শরিকানা কোরবানির প্রথা বেশ পুরোনো। অর্থাৎ একটি গরু-মহিষ বা উট কয়েকজনে মিলে কোরবানি করা। এটা শুধু ভারতীয় উপমহাদেশ নয় প্রায় সব দেশেই বেশ জনপ্রিয় একটি রীতি। তবে শরিকানা কোরবানির ক্ষেত্রে কিছু বিষয় মাথায় রাখা দরকার। না হলে কোরবানি নষ্ট হয়ে যাবে। বিষয়গুলো হলো-
শরিকদের কারও পুরো বা অধিকাংশ উপার্জন যদি হারাম হয়, তাহলে কারও কোরবানি সহিহ হবে না।
যদি কেউ গরু, মহিষ বা উট একা কোরবানি দেওয়ার নিয়তে কেনে আর সে ধনী হয় তাহলে ইচ্ছা করলে অন্যকে শরিক করতে পারবে। তবে এক্ষেত্রে একা কোরবানি করাই শ্রেয়। শরিক করলে ওই টাকা সদকা করে দেওয়া উত্তম।
গরু, মহিষ ও উট- এই তিন প্রকার পশুর একেকটিতে সর্বোচ্চ সাত ব্যক্তি পর্যন্ত শরিক হয়ে কোরবানি করতে পারবে। শরিকদের সংখ্যা জোড় হোক বা বেজোড় তাতে কোনো সমস্যা নেই।
তবে কোরবানির জন্য শর্ত হলো- কারও অংশ যেন এক-সপ্তমাংশের চেয়ে কম না হয়। প্রত্যেক শরিককেই কোরবানি অথবা আকিকার মতো কোনো ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্যলাভের নিয়ত করতে হবে।
যদি শরিকদের একজনও গোশত খাওয়ার নিয়ত করে, তবে কারো নিয়ত দুরস্ত হবে না। অনুরূপভাবে যদি কোনো শরিকের অংশ সপ্তমাংশের কম হয়, তবে সবার কোরবানিই নষ্ট হয়ে যাবে। -ফাতাওয়ায়ে আলমগিরি : ৫/৩০৪
যদি গরু কেনার আগে অংশীদাররা সবাই মিলে কেনে, তবে তা জায়েজ। আর যদি কেউ একা কোরবানি করার জন্য একটা গরু কেনে এবং মনে মনে ইচ্ছা রাখে পরে আরো লোককে অংশীদার করবে, তবে তা-ও জায়েজ আছে।
তবে যদি ব্যক্তি এমন হয়, যার ওপর কোরবানি ওয়াজিব নয় এবং তিনি কেনার সময়ও অন্যদের শরিক করার নিয়ত করেননি, তবে অন্য কাউকে নতুন করে অংশীদার করা যাবে না। এককভাবে কোরবানি করতে হবে। আর ব্যক্তির ওপর কোরবানি ওয়াজিব হলে অন্যদের শরিক করতে পারবে। তবে এমনটি করা অনুচিত।
কোরবানি গরু, মহিষ ও উটে আকিকার নিয়তে শরিক হতে পারবে। এতে কোরবানি ও আকিকা দুটোই সহিহ হবে। -রদ্দুল মুহতার : ৬/৩৬২