শিশুদের জন্য মসজিদগুলো হোক উদার

, ইসলাম

ইসলাম ডেস্ক | 2023-08-31 05:56:29

হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মসজিদে নববিতে নামাজ আদায় করতেন, তখন নাতিদ্বয় হজরত হাসান ও হজরত হুসাইন রাযিয়াল্লাহু আনহুমা নবীর ঘাড়ে চড়ে বসতেন। এমনকি তাদের এ খেলায় যেন ব্যাঘাত না ঘটে, সে কারণে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) সিজদায় বিশেষ সময় ক্ষেপণ করতেন। সাহাবিরাও তা প্রত্যক্ষ করতেন।

এমন কোনো হাদিস পাওয়া যায় না যে, হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শিশুদের মসজিদে নিতে নিরুৎসাহিত কিংবা নিষেধ করেছেন।

তার পরও আমাদের সমাজে বিশেষ একটা ভুল ধারণা হলো, ছোট শিশুকে মসজিদে নেওয়া যাবে না কিংবা গেলেও তাদের সবার পেছনে অথবা একেবারে একপাশে দাঁড়াতে দিতে হবে। তাতে যতটা না সমস্যা, তার চেয়ে বেশি সমস্যা এমনভাবে এটা বলা হয় অথবা এমন ব্যবহার তাদের এবং তাদের অভিভাবকের সঙ্গে করা হয় সেটা। অভিভাবকরা অনেক সময় বিব্রতকর অবস্থায় পড়েন।

নবীর যুগে মসজিদে নববি ছিল সব কিছুর কেন্দ্রবিন্দু। নামাজ থেকে শুরু করে সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় সব কার্যক্রম এখানে হতো। সেখানে শিশুদের অবাধ চলাফেরাও ছিল স্বাভাবিকভাবে। তাহলে আমরা কেন আমাদের বাচ্চাদের সঙ্গে এমন ব্যবহার করব?

দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে ছোটদের মসজিদে নিলে তার জীবন হবে ইসলামমুখী। চিন্তা করে দেখুন, বিভিন্ন ও জাতীয় সাংস্কৃতিক প্রোগ্রামে শিশুদের তাদের মা-বাবা কিংবা অভিভাবকরা ঘাড়ে চড়িয়ে নিয়ে যায়। কারণ, তাতে শিশুরা এসব কাজে আরও উৎসাহবোধ করে। অপর পক্ষে ইসলামি অনুশাসনের ক্ষেত্রে তাদের সঙ্গে এমন আচরণ করা হয়, যা তাদের ইসলাম থেকে যোজন যোজন দূরে থাকতে উদ্বুদ্ধ করছে।

মালয়েশিয়ায় দেখেছি ছোট ছোট ছেলেমেয়ে উভয়ই তাদের মা-বাবার সঙ্গে মসজিদে আসে। বাবা-মা নামাজ পড়ছে, আর পিচ্চিরা একবার নামাজে দাঁড়াচ্ছে, আবার এটাসেটা করছে। পবিত্র কাবার চত্বরে তাওয়াফ করতে, সাঈ করতে, কাতারে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করতে দেখেছি অনেককে। এটাই তো ইসলামের শিক্ষা।

মসজিদে নববীতে তো বাচ্চাদের শোরগোল লেগেই থাকে। মসজিদে নববীতে বাচ্চাদের উপস্থিতি বেশ লক্ষণীয়। তারা বড়দের সঙ্গে একটা উৎসব উৎসব আমেজ নিয়ে মসজিদে আসে। মাঝে মাঝে সিজদার মধ্যে শুয়ে পড়ে। বসে বসে ঘুমায়। কেউ কিছু বলে না।

তুরস্কের বিভিন্ন মসজিদে বাচ্চাদের মসজিদমুখী করতে মসজিদে খেলনা পর্যন্ত রেখে দেয়। বস্তুত বাচ্চারা মদজিদে আসবে, নামাজ পড়বে, একটু দুষ্টমি করবে, বিভিন্ন প্রশ্ন করবে, না বুঝে দৌঁড়াদৌঁড়ি করবে এটাই স্বাভাবিক। এটাই হওয়া উচিত। আমাদের সমাজেও ব্যাপকভাবে এই প্রচলন হোক। এক্ষেত্রে অভিভাবক থেকে শুরু করে মসজিদের ইমামদের বিশেষ ভূমিকা রাখতে হবে। বাচ্চাদের মসজিদের আনতে উৎসাহ দিতে হবে মুসল্লিদের। তবেই বাচ্চারা মন-মগজে ইসলামি ভাবধারা, ইসলামি আদর্শ নিয়ে বড় হবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর