পারিবারিক আবহে দিল্লি জামে মসজিদ চত্বরে ইফতার

, ইসলাম

ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম | 2023-08-26 08:49:59

প্রতিবেশি দেশ ভারত জনবহুল একটি দেশ। দেশটিতে প্রতি সেকেন্ডে একটি করে শিশুর জন্ম হয়, প্রতি ৩ সেকেন্ডে একজন করে মানুষের মৃত্যু ঘটে এবং প্রতি মিনিটে ১ একজন দেশান্তরী হন।

বিশ্বের প্রতি ৬ জনের ১ জন লোক এ দেশে বাস করে। চীনের পর দ্বিতীয় জনবহুল দেশ ভারত। দেশটিতে হিন্দু ছাড়াও কাছাকাছি ধর্মবিশ্বাসী শিখ, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান এবং মুসলিমও রয়েছেন।

কয়েক শ’ বছর মুসলিমরা অবিভক্ত ভারতবর্ষে শাসন পরিচালনা করে আসলেও এখন তা কেবলই স্মৃতি।

ভারতে বর্তমানে মুসলিম জনসংখ্যা ২৫ কোটির মতো। দেশটির এমন কোনো স্থান নেই যেখানে কোনো মুসলিমের বসতি নেই।

ভারতে রাজধানী দিল্লি এখন দু’টি ভাগে বিভক্ত। নতুন দিল্লিই মূলত দেশটির রাজধানী। আর পুরনো অংশ এখনও তার ঐতিহ্য ধরে রেখেছে সগৌরবে। এ অংশেই অবস্থিত দিল্লির লাল কেল্লা ও জামে মসজিদ অর্থাৎ দিল্লি গ্র্যান্ড মসজিদ তথা দিল্লি জামে মসজিদ।

সম্রাট শাহজাহান তাজমহলসহ যেসব স্থাপত্য নির্মাণের জন্য অমর হয়ে আছেন, দিল্লির জামে মসজিদ তার মধ্যে অন্যতম।

১৬ শতাব্দীর কথা। তখনকার সময়ে ১০ লাখ রুপি ব্যয় করে মুঘল সম্রাট শাহজাহান নির্মাণ করেন দিল্লির জামে মসজিদ। প্রায় ৫০০ বছরের পুরোনো ভারতের সবচেয়ে বড় এই মসজিদটি দেশের ঐতিহ্যের ধারক।

মসজিদটির নির্মাণশেলী ও স্থাপত্যবিষয়ক সৌন্দর্য প্রথম থেকে মানুষকে মুগ্ধ করেছে। তিনটি বিশাল ফটক সম্বলিত মসজিদটির চারটি সাদা গম্বুজ এবং দু’টি মিনার রয়েছে। মিনার দু’টির উচ্চতা প্রায় ৪০ মিটার। মিনার দু’টির পাঁচটি ধাপে পাঁচটি করে ব্যালকনি রয়েছে, যার প্রথম তিনটি লাল বেলেপাথর, চতুর্থটি সাদা মার্বেল এবং পঞ্চমটি সাধারণ পাথর দিয়ে তৈরি।

লাল বেলেপাথর এবং সাদা মার্বেলের স্ট্রাইপ দেওয়া মিনার দু’টি সূর্যের আলোর তীব্রতা ভেদে রং বদলায়। ঝলমলে সূর্যালোক এবং ভরা পূর্ণিমার সময়ে এর নয়নাভিরাম সৌন্দর্য হৃদয় কাড়ে।

মসজিদের মোট কাতার সংখ্যা ৯শ’। বেলেপাথরের ভিত্তির ওপর নির্মিত মসজিদটি ভূমি থেকে প্রায় ৩০ ফুট উঁচু।

এই মসজিদে একসঙ্গে প্রায় ২৫ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন। স্থাপত্য-সৌন্দর্যের কারণে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ মসজিদটি দেখতে আসেন।

মূল মসজিদের পূর্বে বিশাল চত্বর ঐতিহাসিক কারুকার্য খচিত প্রাচীরবেষ্টিত। সারা বছর জুমা ছাড়া সাধারণত এ চত্বর খালিই থাকে। তবে পবিত্র রমজান মাসে এ চত্বরের ব্যবহার চোখে পড়ে।

বিশেষতঃ আশপাশের জেলা এমনকি বিভিন্ন রাজ্য থেকে নানা প্রয়োজনে যেসব মুসলিম পুরাতন দিল্লিতে আসেন তাদের ক্ষণিকের ক্লান্তি অবসানে মসজিদ চত্বরটি ব্যবহৃত হয়।

আবার অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন এ মসজিদ চত্বরে পারিবারিক পরিবেশে ইফতার করবেন বলে। অনেকেই নিজেদের বাড়ির তৈরি করা ইফতার সামগ্রীতে শরিক করেন আশপাশে বসা সাধারণ রোজাদারকেও। কারণ তারা জানেন ইফতার করানোর সওয়াবের কথা। কে না চায় রোজাদারকে ইফতার করিয়ে নিজের রোজার সওয়াবের সমান সওয়াব অর্জন করতে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর