বাংলাদেশি রোগীতে ভিড়াক্রান্ত কলকাতা, মান নিয়ে প্রশ্ন!

, কলকাতা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-31 15:28:42

মুকুন্দপুর (কলকাতা) থেকে: মাছের বাজারের মতো ভিড়, গিজগিজ করছে চারপাশ। হাসপাতাল, হোটেল, রোগী, পরিজন, দালালের মচ্ছবে নরক গুলজার অবস্থা মুকুন্দপুরের।

'মূল কলকাতার দক্ষিণ-পূর্বের মুকুন্দপুরের চেহারা দিনে দিনে বদলে যাচ্ছে। হাসপাতাল, ক্লিনিকের মাশরুম গ্রোথ হয়েছে। ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা প্রতিষ্ঠানের মান ও গুণ কতটুকু রক্ষা করা হচ্ছে, তা নিয়ে খোদ কলকাতাবাসীদেরই সংশয় রয়েছে,' বললেন স্থানীয় বাসিন্দা অজয় চ্যাটার্জি।

দমদমের নেতাজি সুভাষ বসু আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে ইস্টার্ন বাই পাস ধরে নিউটাউন, সল্টলেক, রুবি মোড় হয়ে মুকুন্দপুর আসতে রাজ্য সরকারের ভলভো এসি বাসের সহযাত্রী ছিলেন অজয় বাবু। আরও বললেন, 'কলকাতার লোকই এখন এখানে চিকিৎসা করায় না। সম্ভব হলে চলে যায় দক্ষিণে।'

এক সাথে মুকুন্দপুর স্টপে নেমে দেখলাম অজয় বাবুর কথা ঠিক। থাকার জায়গাগুলো দালালে ভরা। দামের ঠিক-ঠিকানা নেই। খাওয়ার হোটেলগুলোতে দস্তুরমত গলা কাটা দাম। হাসপাতালগুলোতে আন্তর্জাতিক মার্কেটিং এক্সিকিউটিভ নামে অসংখ্য তরুণ ছেলেমেয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে, যারা আসলে রোগী ধরে কমিশন পায়। দালালির চমৎকার প্রাতিষ্ঠানিক রূপ বলা যেতে পারে ব্যবস্থাটিকে!

'বাঙালি যেখানে আছে, সেখানে মানের অধঃপতন হবেই', বললেন খুলনা থেকে আসা তারেক মাহমুদ। তার খেদ, 'যত পারছে টেস্ট করিয়ে টাকা কামানোর ধান্ধা শুরু হয়েছে।'

তারপরেও মানুষ এখানে কেন আসছে? প্রশ্ন করেছিলাম কয়েকজনকে। তাদের বক্তব্য হলো, 'নিরুপায় হয়ে এসেছি। ভালো ব্যবহার, ভালো সার্ভিস পেলে দেশ ছেড়ে কখনোই বাইরে আসতো না মানুষ।'

বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে খেতে বসে পাশে পেলাম বাংলাদেশের অনেককেই। রাতে খুলনা বা চট্টগ্রাম বা ফরিদপুর, ময়মনসিংহে ডিনার করে গাড়িতে চেপে ঢাকায় নাস্তা সেরে কলকাতায় দুপুরের খাবার খাচ্ছেন অনেকেই।

বিশ্বায়নের যুগের দ্রুততা কত কিছুই সম্ভব করেছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নতি তাক লাগানো অগ্রগতি নিয়ে সামনে এসে গেছে। ব্যতিক্রম হয়ে আছে বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা। সকল গতির বিপরীতে থমকে আছে এ খাত, যা ফেরাতে পারছে না চিকিৎসার্থে মানুষের অবিরাম বিদেশ যাত্রা। বন্ধ করতে পারছে না কোটি কোটি টাকার খরচ বাইরে চলে যাওয়ার ধারা।

এ সম্পর্কিত আরও খবর