শুরু হয়েছে পবিত্র রমজান মাস। রমজানের অন্যতম একটি আমল হলো- তারাবি নামাজ। হাদিস শরিফে এসেছে, হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি পূর্ণ বিশ্বাসের সঙ্গে সওয়াবের আশায় রমজানের রাতে (নামাজে) দণ্ডায়মান হয় তার পূর্ববর্তী গোনাহসমূহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়।’ -সহিহ বোখারি : ২০০৯
তাই গোনাহ মাফের আশায় সওয়াবের নিয়তে গুরুত্ব ও যত্নের সঙ্গে তারাবি নামাজ পড়া চাই।
তারাবি শব্দটি বহুবচন। এর একবচন হলো- তারবিহা; যার আভিধানিক অর্থ বিশ্রাম, স্বস্তি, শান্তি ও প্রশান্তি। রমজান মাসে এশার নামাজের পর যে সুন্নতে মুয়াক্কাদা ২০ রাকাত নামাজ আদায় করা হয়, তাকে তারাবির নামাজ বলে। -আল কামুসুল ফিকহ
তারাবির ২০ রাকাত নামাজ সুন্নতে মুয়াক্কাদা। পুরুষদের তারাবির নামাজ মসজিদে জামাতের সঙ্গে আদায় করা সুন্নত। তারাবির নামাজে কোরআন শরিফ খতম করা সুন্নত। নারীদের জন্যও ২০ রাকাত সুন্নত। তারাবির নামাজের সময় হলো- এশার নামাজের পর থেকে ফজরের নামাজের আগ পর্যন্ত।
রমজান মাস কোরআন নাজিলের মাস। শবে কদরে কোরআন নাজিলের আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়েছে। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) রমজান মাসে পুরো কোরআন শরিফ হজরত জিবরাইল (আ.)-কে একবার শোনাতেন এবং জিবরাইল (আ.)-ও নবী করিম (সা.)-কে পূর্ণ কোরআন একবার শোনাতেন। বড় বড় সাহাবিরাও রমজানে প্রতি সপ্তাহে সমগ্র কোরআন একবার তেলাওয়াত করতেন।
হজরত উসমান (রা.), হজরত উবাই ইবনে কাআব (রা.) প্রমুখ সাহাবি প্রতিদিন যতটুকু তেলাওয়াত করতেন তা মঞ্জিল নামে পরিচিত। তাই কোরআন সাত মঞ্জিলে বিভাজিত হয়েছে। পরবর্তী সময়ে এক মাসে সম্পূর্ণ কোরআন খতম করার জন্য কোরআন মজিদকে সমান ৩০ ভাগে বিভক্ত করা হয়, যা পারা নামে পরিচিত।
এরপর আরও সহজ করার জন্য প্রতিটি পারাকে সমান দুই ভাগে ভাগ করা হয়। এর প্রতিটি অংশকে ‘নিসফ’ বলা হয়। এর অর্থ হলো- অর্ধেক বা অর্ধাংশ। প্রতিদিন এতটুকু পরিমাণ তেলাওয়াত করলেও প্রতি দুই মাসে এক খতম হয়। এরপর এক-তৃতীয়াংশ ও দুই-তৃতীয়াংশ। প্রতিদিন এই পরিমাণ পড়লেও প্রতি তিন মাসে একবার খতম হবে।
সর্বশেষ আসে এক-চতুর্থাংশ। যদি কেউ প্রতিদিন এইটুকুও তেলাওয়াত করেন, তাহলেও প্রতি চার মাসে তার এক খতম হবে। নিয়মিত তেলাওয়াত ও খতমের জন্য এর চেয়ে কম কোনো অংশ নেই।
কোরআন তেলাওয়াতে যেমন সওয়াব, কোরআন পাঠ শ্রবণেও একই রকম সওয়াব। খতমে তারাবি এই সওয়াব লাভের এক সুবর্ণ সুযোগ।