নাইকো মামলার পরবর্তী শুনানি ১৩ জানুয়ারি

, আইন-আদালত

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-28 09:37:13

পূর্ব ছাতক গ্যাসক্ষেত্র অনিয়মের মাধ্যমে কানাডার কোম্পানি নাইকোর হাতে তুলে দেওয়া সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলার পরবর্তী চার্জ শুনানির জন্য আগামী ১৩ জানুয়ারি দিন ধার্য করেছেন আদালত।

কানাডিয়ান পুলিশ ও এফবিআইয়ের তদন্ত প্রতিবেদন আদালতের নথিতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে মামলায় চার্জ গঠিত না হওয়ায় এ পর্যায়ে  এফবিআইয়ের সাক্ষ্য গ্রহণের আবেদন নাকচ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩ জানুয়ারি) ঢাকার বিশেষ জজ-৯ এর বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান এসব আদেশ দেন।

এদিন আসামি সেলিম ভুইয়ার চার্জ শুনানি শেষ হয়। মওদুদ আহমেদের পক্ষে আংশিক চার্জ শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।

খালেদা জিয়ার পক্ষে তার আইনজীবী আব্দুর রেজ্জাক খান ও মাসুদ আহমেদ তালুকদারসহ কয়েক জন আইনজীবী আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে খালেদা জিয়া আদালতে আসেন। তার পরনে সাদা শাড়ি ও বেগুনি রংয়ের ওড়না ছিল। সোয়া ১২টায় আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়।

আদালতে উপস্থিতি হয়ে খালেদা জিয়া বলেন, 'এ রকম জায়গায় মামলা চলতে পারে না। আমার আইনজীবীরা আদালতে আসতে পারেন না। আদালতে তাদের বসার জায়গা নেই। তারপরও এ কোর্ট চলতে থাকলে আমি আর এ আদালতে আসবো না।'

আদালত বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দেন।

ইতোপূর্বে কয়েক আসামির চার্জ শুনানি হলেও বিচারক নতুন আসায় নতুন করে দুদকের পক্ষে ও আসামিদের পক্ষে চার্জ শুনানির প্রয়োজনীয়তা  দেখা দেয়।

মামলার শুরুতেই দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের প্রস্তাব করেন। এরপর আসামিদের পক্ষে চার্জ শুনানি শুরু হয়।

গত ২২ নভেম্বর এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম এফবিআইয়ের প্রতিবেদন দাখিল ও তাদের সাক্ষ্য গ্রহণের আবেদন করেছিলেন।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন- সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ও সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, ঢাকা ক্লাবের সাবেক সভাপতি সেলিম ভূঁইয়া ও ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন।

পলাতক অন্য তিন আসামি হলেন- সাবেক মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, বাপেক্সের সাবেক মহা-ব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক ও নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।

২০১৮ সালের ৫ মে এই মামলায় অভিযুক্ত আরেক আসামি সাবেক সচিব শফিউর রহমান মারা যান।

গত বছরের ২০ নভেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর মোশাররফ হোসেন কাজল বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ মামলার ১১ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আবেদন জানান।

কানাডার কোম্পানি নাইকোর সঙ্গে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতিসাধন ও দুর্নীতির অভিযোগে খালেদা জিয়াসহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে দুদকের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তেজগাঁও থানায় মামলাটি করেন।

২০০৮ সালের ৫ মে এ মামলায় খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) জমা দেন দুদকের সহকারী পরিচালক এস এম সাহেদুর রহমান।

অভিযোগপত্রে প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার রাষ্ট্রীয় ক্ষতির অভিযোগ আনা হয়।

নাইকো ছাড়াও গ্যাটকো ও বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তা বাতিলের আবেদন জানিয়ে পৃথক রিট করেছিলেন খালেদা জিয়া। এসব রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দুর্নীতি মামলাগুলোর কার্যক্রম স্থগিত ও রুল জারি করেন হাইকোর্ট।

কয়েক বছর ধরে স্থগিত থাকার পর মামলাগুলো সচলের উদ্যোগ নিয়ে রুল নিষ্পত্তির আবেদন জানায় দুদক। পরে গত বছর পৃথক পৃথক শুনানি শেষে মামলা তিনটি সচলের রায় দেন হাইকোর্ট।

এ সম্পর্কিত আরও খবর