দেশের কওমি, আলিয়া, পীর-মাশায়েখসহ সকল ধারার উলামায়ে কেরামের মধ্যে সেতুবন্ধন রচনা করে ঐক্যবদ্ধ প্লাটফরম তৈরি করা হবে। এর মাধ্যমে সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে দেশের আলেম সমাজকে আরও বেশি সম্পৃক্ত করা হবে।
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) রাতে গাউসুল আজম জামে মসজিদ কমপ্লেক্স মিলনায়তনে বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব এডভোকেট শেখ মো. আব্দুল্লাহ এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও উগ্রবাদ বিরোধী জনসচেতনতামূলক কার্যক্রমে দেশের ইমাম-খতিবসহ সমগ্র আলেম সমাজ অত্যন্ত আন্তরিকভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করেছেন। জুমার খুতবা, জুমাপূর্ব বয়ান এবং ওয়াজ মাহফিলে আলোচনার মাধ্যমে দেশের মানুষকে সচেতন করেছেন। এর ফলে জঙ্গিবাদ, উগ্রবাদ ও সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জন করেছে। যা ইতোমধ্যে বিশ্বব্যাপী সুনাম অর্জন করেছে।
শেখ মো. আব্দুল্লাহ বলেন, জনগণকে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক মোটিভেশনের পাশাপাশি ধর্মীয় মোটিভেশনর মাধ্যমে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদকসহ নানাবিধ সামাজিক সমস্যার বিষয়ে আরও জোরালোভাবে সচেতন করতে হবে। এক্ষেত্রে দেশের সর্বস্তরের উলামায়ে কেরাম ও পীর-মাশায়েখদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কোনো বিকল্প নেই।
উলামা-মাশায়েখদের ঐক্যবদ্ধ প্লাটফরম তৈরি করে সরকারের সঙ্গে আরও নিবিড় সম্পর্ক তৈরি করার ওপর গুরাত্বারোপ করে প্রতিমন্ত্রী এ বিষয়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসারও আহবান জানান।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতোমধ্যে কওমি, আলিয়া ও পীর-মাশায়েখসহ সকল ধারার ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ এবং আলেম সমাজের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া পুরণ করেছেন। দেশের বহুসংখ্যক ইবতেদায়ী মাদরাসাসহ অনেক মাদরাসা এমপিওভুক্ত করেছেন। ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন। কওমি মাদরাসার দাওরায়ে হাদিসকে মাস্টার্সের মান দিয়ে বিল পাশ করেছেন। দারুল আরকাম মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করেছেন। মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা প্রকল্পের মাধ্যমে লাখ-লাভ আলেম-উলামার কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন। এছাড়া ইমাম-মুয়াজ্জিন কল্যাণ ট্রাস্টের মূলধন বৃদ্ধির মাধ্যমে ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের কল্যাণে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করেছেন। বাংলাদেশের ইতিহাসে এ বছর প্রথম সরকারিভাবে দেশের সকল ধারার ৫৮ জন শীর্ষস্থানীয় আলেমের সমন্বয়ে হজে উলামা-মাশায়েখ টীম পাঠিয়েছেন।
মতবিনিময় সভায় প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী দেশের সকল ধারার আলেমদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার বিষয়ে অত্যন্ত আন্তরিক। আলেমদের সঙ্গে নিয়েই তিনি উন্নত বাংলাদেশ গঠনের অভিযাত্রায় এগিয়ে যেতে চান।
বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের সভাপতি ও দৈনিক ইনকিলাব সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের মহাসচিব মাওলানা শাব্বির আহমদ মোমতাজি, সহ-সভাপতি ও করুনা মোকামিয়া কামিল মাদরাসা বরগুনার অধ্যক্ষ শাহ মো. মাহমুদুল হাসান ফেরদৌস, যুগ্ম-মহাসচিব ও দারুন্নাজাত সিদ্দিকীয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ আ. খ. ম আবু বকর সিদ্দিক, যুগ্ম-মহাসচিব ও ফরিদগঞ্জ আলীয়া মাদরাসার অধ্যক্ষ ড. মো. মাহবুবুর রহমান, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও মদিনাতুল উলুম কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আবদুর রাজ্জাক, চট্টগ্রাম মহানগর সেক্রেটারী অধ্যক্ষ মাওলানা মো. ইসমাইল, জমিয়াতুল মোদার্রেছীন ময়মনসিংহ বিভাগের সেক্রেটারী অধ্যক্ষ ড. মো. ইদ্রিস খান ও মাওলানা মো. মাহবুবুর রহমান জৈনপুরী ও দৈনিক ইনকিলাবের সহকারী সম্পাদক মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভী প্রমুখ।