মঞ্জুর হত্যা তদন্তে আরও সময় চায় সিআইডি

, আইন-আদালত

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-25 21:33:45

মেজর জেনারেল মঞ্জুর হত্যাকাণ্ডের অধিকতর তদন্তে আরও সময় চায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি)। বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার কুতুবুর রহমান আদালতে আরও ৩০ দিন সময় চান।

শুনানি শেষে ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক শরীফ এএম রেজা জাকের সময় মঞ্জুর করে আগামী ২৬ আগস্ট প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য করেন।

মেজর জেনারেল মঞ্জুর হত্যাকাণ্ডের ১৪ বছর পর ১৯৯৫ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি মঞ্জুরের বড় ভাই ব্যারিস্টার আবুল মনসুর আহমেদ চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানায় মঞ্জুর হত্যা মামলা দায়ের করেন।

ওই বছরের ১৫ জুলাই আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তৎকালীন সহকারী পুলিশ সুপার আবদুল কাহহার আকন্দ। এর আগে ১ মার্চ আসামি এমদাদুল হক, ১২ মার্চ মোহাম্মদ আবদুল লতিফ ও শামসুর রহমান এবং ১৮ জুন মোস্তফা কামালকে গ্রেফতার করা হয়।

ওই বছরেরই ১১ জুন কারাগারে থাকা এরশাদকে এ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। মামলাটিতে মোট ২৩ জন বিচারক দায়িত্বপ্রাপ্ত হন ও বদলি হন। বিচারক হিসাবে সর্বশেষ দায়িত্বে ছিলেন প্রদীপ কুমার রায়।

মেজর জেনারেল মঞ্জুর হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে রায় ঘোষণার জন্য দিন ধার্য করা হয়েছিল ২০১৪ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু রায় ঘোষণা কদিন আগেই ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের তৎকালীন বিচারক হোসনে আরাকে বদলি করা হয়। আদালতের নতুন দায়িত্ব নেন বিচারক খন্দকার হাসান মো. ফিরোজকে।

নতুন জজ দায়িত্ব পাওয়ায় নতুন করে ফের যুক্তিতর্ক গ্রহণ করার প্রয়োজন হয়ে পড়ে। ১০ ফেব্রুয়ারি রায় ঘোষণা না করে ওই বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি ফের যুক্তিতর্ক গ্রহণের জন্য দিন ধার্য করা হয়।

নতুন বিচারকের ওই দিন যুক্তিতর্ক শোনা হয়নি। যুক্তিতর্ক শুনানির দিন আদালতে মামলাটির অধিকতর তদন্তের আবেদন জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সংশ্লিষ্ট আদালতের অতিরিক্ত পিপি আসাদুজ্জামান খান রচি।

এ মামলায় সঠিকভাবে তদন্ত হয়নি। ফলে আরো অনেককে সাক্ষী হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করা যায়নি। মঞ্জুরকে ওইদিন তার স্ত্রী ও মেয়ের সামনে থেকেই ধরে নেওয়া হয়েছিল। ওই সময় কারা তাকে ধরে নিয়ে গিয়েছিল এ সমন্ধে তার স্ত্রী ও মেয়েই ভালো বলতে পারবেন। কিন্তু মূল চার্জশিটে তার স্ত্রী ও মেয়েকে স্বাক্ষী করা হয়নি। মামলাটির ন্যায় বিচারে তাদের সাক্ষী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এমন যুক্তিতে মামলাটি অধিকতর তদন্তে পাঠানোর আবেদন করেন সরকারি কৌঁসুলিরা (পিপি) পিপি আসাদুজ্জামান খান রচি।

বিচারক খন্দকার হাসান মো. ফিরোজ রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে মামলাটি অধিকতর তদন্ত করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে সিআইডিকে নির্দেশ দেন।

মামলার ৫ আসামির সবাই জামিনে আছেন। সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ আইনজীবীর মাধ্যমে হাজিরা দেন।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, চট্টগ্রামে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে হত্যার পর ১৯৮১ সালের ১ জুন মেজর জেনারেল মঞ্জুরকে পুলিশ হেফাজত থেকে চট্টগ্রাম সেনানিবাসে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর সেখানেই তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

মঞ্জুর হত্যা মামলায় মোট ৪৯ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হওয়ার পর ২০১২ সালের ২ অক্টোবর আত্মপক্ষ সমর্থন করে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন এরশাদ। এর সমর্থনে আদালতে লিখিত বক্তব্যও দাখিল করেন তিনি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর