উত্তম গুণসম্পন্ন মানুষ হওয়ার বার্তা দেয় রমজান

, ইসলাম

মুফতি ফারহীন জান্নাত ইউসুফী, অতিথি লেখক | 2023-08-26 08:59:06

মানবতার ধর্ম ইসলামে সিয়াম সাধনা ফরজ। ইসলামই পৃথিবীর একমাত্র বৃহৎ ধর্ম, যাতে ধারাবাহিকভাবে দীর্ঘদিন অসংখ্য মানুষ ধর্মীয় বিধান হিসেবে সংযমের সাধনায় আত্মনিয়োগ করে থাকেন। এখন প্রশ্ন হতে পারে, রোজার বিধান আরোপিত হওয়ার গূঢ়তত্ত্ব কী?

প্রথম কথা হলো- রোজা আল্লাহর হুকুম। এর অন্যকোনো কারণ নেই। তবে হ্যাঁ, রোজার উদ্দেশ্য হলো- খাদ্যাভাবে ভুগতে থাকা মানুষগুলোর কষ্ট সামান্য হলেও অনুভব করা, নিজের ভেতরে সহানুভূতি তৈরি করা। পানাহার ও জৈবিক চাহিদাকে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে মানবীয় অন্যান্য উগ্র দোষগুলোর (হিংসা, বিদ্বেষ ও শত্রুতাপোষণ) ওপর নিয়ন্ত্রণ আনা। মহান সৃষ্টিকর্তা মালিকের আনুগত্যে নিজেকে বিলীন করে বিনয় ও অবনত হওয়ার দীক্ষা নেওয়া।

হাদিসে এসেছে হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘সংযম শুধুমাত্র পানাহার থেকে নয়, রোজার সংযম অনর্থক ও অশ্লীল বিষয়াদি থেকেও। কাজেই কেউ যদি গালি দেয় অথবা মূর্খতাপূর্ণ আচরণ করে, তাকে বলে দাও- আমি রোজাদার।’ -সহিহ ইবনে হিব্বান: ৩৪৭৮

কি সুন্দর চরিত্রের বর্ণনা, সুবহানাল্লাহ। নিজেও মন্দে লিপ্ত হয়ো না, অন্য কেউ উস্কানি দিলে তাকেও নিরুৎসাহিত করো। এটাই ইসলামের আদর্শ।

আরেক হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, ‘সিয়াম (রোজা) সবরের (ধৈর্য) অর্ধেক। প্রত্যেক বস্তুরই জাকাত আছে। শরীরের জাকাত হলো- রোজা।’ -ইবনে মাজাহ: ১৭৪৫

কেবল ধর্মীয় বিধান নয়, বরং মানবিক শুদ্ধতার দৃষ্টিকোণেও সিয়াম পালন প্রশংসনীয় একটি ইবাদত বিশেষ। পৃথিবীতে এ পর্যন্ত অস্তিত্ব পাওয়া প্রাণীর মধ্যে সুস্থ বিবেক, স্বচ্ছ চিন্তা ও সার্বিক বিবেচনায় মানুষ উর্ধ্বে। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে আসুন সিয়াম পালনের উপকারিতায় উল্লেখিত বৈশিষ্ট্যগুলো দেখি।

১. দরিদ্রদের প্রতি সহানুভূতি সৃষ্টি হয়।
২. মানবীয় দোষত্রুটি থেকে মুক্ত থাকা যায়।
৩. বিনয়ী হওয়া যায়।
৪. নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ লাভ হয়।

উল্লেখিত চার বৈশিষ্ট্যের প্রতি খেয়াল করে তা অর্জনের নিমিত্তে যে করতে সিয়াম সাধনায় মশগুল হয়; নিঃসন্দেহে সে ‘উত্তম বুদ্ধিসম্পন্ন’ মানুষ। আর এই উত্তম গুণসম্পন্ন মানুষ হওয়ার বারতা নিয়েই আগমন করে পবিত্র রমজান মাস।

এ সম্পর্কিত আরও খবর