আদালত চত্বরে যেন মোটরসাইকেল মেলা

, আইন-আদালত

মবিনুল ইসলাম, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা | 2023-08-30 01:18:56

ঢাকা আইনজীবী সমিতির ২৪ হাজার আইনজীবী, ঢাকার বিভিন্ন আদালতের শতাধিক বিচারক আর হাজারো বিচারপ্রার্থীর গাড়ি রাখার জন্য ঢাকার নিম্ন আদালতে কোন গ্যারেজ নেই।

গ্যারেজের অভাবে আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের আদালত চত্বরেই মোটরসাইকেল রাখতে হচ্ছে। এ কারণে একদিকে যেমন আদালতে নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে অপরদিকে আইনজীবী-বিচারপ্রার্থীদের চলাচল ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে।

একনজরে যে কেউ দেখলে মনে করতে পারেন এখানে বুঝি মোটরসাইকেলের মেলা বসেছে। শুক্র ও শনিবার ছাড়া প্রতিদিনই বসে এ মেলা।

ঢাকা আইনজীবী সমিতির ব্যাংক ভবনটি হচ্ছে পুরাতন ভবন। সে ভবনে কোন গ্যারেজের ব্যবস্থা নেই। সমিতির মূল ভবনটি মাত্র বছর দশেক আগে করা। এ ভবনের নিচতলায় গ্যারেজ থাকলেও সেখানে মাত্র ১২-১৪টি গাড়ি রাখা যায়। ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকরাই এই গ্যারেজে গাড়ি রাখেন। সাধারণ আইনজীবী কিংবা বিচারপ্রার্থীর গাড়ি রাখার সুযোগ নেই সেখানে।

এরপর সম্প্রতি আরও দুটি ভবন নির্মাণ করে আইনজীবী সমিতি। এনেক্স-১ ও এনেক্স-২ নামে ওই ভবনে কোন গ্যারেজ রাখা হয়নি।

ঢাকা মহানগর দায়রা জজ ভবন, পুরাতন জেলা ও দায়রা জজ ভবন, নতুন জেলা ও দায়রা জজ ভবন কিংবা ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনে পার্কিংয়ের কোন ব্যবস্থা নেই। চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনের আন্ডারগ্রাউন্ডে মালখানা স্থাপন করা হয়েছে।

ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আসাদুজ্জামান খান রচি বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, নির্মাণাধীন ঢাকা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সাধারণের জন্য কোন পার্কিংয়ের ব্যবস্থা রাখা হয়নি। সেখানে কেবল সংশ্লিষ্ট আদালতের বিচারকদের গাড়ি রাখার ব্যবস্থা রয়েছে।

তাহলে আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীরা তাদের প্রাইভেট কার ও মোটরসাইকেল কোথায় রাখবেন? এমন প্রশ্নের জবাবে রচি বলেন, বাস্তবিকই তাদের গাড়ি-মোটরসাইকেল রাখার কোন জায়গা নেই। তারা আদালত চত্বর, রাস্তাঘাট যেখানেই খালি পাচ্ছেন প্রাইভেট কার-মোটরসাইকেল রাখছেন। আইনজীবী ও বিচারপ্র্রার্থীদের চলাচলে যেন অসুবিধা না হয় সেজন্য রাস্তায় ফুটপাত তুলে দিয়েছি। কিন্তু সেসব জায়গা ভরে যায় মোটরসাইকেলে।

আসাদুজ্জামান খান রচি আরও বলেন, শুধু আদালত নয়, এর আশে পাশে নতুন করে অনেক চেম্বার বিল্ডিং গড়ে উঠেছে। চেম্বার ভাড়া দিলে টাকা বেশি পাওয়া যায়। এজন্য সেসব ভবনের আন্ডারগ্রাউন্ডে চেম্বার করে দেওয়া হয়েছে। গাড়ি-মোটরসাইকেল রাখার কোন ব্যবস্থা করা হয়নি। এমনকি বিচারকদের গাড়িও রাস্তায় রাখতে হয়। আসলেই বিষয়টির সমাধান হওয়া উচিত।

ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে হাজিরা দিতে আসা আবু সাঈদ বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, কোথাও মোটরসাইকেল রাখা যায় না। মোটরসাইকেল রাখতে গেলে বলে আইনজীবী ছাড়া মোটরসাইকেল রাখা যাবে না। ফলে যত্রতত্র মোটরসাইকেল রাখতে হয়। এতে করে চোর চক্রের পোয়াবারো। নিত্যদিন মোটরসাইকেল চুরিও হচ্ছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর