কুষ্টিয়ার আলোচিত ট্রিপল মার্ডার মামলায় অভিযুক্ত এএসআই সৌমেন কুমার রায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
সোমবার (১৪ জুন) দুপুর ১টা ১০ মিনিটের দিকে তাকে বিচারক মো. রেজাউল করিমের আদালতে হাজির করা হলে তিনি এই জবানবন্দি দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে আদালত পুলিশের পরিদর্শক সঞ্জয় রায় বলেন, বিজ্ঞ অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল স্যারের খাস কামরায় দীর্ঘ আড়াই ঘণ্টা ধরে মডেল থানার ট্রিপল মার্ডার মামলায় গ্রেফতার আসামি সৌমেন রায় হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে।
আসামি সৌমেনের জবানবন্দি রেকর্ড শেষে তাকে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এর আগে নিহত আসমার মা কুমারখালী উপজেলার নাথুরিয়া গ্রামের আমির আলীর স্ত্রী হাসিনা খাতুন বাদি হয়ে কন্যা ও নাতি হত্যার অভিযোগে কুষ্টিয়া মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন।
এদিকে সোমবার (১৪ জুন) সকালে এএসআই সৌমের গুলিতে নিহত তিন জনের মরদেহের জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন হয়েছে নিহতদের নিজ গ্রামের কবরস্থানে।
নিহত আসমা খাতুন এএসআই সৌমেন রায়ের বিধিসম্মত বৈবাহিক স্ত্রী কিনা সে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানান মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নিশিকান্ত সরকার।
তিনি বলেন, আসমার পরিবার ও সৌমেনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে সৌমেন রায় আসমা খাতুনের ৩য় স্বামী, আসমার সাথে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত শিশু রবিন আসমার আগের স্বামীর সন্তান।
অন্যদিকে সৌমেন রায়ের বাড়িতে রয়েছে বিবাহিত স্ত্রী ও সন্তান। এই সব ঘটনাগুলোর মধ্যে কার সাথে কি ধরনের সম্পর্ক এবং টানাপোড়েনই বা কিভাবে সৃষ্টি হয়েছে ? যার কারণে এই হত্যাকাণ্ড এর সবকিছুই বিবেচনায় নিয়ে আমরা তদন্ত শুরু করেছি। এছাড়া অন ডিউটি বা দাপ্তরিক অনুমোদন ছাড়া একজন পুলিশ সদস্য সরকারি অস্ত্র নিয়ে খুলনা থেকে কুষ্টিয়াতে এসে কিভাবে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে ? সে বিষয়ে কার কতটুকু দায় বা অবহেলা ছিলো তার সবকিছু খুঁটিনাটি বিশ্লেষণসহ তদন্ত করতে কুষ্টিয়া ও খুলনা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন কুষ্টিয়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুস্তাফিজুর রহমান।
আগামী ৩ কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে তদন্ত শেষ করে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, রোববার(১৩ জুন) সকালে কুষ্টিয়া শহরের কাস্টম মোড়ে প্রকাশ্যে দাবিকৃত নিজের স্ত্রী ও শিশুসহ তিনজনকে গুলি করে হত্যা করেন খুলনার ফুলতলা থানায় কর্মরত পুলিশের এএসআই সৌমেন রায়। ওই ঘটনায় নিহতরা হলেন- কুমারখালী উপজেলার সাওতাগ্রামের বাসিন্দা মেজবার খানের ছেলে বিকাশ কর্মী শাকিল খান, নাতুরিয়া বাশগ্রামের বাসিন্দা আমির আলীর কন্যা আসমা খাতুন এবং নিহত আসমার শিশু রবিন(৭)।