জুলহাস-তন্ময় হত্যার চার্জশিট প্রস্তুত

, আইন-আদালত

মবিনুল ইসলাম, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-31 08:39:30

মার্কিন দূতাবাসের সাবেক প্রটোকল অফিসার ও ইউএস এইড কর্মকর্তা জুলহাস মান্নান ও তার বন্ধু মাহবুব রাব্বী তন্ময়কে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় ১৩ জন অংশ নিয়েছিলেন।

এদের মধ্যে ৮ জনের নাম ঠিকানা পাওয়া গেছে। বাকি ৫ জনের পূর্ণ নাম ঠিকানা পাওয়া যায়নি। ফলে ৮ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট প্রস্তুত করেছে মামলার তদন্তকারী সংস্থা ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)।

ডিএমপির গণমাধ্যম শাখার প্রধান মাসুদুর রহমান বার্তা২৪.কমকে জানান, চার্জশিট অনুমোদনের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে যেকোনো সময় আদালতে চার্জশিটটি পাঠানো হবে।

চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়, নিষিদ্ধ ঘোষিত সন্ত্রাসী সংগঠন আনসার আল ইসলামীর নেতা চাকরিচ্যুত মেজর সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল হক ওরফে মেজর জিয়ার নির্দেশেই সংগঠনটির সামরিক শাখার সদস্যরা এ হত্যাকাণ্ড ঘটায়।

ডিএমপি সূত্রে জানা যায়, মামলার অভিযুক্তরা হলেন- ১. মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মান (২৫)। সে আনসার আল ইসলামের মিডিয়া শাখার প্রধান এবং ইন্টেলিজেন্স সদস্য। ২. মো. আরাফাত রহমান (২৪), সে সামরিক শাখার সদস্য ও সমন্বয়ক। ৩. শেখ আব্দুল্লাহ (২৭), ইন্টেলিজেন্স শাখার প্রধান। ৪. আসাদুল্লাহ ওরফে ফয়সাল (২৫), সামরিক শাখার সদস্য। ৫. সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল হক ওরফে মেজর জিয়া (বয়স ৪২, চাকরিচ্যুত মেজর)। ৬. আকরাম হোসেন (৩০)। ৭. সাব্বিরুল হক চৌধুরী (২৬), ৮. মো. জুনাইদ আহমদ ওরফে মাওলানা জুনেদ আহম্মদ ওরফে জুনায়েত (২৬)।

অভিযুক্তদের মধ্যে প্রথম চারজন কারাগারে আটক আছেন। বাকি চারজন পলাতক আছেন।

এর আগে আসামি আসাদুল্লাহকে গ্রেফতারের পর এক সংবাদ সম্মেলনে সিটিটিসির পরিদর্শক মনিরুল ইসলাম বলেছিলেন, এই হত্যাকাণ্ডে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের মোট ১৩ জন সদস্য প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অংশগ্রহণ করে।

দুইটি গ্রুপের সমন্বয়ে এ হত্যাকাণ্ড করা হয়। একটি কিলিং গ্রুপ, অন্যটি ইনটেল গ্রুপ। কিলিং গ্রুপের পাঁচ সদস্যের চারজনকে ইতোমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে।

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, জুলহাস মান্নান ও তার বন্ধু মাহবুব তন্ময় সমকামীতায় সমর্থন দেওয়ায় তাদেরকে হত্যা করা হয়। জুলহাস মান্নান সমকামীদের অধিকার বিষয়ক পত্রিকা ‘রূপবান’ এর সম্পাদক ছিলেন।

আসামিদের মধ্যে মোজাম্মেল হোসাইন ওরফে সায়মন, আরাফাত রহমান ওরফে সিয়াম, রশিদ উন নবী ভূইঞা ও শেখ আব্দুল্লাহ ওরফে জোবায়ের খুনের দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।

২০১৬ সালের ২৫ এপ্রিল বিকেলে কলাবাগান লেক সার্কাস লাল ফকিরের মাজার এলাকায় ৩৫ নম্বর আছিয়া নিবাসের দ্বিতীয় তলায় জুলহাস মান্নান ও তার বন্ধু মাহবুব রাব্বী তন্ময়কে হত্যা করা হয়।

জুলহাস মার্কিন দূতাবাসের সাবেক প্রটোকল অফিসার ও ইউএস এইডে কর্মরত ছিলেন। আর নিহত মাহবুব রাব্বী তন্ময় থিয়েটারের নাট্যকর্মী ছিলেন।

এ ঘটনায় নিহত জুলহাসের ভাই ইমন মান্নান দণ্ডবিধি ও পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. শামীম বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে বাদী হয়ে কলাবাগান থানায় পৃথক দুটি মামলা করেন।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, পার্সেল ডেলিভারির কথা বলে কয়েকজন যুবক বাসায় ঢুকে দু’জনকে কুপিয়ে হত্যা করে। জুলহাসের লাশ বেডরুমে এবং তন্ময়ের লাশ ড্রইং রুমে পাওয়া যায়। তাদের চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এছাড়া সিসিটিভির ফুটেজে পাঁচজনকে পালিয়ে যেতে দেখা গেছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর