রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ট্রাকের ধাক্কায় রিকশা থেকে পড়ে এক বছরের শিশু নাবিলার মৃত্যুর ঘটনায় গেজেট না হওয়া আইনে মামলা করায় সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তাকে তলব করেছেন হাইকোর্ট।
রোববার (১৩ জানুয়ারি) বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ তদন্ত কর্মকর্তা মোয়াজ্জেম হোসেনকে তলব করে এ আদেশ দেন। আগামী রোববার আদালতে হাজির হয়ে তাকে এ বিষয়ে জবাব দিতে আদেশে বলা হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন ব্যারিস্টার আব্দুল হালিম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোখলেছুর রহমান।
তদন্ত কর্মকর্তার প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর রিটের পক্ষের আইনজীবী কয়েকটি বিষয় আদালতের নজরে আনেন।
বিষয়গুলো হলো- প্রতিবেদনে ট্রাকের মালিকের নাম, ঠিকানা স্পষ্ট না করা, ট্রাক ড্রাইভারের লাইসেন্স না থাকা, ড্রাইভারকে গ্রেফতার বলা হলেও এখন জামিনে আছেন কিনা স্পষ্ট না করা ও গেজেট না হওয়া বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ এর ১০৫ ধারায় মামলা করা।
পরে আইনের গেজেট প্রকাশের বিষয়ে নিশ্চিত করতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীকে আদেশ দেন আদালত। এর আগে গত ১৯ নভেম্বর এই ঘটনায় রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট।
রুল জারির পর ব্যারিস্টার আব্দুল হালিম জানিয়েছিলেন, ২২ অক্টোবর এক বছরের শিশু নাবিলা তার মায়ের সঙ্গে রিকশাযোগে নিউমার্কেট থেকে মোহাম্মদপুর যাওয়ার পথে আসাদগেটের কাছে একটি ট্রাক তাদের রিকশায় পেছন থেকে ধাক্কা দেয়।
তখন ঘটনায় শিশু নাবিলা মায়ের কোল থেকে ছিটকে পড়ে ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে। পরে নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা জানতে নোটিশ দিলেও বিবাদীপক্ষ কোনো জবাব না দেওয়ায় হাইকোর্টে রিট দায়ের করে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) ও চিলড্রেন চ্যারিটি বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন।
আব্দুল হালিম আরও জানান, শিশুর পরিবারকে ৫০ লাখ টাকা কেনো ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।
চার সপ্তাহের মধ্যে পুলিশের মহাপরিদর্শক, স্বরাষ্ট্র সচিব, সড়ক পরিবহন ও সেতু সচিব, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনারসহ ৯ জনকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এছাড়া আদালতের আদেশ পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে নাবিলার মৃত্যুর পর কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা প্রতিবেদন আকারে জমা দিতে মোহাম্মদপুর থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।