মহামারি করোনার বিস্তার রোধে নিষিদ্ধের আওতায় সব ধরনের জনসমাগম। বাদ যায়নি ধর্মীয় জমায়েতও। সংক্রমণ ঠেকাতে পবিত্র রমজানেও মসজিদগুলো বিরানভূমি। মক্কা-মদিনা থেকে শুরু করে বিশ্বের সব মসজিদের মতো বন্ধ রয়েছে ফিলিস্তিনের আল আকসা মসজিদ। এতে ১৪০০ বছরের ইতিহাসে প্রথমবার মুসল্লিবিহীন রমজান শুরু হলো মুসলিমদের তৃতীয় পবিত্র এ মসজিদটিতে। সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে ফিলিস্তিন নিউজ এজেন্সি ওয়াফা।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ২৩ মার্চ জেরুজালেম ইসলামিক ওয়াকফ কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক মসজিদটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়। অথচ প্রতি বছর রমজান শুরুর পর হাজারো ধর্মপ্রাণ মুসল্লির পদচারণে মুখর থাকত আল আকসা। মাসের শেষের দিকে লাখও ছাড়িয়ে যেত সেই উপস্থিতির সংখ্যা।
কিন্তু এবারের রমজানে সেখানকার চিত্র একেবারেই ভিন্ন। প্রথম রমজান এমনকি প্রথম জুমায় একেবারেই মুসল্লিশূন্য ছিল ইসলামের এই প্রথম কেবলাস্থানটি।
ওয়াকফ কমিটির বরাত দিয়ে ওয়াফা জানায়, আল আকসা বন্ধ ঘোষণার পর থেকে স্থানীয়দের মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। বিভিন্ন সময় অনেককে বিচ্ছিন্নভাবে মসজিদ কম্পাউন্ডের আশপাশে ঘুরতেও দেখা গেছে। কিন্তু কঠোর নিষেধাজ্ঞায় তাদের প্রবেশাধিকাল ছিল না।
রমজানের প্রথম জুমায় নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে কমিটির ৫০ জন সদস্য নামাজে অংশ নেন। স্থানীয়দের ভাষ্য, ‘প্রথম রমজান, প্রথম জুমা। অথচ কোনো মুসল্লি নেই, কোনো মানুষ নেই। আল আকসা বন্ধে আমাদের ওপর ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। এমন সিদ্ধান্ত ১৪শ’ বছরের মধ্যে প্রথমবার নেওয়া হলো। মসজিদের মিনারে প্রতিদিনই আজান শুনতে পাই, অথচ নামাজ পড়া যায় না। এটা খুবই কঠিন। আমাদের সবারই অনেক কষ্ট হচ্ছে। ভাষায় প্রকাশের মতো নয়।’
এদিকে করোনার কারণে বিশ্বের সব মসজিদে নামাজ স্থগিত থাকলেও পবিত্র রমজানে মক্কা-মদিনায় ছোট পরিসরে নামাজ চালু রয়েছে। ইফতারের জমায়েত ও ইতিকাফ না হলেও শর্তসাপেক্ষ ও সংক্ষিপ্তাকারে চলছে পাঞ্জেগানা, জুমা ও তারাবির নামাজ।
সৌদি আরব ছাড়াও সিরিয়া, মিসর, তিউনিসিয়া, জর্ডান ও বাহরাইনসহ বেশির ভাগ আরব দেশে শুক্রবার থেকে রমজান শুরু হয়েছে। পবিত্র এ মাস উপলক্ষে লকডাউন কিছুটা শিথিল করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব ও মিসরসহ আরও কয়েকটি দেশ।
ইন্দোনেশিয়ার বেশ কয়েক জায়গায় লকডাউন ভেঙে তারাবি নামাজ পড়তে দেখা গেছে অনেককেই। তা ছাড়া রমজানে লকডাউন শিথিলের ঘোষণা দিয়েছে পাকিস্তানও।