শুরু হয়েছে পবিত্র মাস রমজান। আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য সমগ্র বিশ্বের মুসলিমরা সিয়াম সাধনা শুরু করেছেন। রোজা পালনের মূল বিষয়গুলো সারা বিশ্বে এক হলেও রমজানকে কেন্দ্র করে একেক দেশের মানুষ মাসটি স্বাগত জানান ও উদযাপন করেন ভিন্নভাবে। রমজান মাস উদযাপনের ক্ষেত্রে প্রত্যেক দেশের রয়েছে নিজস্ব কিছু ঐতিহ্য ও রীতিনীতি।
এগুলো বছরের পর বছর ধরে পালিত হয়ে আসছে। তবে এবছর করোনাভাইরাস মহামারির কারণে সেসব রীতি উদযাপনে কিছু বিধি নিষেধ আরোপিত হয়েছে। ফলে অন্যান্য বারের তুলনায় এবারের রমজান পালনের চিত্র কিছুটা ভিন্ন।
কিন্তু পালন করতে না পারলেও জানার বিষয়ে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। তাই চলুন জেনে নিই রমজান মাস উপলক্ষে বিভিন্ন দেশের কিছু ঐতিহ্যবাহী প্রথা।
ধারাবাহিক এই আয়োজনে আজ থাকছে ইন্দোনেশিয়ার কথা।
রমজান মাস শুরুর আগের দিন ইন্দোনেশিয়ায় মুসলিমরা বিভিন্ন পদ্ধতিতে নিজেদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করেন। মধ্য এবং পূর্ব জাভার বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ নিজেদের শরীর শুদ্ধ করার প্রথা ‘পাডুসান’ পালন করে। পাডুসান অর্থ গোসল করা। জাভানিজ মুসলিমরা ঝর্ণার পানিতে মাথা থেকে পা পর্যন্ত পুরো শরীর ডুবিয়ে রেখে এটি পালন করে।
ইন্দোনেশিয়ার ধর্ম এবং সংস্কৃতিতে পাডুসান হলো- শুদ্ধি প্রথা। জাভার সংস্কৃতিতে ঝর্ণার গভীর আধ্যাত্মিক গুরুত্ব রয়েছে এবং এগুলো পবিত্র মাসের জন্য শুদ্ধতা অনুষ্ঠানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। মনে করা হয় ওয়ালি সঙ্গো এর প্রচলন শুরু করে। ওয়ালি সঙ্গো হলো বিশিষ্ট ধর্মপ্রচারকের দল, যারা জাভাতে প্রথম ইসলাম প্রচার করেছিলেন।
আগে স্থানীয় বয়োজ্যেষ্ঠ ও ধর্মীয় নেতারা পাডুসানের জন্য কোনো পবিত্র ঝর্ণা নির্ধারণ করে দিতেন। কিন্তু এখন অনেকেই নিকটস্থ লেক অথবা সুইমিং পুলে গিয়ে অথবা বাড়িতেই নিজেদের শরীর শুদ্ধির এই প্রথা পালন করেন।
কোভিড-১৯ এর মহামারির কারণে এবার পাডুসান প্রথা পালন নিষেধ করা হয়। তার পরও অনেক স্থানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অনেকে তা পালন করেছেন।
বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মুসলমান বাস করেন ইন্দোনেশিয়ায়। প্রায় ২৭ কোটিরও বেশি জনঅধ্যুষিত এই দেশের ৯০ ভাগই মুসলমান। তবে সরকারিভাবে ইন্দোনেশিয়া কোনো মুসলিম রাষ্ট্র নয়; ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র।
ইন্দোনেশিয়ায় অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে পবিত্র রমজান মাসের সিয়াম সাধনা করা হয়।