আগের মতোই প্রটোকল পাবেন ভিআইপিরা

, আইন-আদালত

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা | 2023-08-30 23:31:45

 

সংবিধান, রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদা ও দেশের আইন মোতাবেক ভিআইপিদের প্রয়োজনীয় প্রটোকল সুবিধা দিতে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার এবং মহানগর ও শহরাঞ্চলের সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

কোন রকম ব্যর্থতা ছাড়াই অন্যান্য সংশ্লিষ্টদের পদমর্যাদাক্রম অনুসারে সুবিধা (প্রটোকল) অব্যাহত রাখার এ নির্দেশনা পালন করতে হবে।

সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে অবিলম্বে আদেশের অনুলিপি সকল জেলা জজদের কাছে বিতরণ করতে বলেছেন আদালত। এছাড়া আদেশের অনুলিপি মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও জনপ্রশাসন সচিবের কাছেও পাঠাতে বলা হয়েছে।

আদেশে আদালত সাংবাদিকদের সতর্ক করে বলেছেন, রাষ্ট্র ও সমাজের মুখপাত্র হিসেবে আমরা সাংবাদিকদের কাছ থেকে আরও দায়িত্বশীলতা প্রত্যশা করি। এ দায়িত্বশীলতা বিশদ, সত্যের প্রতিফলন এবং এটা সম্পূর্ণ হতে হবে।

একটি রিটের নিষ্পত্তি করে বুধবার (৭ আগস্ট) বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের অবকাশকালীন দ্বৈত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী একরামুল হক টুটুল।

আইনজীবী একরামুল হক টুটুল বলেন, একজন বিচারপতির প্রটোকল নিয়ে কিছু অনলাইন প্রতিবেদন করেছিল। প্রেতিবেদনগুলো চ্যালেঞ্জ করে রিট করা হলে আদালত এ আদেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি আদালত বলেছেন, প্রটোকল নিয়ে সংবাদ প্রকাশে গণমাধ্যমকে আরও সতর্ক হতে হবে।

গত বুধবার (৩১ জুলাই) মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ির এক নম্বর ফেরিঘাটে যুগ্ম সচিবের জন্য তিন ঘণ্টা ফেরি দাঁড়িয়ে থাকলে স্কুল ছাত্র তিতাস ঘোষের মৃত্যু হয়। তার মৃত্যুতে ক্ষতিপূরণ চেয়ে করা রিটে হাইকোর্ট বলেছিলেন, ‘রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী ছাড়া কেউ ভিআইপি নয়, বাকিরা সবাই রাষ্ট্রের কর্মচারী।’

এরপর হাইকোর্টের একজন বিচারপতি প্রটোকল চাইলে গত ২ আগস্ট ঢাকা ট্রিবিউনে (বাংলা) “‘রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী ছাড়া কেউ ভিআইপি নয়’ আদেশের পর ভিআইপি প্রটোকল চাইলেন বিচারপতি”, বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের অনলাইনে ‘ডিসির কাছে ভিআইপি প্রটোকল চাইলেন বিচারপতি!’, বাংলাদেশ টুডের অনলাইনে ‘হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞার পরও ভিআইপি প্রটোকল চাইলেন বিচারপতি’ শিরোনামে প্রতিবেদন যুক্ত করা হয় রিট আবেদনে। এছাড়াও আওয়াজ বিডি.কম ও বরিশাল টাইমস.কম এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

বুধবার (৭ আগস্ট) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. শাহিনুর রহমান রিট আবেদনটি করেন। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের প্রটোকল নিয়ে প্রতিবেদন তৈরিতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা রিটে চ্যালেঞ্জ করেন তিনি। বিবাদী করেন তথ্য সচিব ও প্রেস কাউন্সিলের সচিবকে।

রিটের যুক্তিতে বলা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা সাংবিধানিক পদধারী। রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদাক্রমে বিচারপতিরা ৯ নম্বর ক্রমিকে রয়েছেন। হাইকোর্ট সাংবিধানিক পদের প্রটোকলের ওপর কোন রকম নিষেধাজ্ঞা দেয়নি। প্রটোকল নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন ভিত্তিহীন।

সাংবিধানিক পদধারী যারা তাদের চাকরি অনুসারে প্রটোকল পান, তাদের প্রটোকল না দিতে সরকারের কোন কর্তৃপক্ষকে হাইকোর্ট নির্দেশ দেননি। কোন রকম ভিত্তি ছাড়া এ ধরনের প্রতিবেদন প্রকাশ করা মর্যাদাহানিকর।

চাকরির সুবাদে সুপ্রিম কোর্টেও বিচারপতিরা আচরণবিধি অনুসরণ করেন। যদি তাদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা না দেওয়া হয় তাহলে শপথ অনুযায়ী তাদের কর্তব্য পালন বিঘ্নিত হবে। এ ধরনের মর্যাদাহানিকর প্রতিবেদনের কারণে সুপ্রিম কোর্টের মর্যাদা ক্ষুন্ন হবে।

রিট আবেদনে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতির প্রটোকল নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি থেকে ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট গণমাধ্যমকে বিরত রাখতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন প্রশ্নে রুল জারির আর্জি ছিল।

এ সম্পর্কিত আরও খবর