মাশরাফির নির্বাচনে অংশগ্রহণে আইনি বাধা নেই

, আইন-আদালত

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-28 04:32:35

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে জাতীয় ক্রিকেট দলের ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার আইনি কোনো বাধা নেই। জাতীয় ক্রিকেট দলের সদস্য হিসেবে সুবিধাদি পেলেও সেটি আইন অনুযায়ী লাভজনক পদ হিসেবে বিবেচিত না হওয়ায় তার মনোনয়ন বৈধ হতে বাধা নেই। সংবিধানে এ সংক্রান্ত ধারা উল্লেখ করে প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান খান এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, জাতীয় ক্রিকেট দলের একজন সদস্য হলেও মাশরাফির কোনো অফিসিয়াল সুবিধা ভোগ করেন না। তিনি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) হতে ভাতাদি পেয়ে থাকেন। বিসিবি আবার সুবিধাদি গ্রহণ করে আন্তজার্তিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) থেকে। প্রজাতন্ত্রের বা কোন সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষের কাছে দায়বদ্ধ নয় বিসিবি। এটি আইসিসির কাছে দায়বদ্ধ।

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ১২ অনুচ্ছেদের প্রার্থীর অযোগ্যতায় বলা হয়েছে- (গ) প্রজাতন্ত্রের বা কোন সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষের কোন লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত থাকলে তিনি প্রার্থী হতে পরবেন না। উল্লেখ্য যে “লাভজনক পদ” (office of profit)) অর্থ প্রজাতন্ত্র কিংবা সরকারি সংবিধিবদ্ধ কর্তৃপক্ষ কিংবা সরকারের ৫০ শতাংশ এর অধিক অংশীদারিত্ব সম্পন্ন কোম্পানিতে সার্বক্ষণিকভাবে নিয়োজিত কোন পদ বা অবস্থান।

জানা যায়, সিটি করপোরেশনের মেয়র, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এমপি প্রার্থী হতে চাইলে তাদের পদ ছেড়ে নির্বাচন করতে হবে। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ এই জনপ্রতিনিধিরা স্বপদে থেকে সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। শিগগির এ সংক্রান্ত বিশেষ পরিপত্র জারি করে ইসি। এরপর নানা মহলে প্রশ্ন দেখা দেয়, মাশরাফি বিন মর্তুজার পদতি লাভজনক কীনা।

এর আগে সোমবার এ বিষয়ে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, “সাংবিধানিক পদে থাকলে এবং সংবিধান ও অন্যান্য আইনের ধারায় লাভজনক পদে থাকলে সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে তাদের পদত্যাগ করতে হবে। স্থানীয় সরকারের প্রতিষ্ঠানের কোন পদ ‘লাভজনক’ সে বিষয়টি স্পষ্ট করেননি তিনি।

এদিকে স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধি ও চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্তদের প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। একাদশ সংসদ নির্বাচনের সব রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কাছে ‘সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা-অযোগ্যতার বিধান’ সংক্রান্ত এ নির্দেশনা পাঠানো হয়।

রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, ১৩ নভেম্বর রিটার্নিং অফিসারদের ব্রিফিংয়ে কয়েকজন রিটার্নিং অফিসার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র এবং বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার নির্দেশনা দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে। এ প্রেক্ষিতে ইসির ৪০ তম সভায় আলোচনা করে ইসি সিদ্ধান্ত দিয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়, মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের সময় লাভজনক ও সংবিধিবদ্ধ সংস্থার বিষয়ে সংবিধান ও দণ্ডবিধির ২১ ধারাসহ আইনের অন্যান্য ধারা পরীক্ষা করে রিটার্নিং অফিসাররা সিদ্ধান্ত দেবেন।

শনিবার বিকেলে অনুষ্ঠিত ৪০তম কমিশন সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। ১৯ নভেম্বর বিএনপির পক্ষ থেকেও প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে এ সংক্রান্ত বিষয়ে নির্দেশনা জারির অনুরোধ করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে নির্দেশনা জারির অনুরোধও করেন তিনি। এজন্য বিষয়টি নিয়ে তাই আলোচনা করে কমিশন।

জানা যায়, সিটি করপোরেশনের মেয়র পদটি লাভজনক বিবেচিত হওয়ায় ইতোমধ্যে তাদের পদত্যাগ করে ভোটে অংশ নিতে হয়। কিন্তু অন্য পদগুলো লাভজনক বিবেচিত হত না এতদিন। সম্প্রতি আদালতের পর্যবেক্ষনে ওইসব পদকেও লাভজনক বলা হয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর