করোনাভাইরাসের প্রকোপের কারণে এখন মাস্ক পরিধানের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এমনকি অনেকেই মাস্ক পরিধান করে নামাজও আদায় করছেন। অনেক স্থানে ইমাম সাহেবও মাস্ক পরিধান করে ইমামতি করছেন। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে মাস্ক পরে নামাজ আদায় করার বিষয়ে মুফতিদের স্মরণাপন্ন হচ্ছেন।
এমন প্রশ্নের উত্তরে কোরআন-হাদিসের আলোকে মুফতিদের অভিমত হলো- কোনো কারণ ছাড়া নাক-মুখ ইত্যাদি কাপড় দ্বারা ঢেকে নামাজ পড়া মাকরূহ। তবে কোনো সমস্যার কারণে নাক-মুখ ঢাকলে নামাজ মাকরূহ হবে না।
সে হিসেবে বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচার লক্ষে কেউ যদি মাস্ক পরিধান করে নামাজ পড়েন, তাহলে নামাজ মাকরূহ হবে না।
তবে শর্ত হলো- নাক ও কপাল সেজদার জমিনে ঠেকাতে হবে। যদি মাস্কের কারণে নাক ও কপাল জমিনে না ঠেকে, তাহলে নামাজ হবে না।
এ বিষয়ে হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে কোনো ব্যক্তিকে নামাজরত অবস্থায় তার মুখমন্ডল ঢাকতে নিষেধ করেছেন। -সুনানে ইবনে মাজাহ: ৯৬৬
আরেক হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, প্রচণ্ড গরমের মধ্যে আমরা আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে নামাজ আদায় করতাম। আমাদের কেউ মাটিতে তার চেহারা (কপাল) স্থির রাখতে সক্ষম না হলে সে তার কাপড় বিছিয়ে তার ওপর সিজদা করতো। -সহিহ বোখারি: ১২০৮
হজরত ইবনে আববাস (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, আমি সাতটি অঙ্গের দ্বারা সিজদা করার জন্য নির্দেশিত হয়েছি। কপাল দ্বারা এবং তিনি হাত দিয়ে নাকের প্রতি ইশারা করে এর অন্তর্ভুক্ত করেন, আর দু’হাত, দু’হাঁটু এবং দু’পায়ের আঙুলসমূহ দ্বারা। আর আমরা যেন চুল ও কাপড় গুটিয়ে না নেই। -সহিহ বোখারি: ৮১২
হজরত আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাদা-পানির মাঝে সিজদা করলেন। এমনকি আমি তার কপালে ও নাকে কাদার চিহ্ন দেখতে পেলাম। -সহিহ বোখারি: ২০৩৬