দয়াময় আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘তোমরা শোয়া, বসা ও দণ্ডায়মান অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ করো।’ বস্তুত মানুষ এ তিন অবস্থার বাইরে থাকতে পারে না।
আমরা জানি, নামাজ মানুষকে বারবার আল্লাহর আনুগত্যের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। আর দুনিয়ার কেউ দেখে না, দেখেন কেবল আল্লাহ। গোপন ও প্রকাশ্য সব বিষয়ে আল্লাহ অবহিত, এ বোধ-উপলব্ধি সৃষ্টিকে তাকওয়া বা আল্লাহর ভয় বলা হয়।
যার মধ্যে আল্লাহর স্মরণ ও তাকওয়া আছে, তার দ্বারা আল্লাহর নাফরমানি, অবাধ্যতা ও গোনাহের কাজ অসম্ভব। সুতরাং সে কীভাবে অফিস ফাঁকি দেবে?
কারণ, ফাঁকি দিয়ে উপার্জিত অর্থ-সম্পদ তো হারাম, আর হারাম খাদ্যে গঠিত দেহ দ্বারা পালিত কোনো ইবাদত-বন্দেগি আল্লাহ কবুল করেন না।
তাকওয়া ও আল্লাহর স্মরণ মানব জীবনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর সঙ্গে জীবন ঘনিষ্ঠ অনেক মাসয়ালা ও বিষয় জড়িত। সেগুলো হলো-
১. কর্মস্থলে ফাঁকি দেওয়া ও কর্মদাতাকে চুক্তির চেয়ে কম কাজ প্রদান করার মাধ্যমে উপার্জিত অর্থ হারাম। সব সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিক্ষক, ডাক্তারসহ সব পেশার সবাই নিজ নিজ কর্মচুক্তি অনুসারে পূর্ণ কাজ প্রদান করতে ইসলামি শরিয়ত মতে বাধ্য।
যদি কারও কোনো অসুবিধা হয়, তাহলে তিনি কর্মত্যাগ কিংবা চাকুরি ছেড়ে দিতে পারেন। কিন্তু কর্মরত অবস্থায় কর্মে অবহেলা তার জন্য হারাম এবং এভাবে উপার্জিত বেতনও হারাম।
২. জিকির-আজকার, ওয়াজ মাহফিল, দাওয়াত ও দীন প্রতিষ্ঠা ইত্যাদি অজুহাতে নিয়োগপ্রাপ্ত কাজে অবহেলা করলেও তা হারাম হবে।
৩. কোনো অবস্থাতেই মিথ্যা বলে বা নিজেকে উপস্থিত দেখিয়ে কর্মের বেতন গ্রহণ করা এবং সে সময়ে অন্য কর্ম করা জায়েজ নয়। এভাবে উপার্জিত বেতন সন্দেহাতীতভাবে হারাম উপার্জন।
৪. স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, মাদ্রাসা প্রভৃতির শিক্ষক ও ডাক্তাররা নির্ধারিত সময়ে চাকরিস্থলে অবস্থান করতে ও নির্ধারিত সেবা প্রদান করতে বাধ্য।
যদি চাকরির চুক্তি ও সুবিধাদি অপছন্দ হয়, তাহলে চাকরি ছেড়ে দিতে পারেন। পরিবর্তনের চেষ্টা করতে পারেন। কিন্তু চাকরিরত অবস্থায় দায়িত্বে অবহেলা, কম পড়ানো, কম চিকিৎসা করা, ছাত্র বা রোগীকে অতিরিক্ত সেবা গ্রহণের জন্য নিজস্ব কোচিং বা ক্লিনিকে যেতে উৎসাহিত করা- সবই হারাম এবং এভাবে উপার্জিত অর্থ হারাম।