বিশ্বে ৬৮.৫ মিলিয়ন শরণার্থীর ৯২ ভাগই মুসলিম!

, ইসলাম

মায়াবতী মৃন্ময়ী, অতিথি লেখক, বার্তা২৪.কম | 2023-09-01 12:49:18

২০ জুন বিশ্ব শরণার্থী দিবস। আগের দিন ১৯ জুন ২০১৮ সালে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, বিশ্বে শরণার্থী সমস্যার চলমান ভয়াবহতা গত ১০০ বছরে আর কখনো দেখা যায় নি।

বিশ্বে বর্তমানে শরনার্থীর সংখ্যা ৬৮.৫ মিলিয়ন। তাদের ৯২ ভাগই মুসলিম। আরো উল্লেখযোগ্য ও উদ্বেগের বিষয় হলো, শুধুমাত্র ২০১৭ সালেই প্রায় ৩ মিলিয়ন শরণার্থী বিভিন্ন দেশে আশ্রয়প্রার্থী হয়েছে।

শরণার্থী হয়েছেন সবচেয়ে বেশি মুসলিমরা। মোট শরণার্থীর ৯২% ভাগ মুসলমান মূলত মধ্যপ্রাচ্যের। সিরিয়া, ইয়েমেন, ফিলিস্তিন, ইরাকের। মুসলিম প্রধান এই অঞ্চলটি এখন চরমভাবে শরণার্থী বহুল।

মধ্যপ্রাচ্যের পর পরেই রয়েছে আফ্রিকার কিছু দেশ, যেগুলোও মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ। জাতিগত, গোষ্ঠীগত দাঙ্গা-হাঙ্গামা, সম্পদ ও ক্ষমতার দখলে সুদান, চাদ, এঙ্গোলা, রুয়ান্ডা, বুরুন্ডি প্রভৃতি দেশের মানুষ গৃহহীন হয়ে উদ্বাস্তু জীবন যাপন করছে। পরিতাপের বিষয় হলো, আক্রান্ত লোকগুলো প্রায়-সকলেই মুসলিম।

মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার পর পৃথিবীর শরণার্থী মানচিত্রে সবচেয়ে বেশি জায়গা দখল করেছে দক্ষিণ এশিয়া। দক্ষিণ এশিয়ার শরণার্থীরাও ধর্মীয় পরিচয়ে মুসলিম। কাশ্মীর, মায়ানমারের আরাকান, আফগানিস্তানে সংঘাতের কারণে মানুষগুলো ঘর ছেড়ে রিফিউজি হয়েছে।

এশিয়ার চীনেও ব্যাপক মুসলিম নির্যাতনের ফলে অসংখ্য মানুষ শরণার্থী হয়ে স্বদেশ ছেড়ে পালিয়েছে। চীনের কাশগড় অঞ্চলের উরঘুই জাতির মুসলমানরা এই দুর্গতির শিকার।

আরেকটি মুসলিম ধর্মাবলম্বী জাতিসত্তা চরম আক্রমণে দেশছাড়া। মধ্যপ্রাচ্যের কুর্দি জনগোষ্ঠী, যারা ক্রুসেড বিজয়ী সুলতান গাজি সালাউদ্দিন আইয়ুবির বংশধর, তারা দেশ ও ঘরবাড়ি হারিয়ে অধিকারের জন্য লড়ছে। প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে বিজয়ী হয়ে ইউরোপীয় শক্তি কুর্দি জনপদকে ছিন্নভিন্ন করে দেয়। কুর্দিদের দেশকে ভাগ করে দেওয়া হয় তুরস্ক, সিরিয়া, ইরাক ও ইরানে।

অভিযোগ আছে যে, ক্রুসেডে সুলতান গাজি সালাহউদ্দিনের কাছে পরাজিত ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলো প্রতিশোধ নিতে কুর্দি জাতি ও দেশকে তছনছ করে দেওয়া হয় এবং কুর্দিস্তান নামক একদার সমৃদ্ধ দেশকে ছিন্ন-বিছিন্ন ও লড়াকু কুর্দি জাতিকে শরণার্থী উদ্বাস্তুতে পরিণত করা হয়।

বিশ্বের ইতিহাসে বিগত শতবর্ষে এতো শরণার্থী হয় নি। এমন মুসলিম নিধনও আগে চলে নি। বিশ্বের মুসলমানদের শরণার্থী বানিয়ে ঘর ছাড়া করার নির্মমতাও বিশ্ব আগে দেখে নি।

কেন শুধু মুসলমানরাই গৃহহীন উদ্বাস্তু হচ্ছে আর মুসলমান দেশগুলো যুদ্ধ-বিগ্রহের আগুনে জ্বলছে? কেন মুসলিম শিশু ও নারীরা পথে পথে আক্রান্ত হচ্ছে? তাদের রক্তে রঞ্জিত হচ্ছে পৃথিবীর জমিন? কেন হত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতনের স্টিমরোলার চালিয়ে দিয়ে তাদেরকে শরণার্থী বানিয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে রিফিউজি ক্যাম্পের নির্মম জীবনে? বিশ্ব শরণার্থী দিবসে এইসব জ্বলন্ত প্রশ্নই বার বার সামনে চলে আসছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর