১১ জুন ৪২৩ জন শিল্পী সমন্বয়ে সংস্কৃতির পীঠস্থান কলকাতার রবীন্দ্র সদন প্রেক্ষাগৃহে অনুষ্ঠিত হল কৃষ্ণপুর নজরুল চর্চা কেন্দ্রের আয়োজনে নজরুল প্রণাম 'অঞ্জলী লহো মোর', সহযোগিতায় ছিল ভারতীয় বিদ্যাভবন এবং ছায়ানট ( কলকাতা)।
অনুষ্ঠানের শুরুতে কবির 'অঞ্জলি লহো মোর' সঙ্গীতে - এই গানটি সহযোগে নৃত্যায়নে কবির প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেন শিলিগুড়ি থেকে আগত শিল্পী অদিতি দাস ঘোষ। তারপরেই সঞ্চালক শৌভিক শাসমল অনুষ্ঠানটির মালা গাঁথতে শুরু করেন।
এই অনুষ্ঠানটির পরিকল্পনা এবং পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন কৃষ্ণপুর নজরুল চর্চা কেন্দ্রের সভাপতি সোমঋতা মল্লিক, তাঁর প্রারম্ভিক বক্তব্যে অনুষ্ঠানটির বিভিন্ন দিক সম্পর্কে তুলে ধরেন। সদ্য প্রয়াত কবির কনিষ্ঠ পুত্রবধূ কল্যানী কাজীর স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
সোমঋতা মল্লিকের পরিচালনায় কৃষ্ণপুর নজরুল চর্চা কেন্দ্রের ৩০ জন শিল্পী শোনালেন নজরুলের তিনটি দেশাত্মবোধক গান। এরপর একের পর এক আমন্ত্রিত সংস্থা তাঁদের নিবেদনের মধ্য দিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানান কবিকে। বলাকা সংস্কৃতি অঙ্গন থেকে অর্ধশত শিশু-কিশোরের কণ্ঠে পরিবেশিত হয় শতবর্ষে পদার্পিত কবিতা 'আজ সৃষ্টি সুখের উল্লাসে'।
ছায়ানট (কলকাতা) থেকে 'হৃদয়ে রবীন্দ্রনাথ ও চেতনায় নজরুল' শীর্ষক একটি অ্যালবাম প্রকাশিত হয় এইদিন। উদ্বোধন করেন পুবের কলম পত্রিকার সম্পাদক আহমেদ হাসান ইমরান, রবীন্দ্রতীর্থ এবং নজরুলতীর্থের প্রাক্তন কিউরেটর অনুপ মতিলাল, আল-আমীন মিশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ননী গোপাল চৌধুরী এবং বাচিকশিল্পী মধুমিতা বসু। সময়ের নিরিখে এই অ্যালবাম আজও কতখানি প্রাসঙ্গিক তা ফুটে ওঠে বিশিষ্ট অতিথিদের বক্তব্যে।
নজরুল চর্চায় যুক্ত থাকার স্বীকৃতি হিসেবে ছয়জনকে সংস্থার পক্ষ থেকে সম্মানিত করা হয়। কৃষ্ণপুর নজরুল চর্চা কেন্দ্রের শিশু শিল্পীদের পরিবেশনা ছিল চমৎকার। ছায়ানট (কলকাতা) -এর শিল্পীরা শোনালেন কবির জাগরণ মূলক দুটি গান। সে গান আলোড়ন তুলেছিল উপস্থিত দর্শকমন্ডলীর মনে।
সবশেষে কল্যাণী কাজীর কণ্ঠে ধারণকৃত 'মোরা একই বৃন্তে দুটি কুসুম হিন্দু - মুসলমান' - এই গানটির সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করে বলাকা সংস্কৃতি অঙ্গনের শিশু শিল্পীরা। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দর্শক আসন ছিল পূর্ণ।
পরিচালক সোমঋতা মল্লিক কতখানি দক্ষতার সঙ্গে এই অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেছেন তা আলাদা করে বলার অপেক্ষা রাখে না । নজরুল চেতনার প্রচার এবং প্রসারে এই উদ্যোগ সবসময়ই প্রশংসার দাবি রাখে।