করোনায় করণীয় বিষয়ে পাকিস্তানের আলেমদের সম্মিলিত ঘোষণা

ইসলামি খবর, ইসলাম

ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম | 2023-08-27 06:48:21

করোনাভাইরাসের সংক্রমণরোধে দলমত নির্বিশেষে বিভিন্ন মাজহাব, মতবাদের আলেম-উলামাদের সঙ্গে বৈঠক করে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে দেশবাসীকে দিক-নির্দেশনা ও করণীয় সম্পর্কে পরামর্শ দিয়েছেন পাকিস্তার শরিয়া আদালতের সাবেক প্রধান বিচারপতি আল্লামা মুফতি তকি উসমানি।

বুধবার (২৫ মার্চ) করোনাভাইরাস ইস্যুতে মুফতি তকি উসমানির নেতৃত্বে সকল ইসলামি ধারার আলেমরা সম্মিলিতভাবে সংবাদ সম্মেলন করে সম্মিলিত সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন। ওই ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছে-

এক. পুরো জাতি তওবা করবে, সরকারের উদ্যোগে জাতীয়ভাবে তওবা-ইস্তিগফারের ব্যাবস্থা করা এবং মিডিয়ার অশ্লীল সব কর্মসূচী বন্ধ করতে হবে।

দুই. মসজিদসমূহ খোলা থাকবে এবং সেখানে আজান ও জামাত চালু থাকবে।

তিন. মুসল্লিরা অজু ঘরে করবে এবং সুন্নত ও নফল নামাজ ঘরে আদায় করবেন। কেননা চিকিৎসাবিদ্যার আলোকে বলা হচ্ছে, সংস্পর্শের কারণে রোগ সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে।

চার. চিকিৎসাগত কারণে সরকার যদি নামাজিদের সংখ্যার ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, তবে শরয়ি দৃষ্টিকোণে তারা অপারগ অথবা বয়োবৃদ্ধ কাউকে যদি সরকার মসজিদে প্রবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে, তবে সে মাজুর বা অপারগ হওয়ায় ঘরে জামাতসহ নামাজ আদায় করবে। তা কোনো একজন নারী মাহারমকে নিয়ে হলেও। আর না হয় একা একা নামাজ আদায় করবে।

পাঁচ. যারা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কিংবা অন্য রোগব্যাধি ও সর্দি-কাশি দ্বারা আক্রান্ত, যারা পঞ্চাশোর্ধ অথবা কোনো রোগে আক্রান্ত হওয়ায় ভাইরাসের শিকার হওয়ার আশঙ্কাগ্রস্থ; তারা যেন ভাইরাস সংক্রমণকালীন পুরো সময়কাল পর্যন্ত মসজিদে না আসেন। এমতাবস্থায় তারা জামাতে শরিক হওয়ার সওয়াব পাবেন।

ছয়. মসজিদের কার্পেট উঠিয়ে ফেলবে ও মসজিদের ফ্লোর নিয়মিত পরিষ্কার করে রাখবে এবং মসজিদের প্রবেশপথে হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখবে।

করোনায় করণীয় বিষয়ে পাকিস্তানের আলেমদের সম্মিলিত ঘোষণা, ছবি: সংগৃহীত

সাত. জুমার দিন কোনো বয়ান হবে না। কেবল খুতবার আগে পাঁচ মিনিট ভাইরাস সংক্রান্ত সচেতনতামূলক শরয়ি ও চিকিৎসা সম্পর্কীয় আলোচনা হবে। নামাজের পর অতিদ্রুত মসজিদ ত্যাগ করবে।

নয়. যেসব রোগী বা বয়োবৃদ্ধদের সরকার ঘরে নামাজ আদায় করতে বলেছেন, তারা জুমার নামাজের পরিবর্তে জোহরের নামাজ ঘরে আদায় করবে।

দশ. নাবালেগ বাচ্চারা আপাতত মসজিদে আসবে না।

ঘোষণাপত্রে সম্মতি প্রকাশ করেন- মুফতি মোহাম্মদ রফি উসমানি, মাওলানা হানিফ জলন্ধর, কায়েদে জমিয়ত মাওলানা ফজলুর রহমান, মাওলানা আব্দুর রহিম, মাওলানা ডা. আদিল খান, মাওলানা মুফতি আব্দুর রহিম, মাওলানা এমদাদুল্লাহ, মুফতি মুজিবুর রহমান, মাওলানা মো. ইলিয়াস রেজভী, মাওলানা মুফতি মোহাম্মদ নাসিম, মাওলানা মুফতি মহসিন, মাওলানা মশিউর রহমান নূরানি, মাওলানা মুফতি রেজওয়ান নকশবন্দি, মাওলানা মুফতি আবেদ মোবারক আল মাদানি, মাওলানা রায়হান মাজিদি, মাওলানা সাঈদ ইস্কান্দার খান, মাওলানা মো. শাহ আলম, মাওলানা মুফতি মোহাম্মদ, মাওলানা নোমান নাঈম, মাওলানা ইকরাহিম, মাওলানা মুফতি ওসমান, মাওলানা মুফতি যুবায়ের ওসমান, মাওলানা মোহাম্মদ হোসাইন, মাওলানা ইউনুস আলী, মাওলানা মো. কাশেম, মাওলানা মুফতি সাইফুল্লাহ, মাওলানা ইউসুফ, মাওলানা ওবায়দুল্লাহ, মাওলানা আব্দুল করিম, মাওলানা আবদুল ওয়াহিদ, মাওলানা মুফতি আনাস ও মাওলানা মুফতি ইউসুফ কাসেমি।

ওই বৈঠকে পাকিস্তানের বেশ কয়েকজন বিখ্যাত চিকিৎসকও উপস্থিত ছিলেন। তারা হলেন- ডাক্তার আব্দুল বারী খান, ডাক্তার ফয়সাল মাহমুদ ও ডাক্তার হানিফ কামাল।

এ সম্পর্কিত আরও খবর