সাত খুন মামলা: আপিল করেছেন নূর হোসেন

, আইন-আদালত

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-31 21:42:25

নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুন মামলায় হাইকোর্টের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আবেদন (আপিল) করেছেন সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেন

রোববার (৩ মার্চ) এ আপিল করা হয় বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন নূর হোসেনের আইনজীবী এইচ আর এম লুৎফর রহমান আকন্দ।

এর আগে ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড থেকে অপহৃত হন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন সরকার সহ সাত জন।

এর তিন দিন পর (৩০ এপ্রিল) শীতলক্ষ্যা নদীতে একে একে ভেসে ঠে ছয়টি লাশ। পরের দিন মেলে আরেকটি লাশ। নিহত অন্যরা হলেন— নজরুলের বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন, গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম  ও চন্দন সরকারের গাড়িচালক মো.ইব্রাহিম।

সাত খুনের ঘটনায় প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম ও তার চার সহকর্মী হত্যার ঘটনায় তার স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি বাদী হয়ে ফতুল্লা থানায় একটি এবং সিনিয়র আইনজীবী চন্দন সরকার ও তার গাড়ির চালক ইব্রাহিম হত্যার ঘটনায় তার জামাতা বিজয় কুমার পাল বাদী হয়ে একই থানায় আরেকটি মামলা দায়ের করেন।

পরে এসব মামলায় ২০১৭ সালের ২২ আগস্ট নারায়নগঞ্জের বিচারিক আদালত রায় ঘোষণা করেন। সেই রায়ের বিরুদ্ধে আসামীদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্স বিচারপতি ভবানী প্রসাদ সিংহ ও বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানির জন্য আসে।

এরপর ২০১৭ সালের ২২ আগস্ট হাইকোর্ট এ মামলার রায় ঘোষণা করেন, যার পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি ২০১৮ সালের ১৯ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। হাইকোর্টের রায়ে বিচারিক আদালতের মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া ২৬ আসামির মধ্যে বাকি ১১ জনের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিলো। আর মামলার মোট ৩৫ আসামির মধ্যে বাকি ৯ জনের বিভিন্ন মেয়াদের কারাদণ্ড বহাল রাখেন হাইকোর্ট।

রায়ে মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকা আসামিরা হলেন- নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (নাসিক) সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেন, র‌্যাব-১১ এর চাকরিচ্যুত তিন কর্মকর্তা লে. কর্নেল (অব.) তারেক সাঈদ মুহাম্মদ, মেজর (অব.) আরিফ হোসেন ও লে. কমান্ডার (অব.) মাসুদ রানা।

অন্য যে ১১ জনের ফাঁসির আদেশ বহাল রাখা হয় তারা হলেন- র‌্যাবের চাকরিচ্যুত সাবেক হাবিলদার মো. এমদাদুল হক, ল্যান্সনায়েক হীরা মিয়া, আরওজি-১ এ বি মো. আরিফ হোসেন, ল্যান্সনায়েক বেলাল হোসেন, সিপাহী আবু তৈয়্যব আলীকনস্টেবল শিহাব উদ্দিন, এসআই পূর্ণেন্দু বালা, সৈনিক আবদুল আলীম, সৈনিক মহিউদ্দিন মুন্সী, সৈনিক আলামিন শরীফ ও সৈনিক তাজুল ইসলাম। তাদের মধ্যে মহিউদ্দিন মুন্সী, আলামিন শরীফ ও তাজুল ইসলাম পলাতক।

অন্যদিকে সাজা কমে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ১১ আসামি হচ্ছেন- র‌্যাবের চাকরিচ্যুত সাবেক সিপাহী আসাদুজ্জামান নূর ও সার্জেন্ট এনামুল কবির এবং নূর হোসেনের ৯ সহযোগী মূর্তজা জামান চার্চিল, আলী মোহাম্মদ, মিজানুর রহমান দিপু, আবুল বাশার, রহম আলী, জামাল উদ্দিন সরদার, ভারতে গ্রেফতার সেলিম, সানাউল্লাহ সানা ও শাহজাহান। তাদের মধ্যে সেলিম, সানাউল্লাহ সানা ও শাহজাহান পলাতক।

বিচারিক আদালতে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড পাওয়া ৯ জনও র‌্যাবের বরখাস্তকৃত কর্মকর্তা ও সদস্য। তাদের মধ্যে কনস্টেবল (পরে এএসআই পদে পদোন্নতি পেয়ে নৌ-থানায় কর্মরত) হাবিবুর রহমানের ১৭ বছর, এএসআই আবুল কালাম আজাদ, এএসআই কামাল হোসেন, কনস্টেবল বাবুল হাসান, কর্পোরাল মোখলেসুর রহমান, ল্যান্স কর্পোরাল রুহুল আমিন ও সিপাহী নুরুজ্জামানের ১০ বছর করে এবং এএসআই বজলুর রহমান ও হাবিলদার নাসির উদ্দিন ৭ বছর করে কারাদণ্ডাদেশ বহাল রয়েছে উচ্চ আদালতে। তাদের মধ্যে মোখলেসুর রহমান ও কামাল হোসেন পলাতক।

এ সম্পর্কিত আরও খবর