মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলায় জেলা স্পেশাল ব্রাঞ্চের (এসবি) দুই পুলিশ সদস্যকে হত্যা মামলায় সর্বহারা ডাকাত দলের ২০ সদস্যকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি ট্রাইব্যুনাল।
বুধবার (১২ ডিসেম্বর) ঢাকার ৩ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মনির কামাল এ রায় ঘোষণা করেন। যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় ৫ জনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।
রায় শোনার জন্য কারাগারে আটক দিপু ওরফে টিপু বিশ্বাসকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। জামিনে থাকা ১১ আসামি আদালতে হাজির ছিলেন।
হত্যাকাণ্ডের ১৩ বছর পর এ রায় ঘোষণা করা হলো। ২০০৫ সালের ৩ এপ্রিল কর্মরত অবস্থায় তারা খুন হন।
নিহত দুই পুলিশ সদস্য হলেন, আবুল হাসনাইন আজম খান ও কামরুল আলম খান ঠাকুর। তারা মাদারীপুর জেলায় ডিএসবির ডিআইও এবং প্রধান সহকারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- জসিম শেখ (পলাতক), মাছিম শেখ (পলাতক), মজনু মাতুব্বর (পলাতক), উজ্জ্বল হাওলাদার (পলাতক), জাফর মাতুব্বর (পলাতক), কুব্বাস মাতুব্বর (পলাতক), দবির মোল্লা, দাদন ফকির ওরফে দাদন টেইলার (পলাতক), আমির হোসেন শেখ (পলাতক), ফয়েজ শেখ (পলাতক), দিপু ওরফে টিপু বিশ্বাস, মোশারফ শেখ, আশ্রাব শরীফ, হালিম আকন (পলাতক), মিরাজ শিকদার, বজলু আকন, আজাদ মোল্লা, হেমায়েত মোল্লা ওরফে মুন্সি মোল্লা (পলাতক), শওকত মোল্লা ওরফে সাগু মেম্বার ও সুমন বাঘা (পলাতক)।
২০০৫ সালের ৩ এপ্রিল নিহতরা মোটরসাইকেল যোগে রাজৈর উপজেলার শাখার পাড় যাওয়ার পর আসামিরা তাদের পথরোধ করেন। ওই সময় নিহতরা তাদের পরিচয় দিলে আসামিরা তাদের ট্রলারে উঠিয়ে হত্যা করে। এরপর তাদের লাশ টুকরো টুকরো করে ট্রলার থেকে নদীতে ছিটাতে ছিটাতে চলে যায়। তাদের ব্যবহৃত মোটর সাইকেলটিও নদীতে ফেলে দেওয়া হয়।
২০০৭ সালের ৬ আগস্ট মাদারীপুরের রাজৈর থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একরাম আলী মোল্লা আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
মামলার মোট আসামি ৩২ জন। তাদের মধ্যে চারজন ‘বন্দুকযুদ্ধে’ এবং দুজন বিচারকালে মারা যান।
তারা হলেন, আব্দুল আজিজ, ছায়েদ মাতুব্বর, ছাত্তার তালুকদার, আবুল কাশেম মোল্লা, সুমন ওরফে শামিম ও নজরুল ওরফে নুরুল ইসলাম।
বাকি ২৬ আসামির মধ্যে ১৩ জন পলাতক, ১২ জন জামিনে এবং দিপু ওরফে টিপু বিশ্বাস কারাগারে আটক আছেন।