রমজানের চাঁদ দেখা: গুরুত্ব ও মাসয়ালা

রামাদ্বান কারীম, ইসলাম

মুফতি মাহফূযুল হক, অতিথি লেখক, ইসলাম | 2023-09-01 20:09:36

রমজান মাসের চাঁদের উদয় মুমিন জীবনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ এক বিষয়। এ চাঁদ প্রতিটি মুসলমানের যাপিত জীবনের সময়সূচিতে এবং দৈনন্দিন জীবনের কার্যতালিকাতে বিরাট পরিবর্তন আনে। শুরু হয় দীর্ঘ নামাজ ২০ রাকাত তারাবির প্রস্তুতি ও সেহরির আয়োজন। অনেক গুরুত্ব বাড়ে তাহাজ্জুদ নামাজের ও কোরআন খতমের। আল্লাহ ভক্ত মানুষ অধীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষায় থাকেন কখন রমজানের চাঁদের দেখা মিলবে আর অনেক গুণ বেশি সওয়াব লাভের বিশ্বাস নিয়ে আগের চেয়ে অনেক বেশি সওয়াবের কাজে মনোনিবেশ করবে। এ চাঁদের উদয় মুমিন মাত্র ব্যক্তিকেই ইবাদাতের জন্য উদগ্রীব করে তোলে। তাই শাবান মাসের ২৯ তারিখ সন্ধ্যায় বড়-ছোট ও নর-নারী সবার চোখ থাকে পশ্চিমের আকাশে। যারা ব্যস্ততায় আকাশ দেখতে পায় না তারা অন্যদের থেকে খবর রাখার চেষ্টা করেন।

হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চান্দ্র মাসের নতুন চাঁদ দেখলে বলে উঠতেন-

اللَّهُمَّ أهِلَّهُ عَلَيْنا باليُمْنِ وَالْإِيْمَانِ وَالسَّلامَةِ وَالإِسْلَامِ رَبِّي وَرَبُّكَ اللَّهُ

উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা আহিল্লাহু আলাইনা বিল ইয়ূমনি ওয়াল ঈমানি ওয়াসসালামাতি ওয়াল ইসলামি রাব্বি ও রাব্বুকাল্লাহ।

অর্থ: হে আল্লাহ! আপনি আমাদের জন্য এ চাঁদকে সৌভাগ্য, ঈমান, শান্তি ও ইসলামের সাথে উদিত করুন। হে চাঁদ! আল্লাহই হলেন আমার প্রভু এবং তোমারও প্রভু। -সুনানে তিরমিজি: ৩৪৫১

এ দোয়া শুধু রমজানের চাঁদ দেখলেই নয় যে কোনো মাসের নতুন চাঁদ দেখল বলা সুন্নত।

নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাস গণনার নীতি নির্ধারণ করে দিয়েছেন চাঁদ দেখা যাওয়া। অর্থাৎ সমতল থেকে খালি চোখে চাঁদ দেখা যেতে হবে। তাহলেই কেবল নতুন মাস গণনা করা যাবে। চাঁদ দেখার জন্য মধ্যাকাশে উড়ার বা ওপরে চড়ার কোনো প্রয়োজন নেই। প্রযুক্তি নির্ভর কোনো যন্ত্র দিয়ে দেখার কোনো দরকার নেই। এমনকি জ্যোতির্বিজ্ঞানের হিসেব কষারও কোনো ফায়দা নেই। সমতল থেকে খালি চোখে যদি চাঁদ দেখা যায় তাহলেই কেবল নতুন মাস শুরু হবে। আর যদি বাস্তবেই চাঁদ উঠে কিন্তু আকাশ মেঘাচ্ছান্ন থাকায় বা ধুলাচ্ছন্ন থাকায় সমতল থেকে খালি চোখে চাঁদ দেখা না যায় তাহলে চাঁদ উঠা সত্ত্বেও নতুন মাস গণনা করা যাবে না।

নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা (রমজান মাসের) চাঁদ না দেখে রোজা শুরু করবে না এবং (ঈদের) চাঁদ না দেখে রোজা ত্যাগ করবে না। আর যদি আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকে (চাঁদ দেখতে না পাও) তাহলে মাসের ত্রিশ দিন পূর্ণ করবে। -সহিহ বোখারি: ১৯০৬

যদি আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকে তাহলে রমজানের চাঁদ দেখা প্রমাণিত হওয়ার জন্য দ্বীনদার, পরহেজগার, আল্লাহভীরু একজন ব্যক্তির স্বাক্ষ্য যথেষ্ট হবে।

আর যদি আকাশ মেঘমুক্ত ও পরিচ্ছন্ন থাকে তাহলে দু’চার জনের দেখা যথেষ্ট হবে না। বরং এত বেশি সংখ্যক লোকের দেখা জরুরি যাদের বক্তব্যের ওপর সাধারণত সন্দেহ করা যায় না।

এ সম্পর্কিত আরও খবর