কল্যাণ, ক্ষমা ও সৌভাগ্যের মাস রমজান দুয়ারে কড়া নাড়ছে। আর কয়দিন পর নতুন বাঁকা চাঁদ উঠবে রহমতের বার্তা নিয়ে। নতুন করে সাজবে চারদিক। পবিত্র রমজানকে কেন্দ্র করে ঘরে-বাইরে, মসজিদে-মসজিদে মুমিন-মুসলমানরা নানা আয়োজন করে থাকেন। নিজেকে ইবাদত-বন্দেগিতে মশগুল রাখতে প্রাণান্তকর চেষ্টা করেন। সেই কাঙ্খিত রমজানের অপেক্ষায় গোটা মুসলিম বিশ্ব।
বৈশ্বিক মহামারির কারণে এখন পৃথিবীটা বড্ড শান্ত। এমন নিরব সময়ে রোজার আগমনে পৃথিবী আবার সরব হবে তো?
রমজান মাসের সুন্দর দৃশ্যগুলোর অন্যতম হলো- একসঙ্গে ইফতার করা ও তারাবির নামাজ আদায় করা। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে এবার তারাবির জামাত ও একত্রে ইফতার আয়োজন করা সম্ভব হবে না।
এরই মাঝে বুধবার (১৫ এপ্রিল) মসজিদে নববী কর্তৃপক্ষ বৈশ্বিক মহামারি করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে মসজিদে নববীতে ইফতারের যাবতীয় আয়োজনকে স্থগিত ঘোষণা করেছে।
লিখিত নোটিশে ইফতারে আয়োজকদের জানানো হয়, ‘ইফতারের মহান সেবায় আগ্রহীদের কল্যাণমূলক কাজে আগ্রহ ও অভিপ্রায়ের বিষয়টি খুব ভালোভাবেই অনুভব করছি। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে নিজেদের শতভাগ স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি নিশ্চিতকল্পে আমাদের এই বেদনাময় সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে।’
মসজিদে নববীর ইফতার আয়োজনের মোহনীয় দৃশ্য, অভাবনীয় পরিবেশ ও আন্তরিকতার কথা বলে বুঝানো মুশকিল। মসজিদে নববীর পুরো চত্বরে ইফতারের আয়োজন করা হয় আগত মেহমানদের জন্য। রমজানে মদিনার মেজবানদের মেহমানদারির চিত্র ইসলামের শিক্ষা, হাদিসের শিক্ষা।
এক হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত জায়েদ ইবনে খালেদ আল জুহানি (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে ইফতার করাবে সে রোজাদারের সমপরিমাণ সওয়াব পাবে, রোজাদারের সওয়াব থেকে একটুও কমানো হবে না।’ –সুনানে তিরমিজি: ৮০৭
এই হাদিসে আলোকে মদিনাবাসী যেন রাসূলের কাছে ওয়াদাবদ্ধ হয়েছেন, রোজাদারদের ইফতার করানোর সঙ্গে সঙ্গে মেহমানদের খুশি করবেন। ইফতারের আগে নিষ্পাপ শিশু থেকে শুরু করে যুবক ও বৃদ্ধদের ইফতার আয়োজন নিয়ে কর্মচাঞ্চল্য দেখে এটাই মনে হয়। আফসোস! এবার দেখা যাবে না, মদিনার সেই আলোকিত ইফতার আয়োজন।