ইউরোপের সবচেয়ে বড় মুসলিম গণবিয়ের আয়োজন!

, ইসলাম

ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম | 2023-09-01 00:39:00

ইউরোপে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ বিরল। তবে তুরস্কের পরে ইউরোপে বসনিয়াই একমাত্র দেশ, যেখানে মুসলিমরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা ইউরোপ মহাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব অংশে বলকান উপদ্বীপে অবস্থিত একটি রাষ্ট্র। দীর্ঘ রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বসনিয়া ১৯৯২ সালের মার্চ মাসে স্বাধীনতা লাভ করে।

বসনিয়ার মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪৫ শতাংশ মুসলমান। কমিউনিস্ট শাসনাধীন সাবেক যুগোস্লাভিয়া প্রজাতন্ত্রের অংশ থাকাকালে বসনিয়ায় মুসলিম নারীদের হিজাব ও ধর্মকর্ম নিষিদ্ধ ছিলো।

সেই বসনিয়াতে ইউরোপের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় মুসলিম গণবিয়ের অনুষ্ঠান হয়েছে বৃহস্পতিবার (১৯ জুলাই)। ওই গণবিয়েতে একসঙ্গে ৬০ জোড়া নর-নারী বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।

অনুষ্ঠানটি বসনিয়ার রাজধানী সারাজেভোতে সম্পন্ন হয়।

আয়োজকরা জানিয়েছেন, ‘এটি ইউরোপের সবচেয়ে বড় ইসলামি গণবিয়ের অনুষ্ঠান। এভাবে বিয়ে অনুষ্ঠান আয়োজনের মাধ্যমে আয়োজকরা মুসলিম দাম্পত্য জীবন শুরু ও সহজ করার একটা বার্তা দিতে চেয়েছেন। বসনিয়ার মুসলিম সমাজে একসঙ্গে কয়েকজনের বিয়ের প্রচলন রয়েছে। তবে এবারের গণবিয়ের অনুষ্ঠানটি একটু ব্যতিক্রম ও বড়।

বসনিয়ার মুসলিম সমাজে সামাজিকভাবে বিয়ের প্রচলন বেশ পুরনো সংস্কৃতি। তবে আর্থিক কারণে অনেক অভিভাবক বিয়েযোগ্য মেয়েকে বিয়ে দিতে পারেন না, তদ্রুপ অনেকে আর্থিক কারণে বিয়ে করতে অক্ষম। এমতাবস্থায় পরিবারের সম্মতি ও বিয়েতে ইচ্ছুকদের নিয়ে এমন আয়োজন করা হয়।


গণবিয়ের রেওয়াজ অনুযায়ী, প্রথমে বিয়েযোগ্য বর-কনের তালিকা করা হয়। তালিকায় নিজেরা কিংবা অভিভাবকরা নাম অর্ন্তভুক্ত করেন। পরে সেখান থেকে বর-কনে বাছাইয়ের গুরুদায়িত্ব মা-বাবাকে দেওয়া হয়। বিবাহিতদের কেউ কেউ পূর্ব পরিচিত।

৩১ বছর বয়সী আলামিন কিটুক এই বিয়ের একজন বর। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘প্রত্যেকের জন্যই বিয়ের দিনটি একটি বিশেষ দিন। এতগুলো দম্পতির সঙ্গে বিয়েতে অংশ নিয়ে আমি খুশি। দিনটি আমার জীবনের জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবে।’

গণবিয়ের অনুষ্ঠান আয়োজনে একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠান সহায়তা করে। সংস্থাটি বরদের জন্য স্যুট এবং কনেদের জন্য ফ্যাকাশে রক্তবর্ণের গাউন এবং সাদা রঙের হিজাব সরবরাহ করে। এছাড়া প্রত্যেক দম্পতিকে ৩০০ মার্কিন ডলার নগদ প্রদান করা হয়।

সারাজেভোর ইস্তিকলাল মসজিদের ইমাম রেসুল আলিক এই গণবিয়ে আয়োজনের নেতৃত্ব দেন।

বিয়ের অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, আমাদের এমন আয়োজনের উদ্দেশ্য হচ্ছে, বসনিয়ান যুবক-যুবতীদের পরিবার শুরু করতে উৎসাহিত করা। কেননা অনেকেই বিবাহ অনুষ্ঠান আয়োজনকে অনেক ব্যয়বহুল মনে করেন; যার ফলে অনেকেই সময়মতো বিয়ে করতে পারেন না।

তিনি বলেন, ‘বিয়ে হচ্ছে- মানবজাতির এবং যেকোনো সমাজের একটি ভিত্তি। আমাদের সমাজ ও পরিবার আজকাল অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে এবং অনেক কম লোকই বিয়ে করছে। আমাদের এ অবস্থা থেকে বের হয়ে আসতে হবে।’

মুসলিম রীতি মেনে দেনমোহর নির্ধারণ করে গণবিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়। শেষে উপস্থিত বর-কনে ও উপস্থিত আত্মীয়-স্বজনদের আপ্যায়ন করা হয়।

-রয়টার্স অবলম্বনে

আরও পড়ুন: তাওয়াফের প্রতি কদমে গোনাহ মাফ হয়

এ সম্পর্কিত আরও খবর