আদালতে না নিয়ে সাজা: সতর্ক করা হলো চট্টগ্রামের ইউএনও, ওসিদের

, আইন-আদালত

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা | 2023-08-27 07:54:37

গ্রেফতার বা আটকের পর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে আদালতে হাজির না করে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাজা দেওয়ার ঘটনায় চট্টগ্রাম জেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের (ওসি) সতর্ক করেছেন চট্টগ্রামের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট।

একটি বিজ্ঞপ্তিতে আইন বহির্ভূত এ ধরনের সাজা দেওয়া থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে আইন লঙ্ঘনের কারণে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) চট্টগ্রামের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সিজেএম) কামরুন নাহার রুমীর সই করা বিজ্ঞপ্তিতে এ সতর্কীকরণ করা হয়েছে। নোটিশটি বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমের হাতে এসেছে বুধবার (২১ আগস্ট)।

নোটিশে বলা হয়, চট্টগ্রাম জেলার থানার ওসিরা ধৃত আসামিদের নিয়মিত আদালতে হাজির না করে ভ্রাম্যমাণ আদালতে সোপর্দ করছে। এরপর ইউএনও এবং এসিল্যান্ড (সহকারী কমিশনার ভূমি) তাদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিচ্ছে। যা স্থানীয় পত্রিকা ও বিভিন্ন উৎস থেকে গোচরীভূত হয়েছে সিজেএম কার্যালয়ে।

এ ধরণের সাজা দেওয়া ঘটনা ভ্রাম্যমাণ আদালত আইন ২০০৯ এবং হাইকোর্টের রায়ের লঙ্ঘন।

২০১৭ সালের ১৪ মে স্বপ্রণোদিত রুল নিষ্পত্তি করে বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাস সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ রাষ্ট্র বনাম ইউএন, সখীপুর টাঙ্গাইল এবং অন্যান্য মামলায় ঘোষিত এক রায়ে বলা হয়েছে, ভ্রাম্যমাণ আদালতে বিচার শুরুর আগে পুলিশের হাতে আটক বা গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিকে ভ্রাম্যমাণ আদালত আইন ২০০৯ এ শাস্তি প্রদানের সুযোগ নেই। যদি কোন ব্যক্তিকে শাস্তি দেওয়া হয় তাহলে ওই ভ্রাম্যমাণ আদালতের সম্পূর্ণ বিচার প্রক্রিয়া কুলষিত বলে বিবেচিত হবে। ঘোষিত শাস্তি অবৈধ ও এখতিয়ার বহির্ভূত হবে।

নোটিশে বলা হয় সংবিধানের ১১১ অনুচ্ছেদ মোতাবেক এ রায় মানা সকলের জন্য বাধ্যকর।

টাঙ্গাইলের সখিপুরে প্রতীমা পাবলিক হাইস্কুলের শিক্ষার্থী সাব্বির শিকদারকে ইউএনও মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম ভ্রাম্যমাণ আদালতে ২ বছরের সাজা দিয়েছিলেন। ২০১৬ সালের ২০ সেপ্টেম্বর একটি ইংরেজি দৈনিকে ‘বয় জেলড ফর এফবি কমেন্ট অ্যাবাউট এমপি’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে তা হাইকোর্টের নজরে আনেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।

ওই প্রতিবেদন আমলে নিয়ে স্বপ্রণোদিত রুল জারি এবং পরে সখীপুরের ইউএনও মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম এবং ওসি মোহাম্মদ মাকসুদুল আলমকে তলব করেন হাইকোর্ট।

২০১৭ সালের ১৪ মে রুল নিষ্পত্তি করে হাইকোর্ট স্কুল শিক্ষার্থী সাব্বির শিকদারকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের দেওয়া দুই বছরের সাজা অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করেন। একইসঙ্গে সাব্বির শিকদারকে নির্যাতনের ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন। ইউএনও এবং ওসিকে সখীপুর থেকে প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট ।

এ সম্পর্কিত আরও খবর