দুই শতাধিক দেশি ও তিন শতাধিক আরব এবং আন্তর্জাতিক প্রকাশনী সংস্থার অংশগ্রহণে সৌদি আরবের মদিনা মোনাওয়ারায় শুরু হয়েছে তৃতীয় বইমেলা। ৩০ জুলাই মদিনার কিং সালমান কনভেনশন সেন্টারে মেলাটি শুরু হয়। ৫ আগস্ট মেলার পর্দা নামবে।
মেলাটি দর্শকদের জন্য দুপুর ২টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত খোলা থাকে।
বইমেলায় হারামাইন লাইব্রেরির স্টল দর্শনার্থীদের মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। যেখানে রয়েছে অনেক দুষ্প্রাপ্য, প্রাচীন ও দুর্লভ বইয়ের বিশেষ সংগ্রহ, যেগুলো প্রদর্শনীর জন্য রাখা হয়েছে।
হারামাইন শরিফাইন এফেয়ার্স ইনস্টিটিউশনের পক্ষ থেকে মদিনা বইমেলায় রাখা প্রাচীন এবং দুর্লভ পাণ্ডুলিপির মধ্যে রয়েছে, ১২৮৬ হিজরি সালে কায়রোতে মুদ্রিত সহিহ বোখারির অনুলিপি এবং ১৩১২ হিজরি সালের প্রাচীন বই ‘আল মিইয়ার আল-মুরাব’ এবং আল-জামে আল-মাগরিব’-এর নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
হারামাইন লাইব্রেরিতে প্রাচীন বইয়ের ১১ হাজার ৪৯১টি পাণ্ডুলিপি রয়েছে, যা আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিশেষজ্ঞরা সংরক্ষণ করেছেন।
মসজিদে হারামের গ্রন্থাগারের দুর্লভ পাণ্ডুলিপির মধ্যে রয়েছে, ‘মুসনাদ আল-মুয়াত্তা।’ এটা বিশ্বের একমাত্র কপি, যা ৬৯৩ হিজরিতে লেখা হয়।
গ্রন্থাগারে প্রাচীন পাণ্ডুলিপির সংখ্যা ৮৫০৩টি যা মূল আকারে রয়েছে এবং ২৭৫৬টি পাণ্ডুলিপি ছবি আকারে সংরক্ষিত।
সৌদি আরবের সাহিত্য, প্রকাশনা ও অনুবাদ-সংস্থা (লিটারেচার, পাবলিশার্স অ্যান্ড ট্রান্সলেশন অথরিটি) মদিনা শাখার উদ্যোগে মেলাটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
সংস্থার নির্বাহী প্রধান মোহাম্মদ হাসান উলওয়ান স্থানীয় এক টিভি চ্যানেলকে দেওয়া এক বক্তব্যে বলেন, আমরা পাঠ, শিল্প ও সংস্কৃতির প্রতি মদিনা মোনাওয়ারার নেটিজেনদের যে ভাবাবেগ রয়েছে, তার সঙ্গে পুরোপুরি একাত্ম হতে পেরেছি এবং স্থানীয় ও বহিরাগত বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির বিপুলসংখ্যক প্রকাশকদের সরব অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে মেলার আয়োজন করার সুযোগ পেয়েছি।
তিনি আরও বলেন, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে, এই মেলাকে অ্যারাবিক ও আঞ্চলিক বইমেলাগুলোর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা; যাতে প্রতি বছর এতে প্রকাশক ও প্রকাশনা-সংশ্লিষ্ট লোকদের সঙ্গে কবি-সাহিত্যিক ও বুদ্ধিজীবীদের সক্রিয় ও সরব উপস্থিতি ঘটে।
সাত দিনব্যাপী এই মেলায় রয়েছে ৮০টিরও অধিক কর্মসূচি- সেমিনার, কাব্যসন্ধ্যা ও বিভিন্ন কর্মশালা। এতে অংশগ্রহণ করবেন বিশিষ্ট কবিসাহিত্যিক, চিন্তক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিরা।
বইমেলাটি ধীরে ধীরে একটি প্রতীক্ষিত বার্ষিক অনুষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। অংশগ্রহণকারীরা বুক সাইনিং কর্নারে লেখকদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পাবেন।
মেলায় শিশুদের জন্য একটি অংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। সেখানে তাদের সৃজনশীল ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য ডিজাইন করা শিক্ষামূলক এবং দক্ষতাভিত্তিক কার্যক্রম এবং কর্মশালা অনুষ্ঠিত হবে।