বিদেশের কোরআন প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের মুখ হাফেজ জাকারিয়া

, ইসলাম

ইসলাম ডেস্ক | 2023-09-01 12:09:52

২০০২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে জন্ম নেওয়া শিশুটির বয়স এখন পনেরো। এই ছোট্ট হিসাব মেলানোর জন্য খুব একটা কষ্টের দরকার নেই, এটা কোনো কৌতুহলেরও বিষয় না। কিন্তু এই বয়সী কোনো কিশোরের ঝুঁলিতে যদি দেশ-বিদেশের বিরল অর্জন জমা থাকে, তাকে নিয়ে তো কৌতুহল জাগবেই!

বলছি হাফেজ মুহাম্মদ জাকারিয়ার কথা। খ্যাতি আর সাফল্যের শিখরে অবস্থানকারী এক কিশোর হাফেজে কোরআনের কথা।

হাফেজ জাকারিয়ার গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জ। আসলে এটা তার নানার বাড়ি। জাকারিয়ায় দাদার বাড়ি ভোলার চর ফ্যাশন। তার বাবা হাফেজ মাওলানা ফয়েজ উল্লাহ মানিকগঞ্জ হরিরামপুরের একটি মসজিদের ইমাম। মা জাহানারা বেগম গৃহিণী।

উত্তর যাত্রবাড়ির তাহফিজুল কোরআন ওয়াসসুন্নাহ মাদরাসার ছাত্র হাফেজ জাকারিয়ার সাফল্যের যাত্রা শুরু হয় ২০১৩ সালে বেসরকারি টিভি চ্যানেল বাংলাভিশন আয়োজিত হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করার মধ্য দিয়ে। সেবার দেশের বাছাইকৃত প্রায় ৩০ হাজার হাফেজের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করে ৫ লাখ টাকা পুরস্কার লাভ করেন তিনি।

মাত্র আড়াই বছরে কোরআনে কারিমের হাফেজ হন তিনি। হেফজ শেষে এখন তিনি মাদানি নেসাবে পড়াশোনা করছেন।

‘কুয়েত অ্যাওয়ার্ড’ নামে আন্তর্জাতিক কেরাত ও হিফজ প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে দেশের সুনাম বয়ে আনেন কিশোর হাফেজ মুহাম্মদ জাকারিয়া। ২০১৬ সালের ১৩ এপ্রিল কুয়েতের আওকাফ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ৫৫টি দেশের অংশগ্রহণে আন্তর্জাতিক কেরাত ও হিফজ প্রতিযোগিতায় চতুর্থ স্থান অর্জন করেন হাফেজ জাকারিয়া।

প্রতিযোগিতাটি উদ্বোধন করেন কুয়েতের আমির শেখ সাবাহ আল আহমাদ আল জাবের আল সাবাহ। হাফেজ জাকারিয়া ৩০ পারা কোরআন হিফজ গ্রুপে চতুর্থ স্থান অর্জন করে ৭ হাজার কুয়েতি দিনার ও সম্মাননাপত্র লাভ করেন। কুয়েতে অনুষ্ঠিত কোনো প্রতিযোগিতায় প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে এটাই সর্বোচ্চ সফলতা।

এর আগে ২০১৫ সালের এপ্রিলে মিসরের কায়রোয় আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে ৫০ হাজার পাউন্ড জিতে নেন হাফেজ মুহাম্মদ জাকারিয়া। একই বছর সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাণিজ্যিক শহর দুবাইয়ে আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় ৮০টি দেশের প্রতিযোগীকে হারিয়ে তৃতীয় ও সুর ক্যাটাগরিতে প্রথম স্থান লাভ করেন তিনি। এছাড়াও কাতার, জর্ডান ও মিসরের কোরআন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখেন হাফেজ জাকারিয়া।

হাফেজ মুহাম্মদ জাকারিয়া গত বছর থেকে ঢাকা সেনানিবাস কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে খতম তারাবি পড়াচ্ছেন। গত বছর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে রমজানের শেষ দশকে ‘কিয়ামুল লাইল’-এর ইমামতি করেছেন। এবারও সময়-সুযোগ হলে বায়তুল মোকাররমে তার কিয়ামুল লাইলের ইমামতি করার সম্ভাবনা রয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর