করিম, বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাডভোকেট মো. আফজাল হোসেন, সংসদ সদস্য রুস্তুম আলী ফরাজী, এস. এম. শাহজাদা, অধ্যক্ষ মুহিবুর রহমান, সাবেক সংসদ সদস্য মনিরুল ইসলাম মনি, ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. আবদুর রশিদ, বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছিনের মহাসচিব অধ্যক্ষ শাব্বির আহমদ মোমতাজি, নেছারাবাদ উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল হক, স্বরূপকাঠী পৌর মেয়র গোলাম ফারুকসহ বিভাগীয় ও স্থানীয় বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তাবৃন্দ।