ভুল আসামি করায় টাঙ্গাইলের জাহালমকে ২৬ মামলায় অব্যাহতি দিয়েছেন হাইকোর্ট। তবে তার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া আরও সাত মামলায় অভিযোগপত্র দাখিল না হওয়ায় এসব মামলায় তার অব্যাহতির বিষয়ে আদেশ দেননি আদালত।
সংশ্লিষ্ট পক্ষের শুনানি শেষে রোববার (৩ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। আর ভুক্তভোগী জাহালমের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী অমিত দাস গুপ্ত।
পরে অমিত দাস গুপ্ত বলেন, জাহালমকে ২৬ মামলায় অব্যাহতি দিয়েছেন হাইকোর্ট। তবে তার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া আরও ৭ মামলায় অভিযোগপত্র দাখিল না হওয়ায় এসব মামলার তার অব্যাহতির বিষয়ে আদেশ দেননি আদালত। ফলে তার মুক্তিতে আর বাধা থাকছেনা।
এর আগে গত ২৮ জানুয়ারি ‘ভুল’ আসামি জেলে থাকার অভিযোগের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যানের প্রতিনিধি ও মামলার বাদীসহ চারজনকে তলব করেন হাইকোর্ট। দুদকের চেয়ারম্যানের প্রতিনিধি, মামলার বাদী, স্বরাষ্ট্র সচিবের একজন প্রতিনিধি ও আইন সচিবের একজন প্রতিনিধিকে উপস্থিত থেকে এ ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়।
এর আগে একটি জাতীয় দৈনিকে ‘৩৩ মামলায় ‘ভুল’ আসামি জেলে’ ‘‘স্যার, আমি জাহালম, সালেক না…” শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ঐ প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অমিত দাসগুপ্ত।
ঐ প্রতিবেদনটি আদালতে উপস্থাপনের পর স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুলসহ আদেশে দেন হাইকোর্ট।
দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, আবু সালেক নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে সোনালী ব্যাংকের প্রায় সাড়ে ১৮ কোটি টাকা জালিয়াতির দায়ে ৩৩টি মামলা হয়েছে। কিন্তু আবু সালেকের বদলে জেল খাটছেন, আদালতে হাজিরা দিয়ে চলেছেন জাহালম। তিনি পেশায় পাটকলশ্রমিক।
জাহালমের কারাবাসের তিন বছর পূর্ণ হবে আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি। দুদক বলছে, জাহালম নিরপরাধ প্রমাণিত হয়েছেন। তদন্ত করে একই মত দিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনও। ফলে একটি মামলায় তার জামিন হয়েছে। আরো ৩২টি মামলায় জামিন পাওয়ার অপেক্ষায় আছেন তিনি।