১৩ শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষতিপূরণ দিতে রুল

, আইন-আদালত

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা | 2023-09-01 01:59:56

কুমিল্লার ইটভাটায় ট্রাক উল্টে ১৩ শ্রমিক নিহত ও ২ জনের আহত হওয়ার ঘটনায় তাদের প্রত্যেকের পরিবারকে কেন ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে নিহত ও আহতদের জীবন রক্ষায় বিবাদীদের ব্যর্থতা কেন বেআইনি হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে।

স্বরাষ্ট্র সচিব, অর্থ সচিব, পরিবেশ সচিব ও কুমিল্লার জেলা প্রশাসকসহ ছয়জনকে চার সপ্তাহের মধ্যে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

নিহতদের পক্ষে দুই স্বজনের করা রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি শেষে সোমবার (২৯ জুলাই) বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সৈয়দ মিজবাহুল আনওয়ার। তাকে সহায়তা করেন আইনজীবী মো. সোহরাব হোসেন ও মো. জামাল উদ্দিন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।

জুন মাসে রিট আবেদনটি করেন নিহত রঞ্জিত চন্দ্র রায় ও তরুণ চন্দ্র রায়ের পিতা সুরেশ চন্দ্র রায় ও মো. সেলিম মিয়ার পিতা মো. জাহাঙ্গীর আলম।

গত ২৫ জানুয়ারি কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের ঘোলপাশা ইউনিয়নের করিমপুরে ঘুমন্ত ইটভাটার শ্রমিকদের ওপর ট্রাক উল্টে পড়লে ১৩ জন শ্রমিক মারা যান। নিহত শ্রমিকদের সবার বাড়ি নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলায়।

এ ঘটনা নিয়ে কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে ‘ঘুম থেকে চিরঘুমে’, ‘ঘুমের মধ্যে চিরঘুমে ১৩ জন’ এবং ‘চৌদ্দগ্রামে কয়লার ট্রাক উল্টে ১৩ শ্রমিকের মৃত্যু’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। গণমাধ্যমের এসব প্রতিবেদন রিট আবেদনে যুক্ত করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সড়কের পাশে করিমপুর (দোসরী) গ্রামের বিশাল ফসলি জমিতে গড়ে ওঠা ‘কাজী অ্যান্ড কোং’ নামে ইটভাটার ঝুপড়ি ঘরে গাদাগাদি করে ঘুমাতেন শ্রমিকরা। ওই দিন ক্লান্ত শরীরে ঘুমিয়ে ছিলেন সবাই। ভোরের দিকে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা কয়লাভর্তি ট্রাক (ঢাকা মেট্রো-ট-১৬-০১১৪) থেকে কয়লা নামানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন ট্রাক শ্রমিকরা। এ সময় ট্রাকটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ইটভাটা শ্রমিকদের থাকার ঘরের ওপর গিয়ে উল্টে পড়ে। ঘটনাস্থলেই মারা যান ১২ শ্রমিক। গুরুতর আহত একজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকেও মৃত ঘোষণা করেন।

নিহতরা হলেন—নীলফামারী জেলার জলঢাকা উপজেলার নিজপাড়া গ্রামের সুরেশ চন্দ্র রায়ের ছেলে রঞ্জিত চন্দ্র রায় (৩০), তার ভাই তরুণ চন্দ্র রায় (২৫), জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে মো. সেলিম মিয়া (২৮), অমল চন্দ্র রায়ের ছেলে দিপু চন্দ্র রায় (১৯), কিশোর চন্দ্র রায়ের ছেলে শংকর চন্দ্র রায় (২১), রামপ্রসাদের ছেলে বিপ্লব চন্দ্র রায় (১৯), কামিক্ষার ছেলে অজিত রায় (২০), শিমুলবাড়ি গ্রামের মনোরঞ্জন চন্দ্র রায় (১৯), খোকা চন্দ্র রায়ের ছেলে মৃণাল চন্দ্র রায় (২১), পাঠানপাড়া গ্রামের নুর আলমের ছেলে মো. মোরসালিন (১৮), ফজলুল করিমের ছেলে মাসুম (১৮), রাজবাড়ি গ্রামের খোকা চন্দ্র রায়ের ছেলে বিকাশ চন্দ্র রায় (২৮) ও ধলু চন্দ্র রায়ের ছেলে কনক চন্দ্র রায় (২৫)। গুরুতর আহত দুই জন হলেন—বিষ্ণু চন্দ্র ও মো. রিপন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর