চাঁদ দেখা সাপেক্ষে সৌদি আরবে রমজান মাস শুরু হতে আর মাত্র তিন দিন বাকি। আসন্ন রমজান মাসকে সামনে রেখে পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে রোজা বিষয়ে সৌদি আরবের শীর্ষ আলেমরা বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন।
রোববার (১৯ এপ্রিল) সৌদি আরবের শীর্ষ আলেমদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠক থেকে এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়।
নির্দেশনায় আল্লাহতায়ালার দিকে প্রত্যাবর্তন, আত্মসমালোচনা ও ইবাদত পালনে দৃঢ় প্রত্যয়ী হয়ে রমজানের প্রস্তুতি গ্রহণ করতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে রমজানকে বরণ করারও আহ্বান জানানো হয়েছে সবাইকে।
শীর্ষ আলেমদের বৈঠকে সবাইকে প্রয়োজনীয় সতর্কতা গ্রহণ ও সুরক্ষামূলক যাবতীয় পদ্ধতি অবলম্বনের নির্দেশনা দিয়ে বলা হয়, ফরজ ও তারাবির নামাজ নিজ নিজ ঘরে আদায়ের পাশপাশি ইফতার ও সেহেরির আয়োজনে সমাগম এড়িয়ে চলতে হবে।
সৌদি আরবের শীর্ষ আলেমদের বৈঠক শেষে লিখিত বিবৃতিতে বলা হয়, নিঃসন্দেহে রমজান এক মহিমান্বিত মাস। রহমত ও বরকতে আবৃত এ মাসের আগমনে মুসলমানরা যারপরনাই আনন্দিত। সহিহ বোখারি ও মুসলিম শরিফে বর্ণিত হয়েছে, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আদম সন্তানের প্রতিটি কাজই তার নিজের জন্য। আর একেকটি আমলের সওয়াব শ’ হতে সাতশ’ গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি করে দেওয়া হয়। আল্লাহতায়ালা বলেন, রোজা একমাত্র আমার জন্য। আমিই তার প্রতিদান দেবো। কেননা সে আমার জন্য তার কামনা, আহার ও পানীয়কে পরিত্যাগ করেছে। রোজাদারের জন্য আনন্দময় মুহূর্ত দুইটি। একটি ইফতারকালীন, অপরটি তার রবের সাক্ষাত লাভের সময়। মেশকের সুঘ্রাণের চেয়েও রোজারের মুখের গন্ধ আল্লাহর কাছে অধিক প্রিয়।’
সবার জানা থাকা চাই, রোজার সওয়াব অন্য সব আমল থেকে যেমন দ্বিগুণ হয়, তেমনি রমজানের রোজার প্রতিদান অন্য সব রোজা থেকে দিগুণ হয়।
শীর্ষ আলেমরা বৈঠক থেকে মিথ্যা, প্রতারণা ও চুরির মতো আল্লাহর নিষিদ্ধ কাজসমূহ হতে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, বর্তমান বিশ্বে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। তাই আমাদেরকে ইবাদত ও সতর্কতা অবলম্বনে আদর্শিকতার পরিচয় দিতে হবে। সবাইকে মনে রাখতে হবে, ইসলামি শরিয়ত ব্যক্তিকে যাবতীয় ক্ষতিকর বিষয়াবলী হতে বেঁচে ইবাদত পালনে উৎসাহিত করেছে।
বৈঠক থেকে সবাইকে অধিক পরিমাণে দানের প্রতি আহ্বান জানানো হয় এবং দান গ্রহণকারী ব্যক্তি দানকারী হতে কথা ও কাজে কোনো ধরণের কষ্ট যেন না পায়, সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে।
সময় বিবেচনায় আরও চারটি গুরুত্বপূর্ণ নিদের্শনা প্রদান করা হয়েছে বৈঠক থেকে।
এক. করোনা হতে বাঁচতে নিজেদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় নিজ অঞ্চলে অবস্থানরত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মেনে চলা।
দুই. নিজের অবস্থানরত এলাকা ও অঞ্চলের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী ফরজ ও তারাবির নামাজ ঘরে আদায় করা।
তিন. যেহেতু এই রোগটি সংক্রমণ জাতীয়, তাই ইফতার ও সেহেরিতে যেকোনো সমাগম এড়িয়ে চলা। নিজের জীবন রক্ষায় ঘরেই ইফতারসহ যাবতীয় কিছু নিজ ঘরে সম্পাদন করা।
চার. সওয়াব প্রত্যাশী সকল সামর্থ্যবান মুসলমানরা ফরজ জাকাত থেকে শুরু করে অন্য সাধারণ খাতে নিজেদের দানের হাতকে প্রসারিত করা, এসব কাজে যেকোনো ধরণের সমাগম ও ভিড় করা হতে বিরত থাকা।
-দৈনিক উকাজ অবলম্বনে