দুর্নীতির মামলায় উচ্চ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার দায়ের করা আপিল (লিভ টু আপিল) আবেদনের উপর শুনানির জন্য রোববার (১৩ জানুয়ারি) দিন ধার্য্য করেছেন সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার আদালত।
মঙ্গলবার (৮ জানুয়ারি) চেম্বার বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য দিন ধার্য্য করে আদেশ দেন।
আদালতে নাজমুল হুদার আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাডভোকেট সিগমা হুদা। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।
পরে খুরশিদ আলম খান সাংবাদিকদের বলেন, হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে নাজমুল হুদা লিভ টু আপিল দায়ের করেছেন। একইসঙ্গে জামিন আবেদনও করেছেন। আদালতের ধার্য্য দিনে এসব বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
২০০৭ সালের ২১ মার্চ দুদকের উপপরিচালক মো. শরিফুল ইসলাম রাজধানীর ধানমণ্ডি থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলার অভিযোগে বলা হয়, সিগমা হুদার মালিকানাধীন সাপ্তাহিক পত্রিকা ‘খবরের অন্তরালে’র ব্যাংকের হিসাবে রোডস অ্যান্ড হাইওয়ের কন্ট্রাক্টার মীর জাহের হোসেনের কাছ থেকে ২ কোটি ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নেন নাজমুল হুদা। একই বছরের ২৭ আগস্ট বিচার শেষে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত নাজমুল হুদাকে ৭ বছরের কারাদণ্ড ও আড়াই কোটি টাকা জরিমানা এবং তার স্ত্রী সিগমা হুদাকে ৩ বছরের কারাদণ্ডের রায় দেন।
বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে ২০১১ সালের ২০ মার্চ এই দম্পতিকে ওই সাজার রায় থেকে খালাস দেন হাইকোর্ট। কিন্তু হাইকোর্টের সে রায়ের বিরুদ্ধে দুদক আপিল করলে ২০১৪ সালের ১ ডিসেম্বর খালাসের রায় বাতিল করে হাইকোর্টে মামলাটির পুনঃশুনানির নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ।
এরপর হাইকোর্টে মামলাটির পুনঃশুনানি অনুষ্ঠিত হয়। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের আদেশে পুনঃশুনানির পর ২০১৭ সালের ৮ নভেম্বর বিচারপতি ভবানী প্রসাদ সিংহ ও বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
রায়ে নাজমুল হুদার সাজা কমিয়ে চার বছর কারাদণ্ড দেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি একইরকম মামলায় তিন বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত তার স্ত্রী সিগমা হুদার কারাগারে থাকাকালীন সময়কে সাজা হিসেবে গণ্য করার নির্দেশ দেন আদালত।
রায়ে বলা হয়, হাইকোর্টের এই রায় বিচারিক আদালত যেদিন গ্রহণ করবেন, সেদিন থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে নাজমুল হুদাকে আত্মসমর্পণের করতে হবে।
পরে গত বছরের ১৯ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে ৬৭ পৃষ্ঠার রায়টি প্রকাশ পায়। পরে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল দায়ের করেন নাজমুল হুদা।
আদালতের আদেশ অনুযায়ী চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি নাজমুল হুদা আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করলে ঢাকার দ্বিতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক এইচ এম রুহুল ইমরান জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।