‘আগামীবারের (২০২৫) হজ হবে গ্রীষ্ম মৌসুমের শেষ হজ। অর্থাৎ গরমকে সঙ্গী করে পবিত্র হজ পালন করতে হবে। এর পর ২০২৬ সাল থেকে নতুন মৌসুমে হজ পালিত হবে। এ ধারাবাহিকতা চলবে টানা ১৬ বছর। ২০২৬ সাল থেকে টানা আট বছর বসন্ত মৌসুমে এর পরের আট বছর শীতকালে হজ অনুষ্ঠিত হবে।’
বুধবার (১৯ জুন) সৌদি আরবের ন্যাশনাল সেন্টার অব মেটিওরোলজির মুখপাত্র হুসেইন আল কাহতানি এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি আরও জানান, ‘আমরা টানা ১৬ বছরের জন্য গ্রীষ্মকালীন হজকে বিদায় জানাব।’
সে হিসেবে দেখা যাচ্ছে, ১৪৪৭ হিজরি সাল থেকে ১৪৫৪ হিজরি পর্যন্ত হজ বসন্তকালে হবে। এরপরের আট বছর অর্থাৎ ১৪৬১ সাল পর্যন্ত শীতকালে হজ অনুষ্ঠিত হবে। ১৪৬২ হিজরি সাল থেকে ১৪৬৯ হিজরি সাল পর্যন্ত শরতকালে এরপর ১৪৭০ হিজরি সালে পুনরায় গ্রীষ্মকালে পবিত্র হজ প্রবেশ করবে এবং ৯ বছর পর্যন্ত এ ঋতুতে তা অনুষ্ঠিত হবে।
তীব্র তাপপ্রবাহের মাঝে এবারের হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। ফলে এ বছর হজের সময় অন্তত সাড়ে ৫০০ হজযাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। যাদের বেশিরভাগেরই মৃত্যু হয়েছে তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে। গরমের এমন ভয়াবহতার মাঝে তাপপ্রবাহ কমার বিষয়ে সুসংবাদ দিলো সৌদি আরবের জাতীয় আবহাওয়া গবেষণা এবং পূর্বাভাস সংস্থা।
মূলত ইসলামি বর্ষপঞ্জি চন্দ্রভিত্তিক গণনার অনুসরণ করে। প্রতিবছর সৌর বর্ষপঞ্জির সঙ্গে এর ১০ দিনের ব্যবধান হয়। অর্থাৎ প্রতিবছর ইসলামি বর্ষপঞ্জি প্রায় ১০ দিন পিছিয়ে যায়। ফলে হজ মৌসুম প্রতি ৩৩ বছর পর পর গ্রীষ্ম, বসন্ত, শীত ও শরৎকালের মধ্যে ঘুরে ঘুরে আসে।
এ বছর হজের সময় গড় তাপমাত্রা ৪৫ থেকে ৪৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ছিল। তবে সৌদির জাতীয় আবহাওয়া কেন্দ্র জানায়, ১৭ জুন মক্কায় তাপমাত্রা ৫১.৮ ডিগ্রি হয়ে যায়। ফলে ফরজ তাওয়াফ এবং জামারাতে কংকর নিক্ষেপের সময় হাজিরা প্রচণ্ড কষ্টের সম্মুখীন হন।
এখন পর্যন্ত একাধিক দেশ থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে হজ পালনে যেয়ে অন্তত ৫৭৭ জন হজযাত্রী ইন্তেকাল করেছেন। কিন্তু সৌদি কর্তৃপক্ষ হজযাত্রী মৃত্যুর বিষয়ে কোনো তথ্য দেয়নি। তবে তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে গরমে অসুস্থ হয়ে ২ হাজার জনের বেশি হজযাত্রীর চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানানো হয়েছে।
ইসলামের পঞ্চম স্তম্ভের একটি হজ। ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী, প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক ও সামর্থ্যবান মুসলিম নারী-পুরুষের জন্য জীবনে অন্তত একবার হজ করা ফরজ। প্রতিবছর বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লাখ লাখ মানুষ হজ করতে সৌদি আরব যান।
এবার ১৮ লাখের বেশি মানুষ হজে অংশ নেন। যার মধ্যে ১৬ লাখই বিদেশি নাগরিক। হজের অনেক আনুষ্ঠানিকতা খোলা জায়গায় করতে হয়। এতে করে বেশি স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়েন বয়স্করা।