রিয়েলিটি শোয়ে ডাক পেলেন লতাকণ্ঠি ভবঘুরে রানু

, কলকাতা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, কলকাতা | 2023-09-01 02:43:26

সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর গানের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর রাতারাতি বিখ্যাত উঠেছেন পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার রানাঘাটের বেগোপাড়ার লতাকণ্ঠি রানু মণ্ডল। প্রায় এক কোটি মানুষ ইতিমধ্যে ভবঘুরে এই মহিলার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখে ফেলেছেন।

শুধু তাই নয়, সুরেলা কণ্ঠের জন্য তিনি বাংলাদেশ, মুম্বাই, কেরালা, কলকাতাসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে টিভি শো ও রেকর্ডিংয়ের জন্য ডাক পেয়েছেন। তালিম না নিয়েও ৫৪ বছর বয়সী এই মহিলা এখন কার্যত সেলিব্রিটি।

খবরে প্রকাশিত অনুযায়ী, রানাঘাট স্টেশনে গত ২০ জুলাই তাঁর গানের ভিডিও মোবাইলে তুলে সোশ্যাল মিডিয়া আপলোড করেছিলেন অতীন্দ্র চক্রবর্তী নামে স্থানীয় এক যুবক।

অতীন্দ্র বলেন, 'এরকম ভবঘুরের গলায় এত প্রতিভা আছে সেটা তাঁর গান না শুনলে সত্যি বিশ্বাস করা যায় না। আমি তাঁর গান শোনার পরই মোবাইলের মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করি। আপলোড করার পর থেকেই ঝড়ের বেগে তাঁর ভিউয়ার বেড়েছে। শেয়ার, কমেন্ট ও লাইক হয়েছে হু হু করে বাড়ছে। এমনকি নামজাদা মানুষরা তাঁর ভিডিও দেখে প্রশংসা করেছেন।'

এরপরই মুম্বাইয়ের একটি রিয়েলিটি শো থেকে তাঁর ডাকে আসে। সেখান থেকে প্লেনের টিকিট কেটে তাঁকে নিয়ে যাওয়ার কথাও বলা হয়েছে। এছাড়া, বাংলাদেশ, কেরালা ও কলকাতার একাধিক জায়গা থেকে রেকর্ডিংয়ের অফারও পেয়েছেন রানু। তবে তাঁর কোনো পরিচয়পত্র না থাকায় তাঁকে নিয়ে যাওয়া সমস্যা হচ্ছে।

রানু মণ্ডল বলেন, 'আপনাদের সকলের ভালোবাসা পেয়ে খুব ভালো লাগছে। মুম্বাইয়ে লতাজির সঙ্গে দেখা হলে প্রথমেই তাঁকে নমস্কার করর। তাঁর গলাকে ছোটবেলা থেকে ভালোবেসেছি, সেই কথা জানাব।'

রানাঘাটের বেগোপাড়ার ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে জীর্ণ এক বাড়িতে কোনো রকমে থাকেন রানুদেবী। এটি তাঁর মাসি শান্তা বিশ্বাসের বাড়ি। তিনি কলকাতায় থাকেন। মাঝে মধ্যে এসে রানুকে দেখে যান ও কিছু টাকা পয়সা দিয়ে যান। রানু মণ্ডলের জন্ম ১৯৬৫ সালে কৃষ্ণনগরের রমন কার্তিকপাড়ার কলোনিপাড়া এলাকায়। তাঁর বাবা আদিত্যকুমার রায়ের ছোট ব্যবসা ছিল। মুম্বাইয়ে বাবুল মণ্ডল নামে এক রাঁধুনির সঙ্গে রানুদেবীর বিয়ে হয়। স্বামী মারা যাওয়ার পর রানুদেবী মুম্বাই থেকে রানাঘাটে ফিরে আসেন। তাঁর ছেলে অমিত মণ্ডল ও মেয়ে সাথী মণ্ডল মুম্বাইয়ে থাকেন। তিনি খ্রিস্টান ধর্মে দীক্ষিত।

ছোটবেলা থেকে হারমোনিয়াম নিয়ে গান শেখা হয়নি রানুর। রেডিও ও টিভিতে গান শুনেই তাঁর গান শেখা। বেশিরভাগ সময় রেলস্টেশনে বসেই গাইতেন। গান শুনে যে যা সাহায্য করতেন তা দিয়েই তাঁর জীবন কোনো রকমে চলে যেত। ইচ্ছে হলে বাড়ি ফিরতেন, না হলে স্টেশনেই রাত কাটিয়ে দিতেন। তবে তাঁর গান ভাইরাল হওয়ার পর এখন তিনি বিখ্যাত হয়ে উঠেছেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর