ফেনীর ৪ সাংবাদিককে হয়রানি না করার নির্দেশ

, আইন-আদালত

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা | 2023-08-30 23:48:38

ফেনীর সোনাগাজীর মাদরাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনার পর প্রত্যাহার করে নেওয়া জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) জাহাঙ্গীর আলম সরকারের ইন্ধনে করা ৯ মামলায় চার সাংবাদিককে চার সপ্তাহ গ্রেফতার ও হয়রানি না করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ সময়ের পর তাদের নিন্ম আদালতে আত্মসমর্পন করতে বলা হয়েছে। 

আগাম জামিন চেয়ে করা আবেদনের শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি মো. রিয়াজ উদ্দিন খান সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ এ জামিন দেন।

আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ কামাল হোসেন, মো. মহসিন কবির, মো.আজিজুর রহমান ও এস এম সালেহ আহমেদ।

আইনজীবী মোহাম্মদ কামাল হোসেন বলেন, ‘বিশেষ আইনের মামলায় অভিযোগ পত্রের জামিনের সুযোগ নেই। তাই আদালত তাদের আগামী চার সপ্তাহ গ্রেফতার বা হয়রানি না করার নির্দেশ দিয়েছেন। এ সময়ের পর তাদের নিন্ম আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইতে হবে।'

চার সাংবাদিক হলেন-দৈনিক ফেনীর সময় ও সাপ্তাহিক আলোকিত ফেনীর সম্পাদক মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন, দৈনিক অধিকার প্রতিনিধি ও অনলাইন পোর্টাল ফেনী রিপোর্ট’র সম্পাদক এস এম ইউসুফ আলী, বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমের স্টাফ করেসপন্ডেন্ট সোলায়মান হাজারী ডালিম এবং দৈনিক সময়ের আলো প্রতিনিধি ও দৈনিক স্টার লাইনের স্টাফ রিপোর্টার মাঈন উদ্দিন পাটোয়ারীর।

বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে করা নাশকতাসহ বিভিন্ন গায়েবী মামলায় এ চার সাংবাদিকের নাম অভিযোগ পত্রে যুক্ত করা হয়।

অভিযোগ উঠেছে, নুসরাত হত্যার রহস্য উদঘাটন ও সংশ্লিষ্টদের দায়িত্ব পালনে অবহেলা তুলে ধরতে সক্রিয় ভূমিকার কারণেই এসপি জাহাঙ্গীর আলম সরকার ক্ষোভ মিটাতে সাংবাদিকদের নাম যুক্ত করেছে।

গত ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ-দৌলার হাতে যৌন নিপীড়নের শিকার হন ওই প্রতিষ্ঠানের আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত। গত ৬ এপ্রিল পরীক্ষার পূর্ব মুহূর্তে মাদরাসার ছাদে ডেকে নিয়ে নুসরাতের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশ তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। গত ১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় নুসরাতের। ঘটনার শুরু থেকে নির্বিকার ছিলেন এসপি জাহাঙ্গীর আলম সরকার। মামলায় সিরাজ উদ-দৌলাসহ কয়েকজনকে আসামি করতে এসপি-ওসি টালবাহানা করেন বলে নুসরাতের পরিবারের পক্ষ থেকে তখন অভিযোগ ওঠে। শুধু তাই নয়, পুলিশ সদরদফতরেও তিনি (এসপি) ওসির পক্ষে সাফাই গেয়ে চিঠি লিখেন।

মামলাটি পিবিআইতে স্থানান্তরের পর ঘটনায় জড়িতরা একে একে গ্রেফতার হতে থাকেন। বেরিয়ে আসে ঘটনার মূল রহস্য। একপর্যায়ে পুলিশ সদরদফতরের তদন্তে এসপি-ওসিসহ চার পুলিশ কর্মকর্তা দোষী সাব্যস্ত হন। ওসি মোয়াজ্জেমকে বরখাস্ত করে রংপুর রেঞ্জে সংযুক্ত করা হয়। আর এসপি জাহাঙ্গীর সরকারকে প্রত্যাহার করে সংযুক্ত করা হয় পুলিশ সদরদফতরে। অপর দুইজনকেও প্রত্যাহার করে পার্বত্য এলাকায় সংযুক্ত করা হয়।

এসপি জাহাঙ্গীর সাংবাদিকদের একটি তালিকা সংশ্লিষ্ট থানার ওসিদের ধরিয়ে দেন। বিভিন্ন তদন্তাধীন মামলায় সেই সাংবাদিকদের নাম অভিযোগ পত্র অন্তর্ভুক্ত করেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর