বাসের চাপায় পা হারানো প্রাইভেট কার চালক রাসেল সরকারকে প্রতি মাসে পাঁচ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার হাইকোর্টের আদেশ প্রতিপালন করেনি গ্রিন লাইন বাস কর্তৃপক্ষ। আদেশ পালন না করায় গ্রিন লাইনের আইনজীবী মো. অজি উল্লাহ এই মামলা থেকে তার নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ এ বিষয়ে আগামী ২১ জুলাই পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন। শুনানিতে রাসেল সরকার স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
রাসেল সরকারের আইনজীবী খোন্দকার শামসুল হক রেজা শুনানিতে বলেন, 'রাসেল সরকারকে মাসে পাঁচ লাখ টাকা করে দিতে হাইকোর্টের আদেশ পালন করেনি গ্রিন লাইন কর্তৃপক্ষ। তারা রাসেলের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করেনি। গত ২৫ জুন আদালতের দেওয়া নির্দেশ অনুযায়ী পাঁচ লাখ টাকাও দেয়নি।'
রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
গত ২৫ জুন রাসেল সরকারকে প্রতি মাসের ৭ তারিখের মধ্যে পাঁচ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণের ৫০ লাখ টাকা পরিশোধ করতে গ্রিন লাইন কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন আদালত। টাকা দেওয়ার পর তা প্রতি মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে প্রতিবেদন আকারেও জানাতে বলা হয় আদেশে।
গত ১০ এপ্রিল রাসেল সরকারের হাতে ক্ষতিপূরণের পাঁচ লাখ টাকার চেক তুলে দেয় গ্রিন লাইন বাস কর্তৃপক্ষ। ওইদিন হাইকোর্ট কক্ষে বিচারকের সামনে গ্রিন লাইনের আইনজীবী মো. অজি উল্লাহ এই চেক রাসেলের হাতে তুলে দেন। সে হিসেবে আরও ৪৫ লাখ টাকা দিতে হবে রাসেলকে।
গত ১৫ মে হাইকোর্ট সাতদিনের মধ্যে রাসেলকে ক্ষতিপূরণের বাকি ৪৫ লাখ টাকা দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন।
এর আগে গত ১২ মার্চ হাইকোর্ট রাসেলকে ৫০ লাখ টাকা দিতে নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে গ্রিন লাইন পরিবহন কর্তৃপক্ষকে রাসেলের চিকিৎসার জন্য যা খরচ প্রয়োজন পড়ে তা দিতে বলা হয়।
উল্লেখ্য গত বছরের ২৮ এপ্রিল যাত্রাবাড়িতে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারে গ্রিন লাইন পরিবহনের বাসের চাপায় প্রাইভেট কার চালক রাসেল সরকারের বাম পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। রাসেলের বাড়ি গাইবান্ধার পলাশবাড়িতে। তার পা হারানোর পর গত বছরের ১৪ মে ক্ষতিপূরণ চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী উম্মে কুলসুম। ওই রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট ক্ষতিপূরণের অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ ও রুল জারি করেন।