যে ৭ আমলে রিজিক বাড়ে

আমল, ইসলাম

ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম | 2024-09-14 20:55:09

এমন কিছু আমল রয়েছে, যেগুলোর কারণে মানুষের রিজিক বাড়ে এবং আয়-উপার্জনে বরকত আসে। এর কয়েকটি হলো-

হজ ও উমরা পালন
বারবার হজ ও উমরা পালন করার দ্বারা রিজিকে প্রবৃদ্ধি ঘটে। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা লাগাতার হজ ও উমরা পালন করতে থাকো। কারণ, এর দ্বারা এমনভাবে অভাব ও গোনাহ দূরীভূত হয়; যেমনভাবে কামারের হাপর লোহা ও সোনা-রুপার ময়লা দূর করে দেয়।’ -জামে তিরমিজি : ৮১০

আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখা
রিজিক বৃদ্ধির অন্যতম আরেকটি আমল হচ্ছে, আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখা। কোরআনে কারিমের বিভিন্ন স্থানে আত্মীয়ের সঙ্গে সদাচরণ করতে এবং তাদের হক যথাযথভাবে আদায় করার নির্দেশ দিয়েছেন আল্লাহতায়ালা।

হজরত আনাস ইবনে মালেক (রা.) বলেন, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে আমি বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কামনা করে তার রিজিক প্রশস্ত করে দেওয়া হোক এবং আয়ু দীর্ঘ করা হোক- সে যেন তার আত্মীয়দের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখে।’ -সহিহ বোখারি : ৫৯৮৫

দান-সদকা করা
দয়াময় আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় এবং দান-সদকা করার মাধ্যমে রিজিক বাড়ে। কোরআন মাজিদে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর তোমরা যা কিছু আল্লাহর জন্য ব্যয় করো; তিনি তার বিনিময় দেবেন। তিনিই উত্তম রিজিকদাতা।’ -সুরা সাবা : ৩৯

হাদিসে হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘প্রতিদিন সকালে দু’জন ফেরেশতা অবতরণ করে। তাদের একজন বলে, হে আল্লাহ! দানকারীকে তার দানের জন্য উত্তম প্রতিদান দিন। অপরজন বলে, হে আল্লাহ! কৃপণকে ধ্বংস করে দিন।’ -সহিহ বোখারি : ১৪৪২

কৃতজ্ঞতা আদায়
যেসব কাজকর্ম ও আমলে রিজিক বাড়ে, তার মধ্যে অন্যতম হলো- আল্লাহতায়ালা যেসব নেয়ামত দান করেছেন, তার শোকর আদায় করা বা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা। কারণ, শোকর আদায় করার দ্বারা নেয়ামত বাড়ে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যদি তোমরা শোকর আদায় করো, তবে আমি অবশ্যই তোমাদের (নেয়ামত) বাড়িয়ে দেব। আর যদি তোমরা অকৃতজ্ঞ হও, নিশ্চয় আমার আজাব বড় কঠিন।’ -সুরা ইবরাহিম : ৭

বিয়ে করা
আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে যারা অবিবাহিত এবং তোমাদের দাস–দাসীদের মধ্যে যারা সৎকর্মপরায়ণ, তাদের বিয়ে করিয়ে দাও। তারা যদি নিঃস্ব হয়, আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদের সচ্ছল করে দেবেন। কারণ, আল্লাহতায়ালা প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ।’ -সুরা নূর : ৩২

হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তিন শ্রেণির মানুষকে সাহায্য করাকে আল্লাহ নিজ দায়িত্ব হিসেবে নির্ধারণ করেছেন। তিন শ্রেণির অন্যতম হলো- বিয়ে করতে আগ্রহী সেই ব্যক্তি, যিনি বিয়ে করে পবিত্র জীবন যাপন করতে ইচ্ছুক।’ -জামে তিরমিজি : ১৬৫৫

গরিব-অসহায়ের প্রতি সদয় হওয়া
গরিব-অসহায় মানুষের প্রতি সদয় হওয়া রিজিক বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। রাস্তাঘাটে গরিব-অসহায় মানুষকে হাত বাড়াতে দেখলেই সবাইকে এক পাল্লায় মেপে খারাপ আচরণ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেছেন, ‘তাদের (ধনী লোকদের) সম্পদে প্রার্থী (দরিদ্র) ও বঞ্চিতদের অধিকার রয়েছে।’ -সুরা জারিয়াত : ১৯

হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে থাকা দুর্বলদের কারণে তোমাদের সাহায্য করা হয় এবং রিজিক প্রদান করা হয়।’ -সহিহ বোখারি : ২৮৯৬

আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা
যেসব কাজকর্ম বা আমলে রিজিক বাড়ে, এর মধ্যে অন্যতম হলো- আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা। কারণ, আমরা এমন এক স্রষ্টার সৃষ্টি- যিনি চাইলে খুশি; না চাইলে অখুশি। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমাদের প্রতিপালক বলেন, তোমরা আমাকে ডাকো; আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব।’ -সুরা মুমিন : ৬০

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.)-এর বিবরণে আছে যে, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি অভাবে পতিত হওয়ার পর মানুষের কাছে সোপর্দ করে, অর্থাৎ অভাব দূরীকরণে মানুষের ওপর নির্ভরশীল হয়; তার অভাব মোচন করা হয় না। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি অভাবে পতিত হওয়ার পর প্রতিকারের জন্য আল্লাহর ওপর নির্ভরশীল হয় (দোয়া-প্রার্থনা করে) অবিলম্বে অথবা বিলম্বে আল্লাহ তাকে রিজিক দান করেন।’ -জামে তিরমিজি : ২৮৯৬ ও ২৩২৬

এ সম্পর্কিত আরও খবর