তুরস্কের ইস্তাম্বুলের চামলিজা মসজিদ (Camlica Mosque) ফজরের নামাজ আদায়ের মধ্য দিয়ে উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) দিবাগত প্রায় ছয় বছর পর এই মসজিদে নামাজ আদায় করা হলো।
এই মসজিদটি তুরস্কের সবচেয়ে বড় ও সুন্দরতম মসজিদ হিসেবে ইতোমধ্যেই স্বীকৃতি পেয়েছে।
আগে থেকেই বলা ছিলো রজব মাসের শুরুর দিন ফজরের নামাজ আদায়ের মধ্য দিয়ে মসজিদে নামাজ শুরু হবে। সে ঘোষণামতে লোকজন বৃহস্পতিবার ভিড় করনে মসজিদে নামাজ আদায়েরজন্য। এদিন সুবহে সাদিক শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মসজিদের কারুকার্যময় সুউচ্চ মিনার থেকে ধ্বনিত হয় ফজরের আজান। শুরু হয় একটি নতুন ভোরের, রচিত হয় নবতর এক ইতিহাস। ফজরের নামাজে হাজার হাজার মুসল্লির সঙ্গে নামাজ আদায় করেন তুরস্কের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিন আলি ইয়ালদারম।
পনেরো হাজার বর্গমিটারের এই মসজিদে একসঙ্গে ৬৩ হাজার মুসল্লি নামাজ পড়তে পারবে। মসজিদ কমপ্লেক্সে রয়েছে একটি সম্মেলন কক্ষ, একটি ইসলামি জাদুঘর এবং একটি গণগ্রন্থাগার।
মসজিদটিতে মোট ছয়টি মিনার রয়েছে। চারটি মিনারের উচ্চতা ১০৭.১ মিটার। অবশিষ্ট দু’টি মিনারের উচ্চতা নব্বই মিটার। চার মিনারের উচ্চতাকে গবেষক মহল বিশেষ ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন। বলা হচ্ছে এর দ্বারা মূলত ১০৭১ খ্রিস্টাব্দে সংঘটিত মানযিকার্টের যুদ্ধের দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে, যেখানে সেলজুক সুলতান আল্প আরসালান মাত্র বিশ হাজার সৈন্য নিয়ে বাইজান্টাইন সম্রাট রোমানূসকে শোচনীয় পরাজয়ের বিস্বাদ ও গ্লানিতে ডুবিয়ে দিয়েছিলেন। অথচ তার সৈন্যসংখ্যা ছিল দুই লাখ।
মসজিদের গম্বুজের উচ্চতা ৭২ মিটার এবং প্রস্থ ৩৪ মিটার। মসজিদের বহিরাংশে গড়ে তোলা হয়েছে ত্রিশ হাজার বর্গমিটার বিস্তৃত ফুলবাগিচা।
বলা হচ্ছে, এটা তুরস্কের দীর্ঘতম ফুলবাগান। পার্কের কিছু অংশ তুরস্কের এশীয় অংশে এবং অপর অংশে ইউরোপীয় অংশে। পার্কে চলতে চলতে দর্শনার্থীরা একইসঙ্গে মারমারা সাগরের মৃদুমন্দ হাওয়া উপভোগের সুযোগ পেয়ে যাবেন মুফতে।
উসমানি আমলের স্থাপত্যশৈলী ও আধুনিক স্থাপত্যকলার মিশেলে অলংকৃত এই মসজিদ রাষ্ট্রপতি এরদোগানের ভাষায় ‘তুরস্কের জনগণের নতুন আধ্যাত্মিক বর্ম’।