সৃষ্টিকর্তা দয়াময় আল্লাহতায়ালার প্রতি আনুগত্য প্রকাশ ও তার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে মুসলমানরা ইবাদত-বন্দেগি ও নেক আমল করে। ফরজ-ওয়াজিব আমলের বাইরে মর্যাদাপূর্ণ বেশ কিছু নফল ও মোস্তাহাব আমল রয়েছে, যা পালন করা আবশ্যকীয় বিধান নয়। তবু আল্লাহর নৈকট্য অর্জনে সেসব আমলের ধারাবাহিকতার কোনো বিকল্প নেই।
কিন্তু শয়তানের প্ররোচনায়, অলসতা ও অবহেলায় সেসব আমল ধারাবাহিকভাবে চালিয়ে নেওয়া যায় না। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা ওই (নির্বোধ) নারীর মতো হয়ো না, যে তার পাকানো সুতা শক্ত করে পাকিয়ে টুকরো টুকরো করে ফেলে।’ -সুরা নাহল : ৯২
অর্থাৎ কোনো কাজ করার পর তা ছেড়ে দেওয়া ওই নির্বোধ নারীর সুতা ছিঁড়ে ফেলার মতোই। আমল কম হলেও যদি তাতে ধারাবাহিকতা থাকে, তাহলে আল্লাহতায়ালা সে আমল পছন্দ করেন।
হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, ‘আল্লাহর কাছে সর্বাধিক প্রিয় আমল কোনটি? তিনি বলেন, ধারাবাহিক আমল, যদিও তা অল্প হয়।’ -বায়হাকি : ৪২৪০
আলেমরা বলেন, নিয়মিত ইবাদত-বন্দেগি ও আমলের পাশাপাশি চার কাজ কখনো পরিত্যাগ না করা। সেগুলো হলো-
এক. কখনো সৃষ্টিকর্তা আল্লাহতায়ালার প্রতি শোকরিয়া আদায় তথা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ থেকে নিজেকে বিরত না রাখ। তাহলে তিনি আর বাড়িয়ে দেবেন না। ইরশাদ হয়েছে, ‘যদি তোমরা শোকরিয়া আদায় করো; তাহলে বাড়িয়ে দেবে।’ -সুরা ইবরাহিম : ৬
দুই. কখনো দয়াময় আল্লাহর স্মরণ থেকে নিজেকে বিরত না রাখা, তাহলে তিনি আপনাকে আর স্মরণ করবেন না। কোরআন মজিদে ইরশাদ হয়েছে, ‘আমাকে স্মরণ করো, আমিও তোমাদের স্মরণ করবে।’ -সুরা আল বাকারা : ১৫২
তিন. কখনো দোয়া করা থেকে নিজেকে বিরত না রাখা, তাহলে তিনি বিপদে আর আপনার ডাকে সাড়া দেবেন না। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আমার কাছে দোয়া করো, আমি সাড়া দেবে।’ -সুরা আল গাফির : ৬০
চার. কখনো ক্ষমা চাওয়া থেকে নিজেকে বিরত না রাখা, তাহলে তিনি আর মুক্তি দেবেন না। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহর কাছে ক্ষমাপ্রার্থীদের তিনি আজাব দেন না অর্থাৎ মুক্তি দেন।’ -সুরা আনফাল : ৩৩