ফোনালাপ মিডিয়া যেভাবে প্রচার করে, তা ঠিক নয়: হাইকোর্ট

, আইন-আদালত

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-25 16:37:51

ফোনালাপ মিডিয়া যেভাবে প্রচার করে, তা ঠিক নয়। সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) ফোনে আড়িপাতা প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের ওপর শুনানির সময় আদালত এসব কথা বলেন।

১৯ সেপ্টেম্বর ওই রিটের ওপর আদেশের জন্য দিন ধার্য করেছেন বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ।

আদালত বলেছেন, ব্যক্তিগত বিষয়গুলোতে আড়িপাতা যেমন ঠিক না, তেমনি মিডিয়া সগৌরবে যেভাবে প্রচার করে এটাও কিন্তু ঠিক না। এজন্য সাংবাদিক, বিটিআরসিসহ সকলেরই সজাগ থাকা দরকার। আদালত বলেন, এই ফোনালাপের কথোপকথন মিডিয়ায় প্রকাশের পর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত করে। কিন্তু এই ফোনালাপ কারা রেকর্ড করে? দুই পক্ষের মধ্যে যেকোনো এক পক্ষ করে থাকতে পারে, তৃতীয়পক্ষও করতে পারে। তৃতীয় পক্ষের কি লাভ, আমার মনে হয় বিটিআরসিকে এটা দেখা দরকার।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।

শুনানিতে আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন, টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইনের ৩০(চ) ধারা অনুযায়ী টেলিযোগাযোগের একান্ততা রক্ষা নিশ্চিত করা বিটিআরসির দায়িত্ব। কিন্তু লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, এই ধরনের ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনা অহরহ ঘটছে। অথচ সংবিধান ও প্রচলিত আইন অনুযায়ী কমিশন তার দায়িত্ব পালন করছে না। তিনি বলেন, সরকার প্রধান থেকে শুরু করে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির ফোনালাপ ফাঁস হয়েছে। এভাবে যদি চলতে থাকে তাহলে আমি, আপনারা বা অ্যাটর্নি জেনারেল কেউ নিরাপদ নই। কখন কার ফোনালাপ কিভাবে ফাঁস হবে কেউ জানি না। স্বামী-স্ত্রী ফোনালাপ ফাঁস হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এটা প্রতিরোধে বিটিআরসির কোন ভূমিকা দেখা যাচ্ছে না।

জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন বলেন, যারা রিট আবেদনকারী হিসেবে রয়েছেন তাদের কারোর ক্ষেত্রেই ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনা ঘটেনি। ফলে তারা কিভাবে সংক্ষুদ্ধ হলেন? যেসব ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনা এখানে যুক্ত করা হয়েছে তারা চাইলে বিটিআরসিতে আবেদন করে প্রতিকার চাইতে পারেন। এছাড়া নিম্ন আদালতে দেওয়ানি মামলা করারও সুযোগ আইনে রাখা হয়েছে। অতএব এই রিট চলতে পারে না। খারিজযোগ্য। তিনি বলেন, যখন দুইজন ব্যক্তির মধ্যে ফোনালাপ হয় তখন এদের যে কেউ একজন সেটা রেকর্ড করে ফাঁস করতে পারেন। এখানে বিটিআরসির কি করার আছে? সেক্ষেত্রে সংক্ষুদ্ধ ব্যক্তি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনেও মামলা করতে পারেন। অর্থাৎ ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তির প্রতিকার চাওয়ার সুযোগ আইনে রয়েছে।

এ পর্যায়ে আদালত বলেন, এই ফোনালাপ ফাঁস প্রতিরোধ করা সম্ভব কিনা? শিশির মনির বলেন, সম্ভব। ডিজিটালি সারাবিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশও পিছিয়ে নাই। আমরা লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু জবাব না পেয়ে রিট করেছি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর